বঙ্গ-নিউজ: মিউজিক ভিডিওর জনপ্রিয় মুখ অন্তু করিম। পাশাপাশি নাটক বা বিজ্ঞাপনে কাজ করলেও, মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবেই দর্শকদের কাছে প্রতিষ্ঠিত নাম অন্তু। নিজের সেই জায়গাটা আরও এক ধাপ বেড়ে গেল সম্প্রতি তার মিউজিক্যাল ফিল্ম রিলিজের পর।
যেটি দেশের প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম। নতুন এই কাজের প্রসঙ্গের পাশাপাশি দেশের মিউজিক ভিডিওর অবস্থা ও অভিনয়ের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললেন বিনোদন প্রতিদিনের সাথে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন দেবব্রত ভৌমিক
এখনকার ব্যস্ততা
ব্যস্ততা বলতে এখন ঈদের বেশকিছু বিশেষ টেলিফিল্ম আর নাটকের কাজ। আর সমপ্রতি বের হওয়া ‘সারাংশে তুমি’র প্রচার প্রচারণা নিয়েই যাচ্ছি। পাশাপাশি বেশকিছু নাটকের শুটিং বাকী আছে সেগুলোর কাজ কর্ম এইতো।
সম্প্রতি একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম রিলিজ পেলো, প্রথমবারের মতো ভিন্নধর্মী একটি কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন হলো?
‘সারাংশে তুমি’ এটা বাংলাদেশের প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম। আমি সব সময় চেষ্টা করি দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার জন্য। ‘সারাংশে তুমি’ সেই রকমই চেষ্টার একটি ফসল। ৮টা গানকে দাঁড় করানো হয়েছে সংলাপের সংমিশ্রণে। বাংলাদেশেই শুধু নয়, এর আগে উপমহাদেশেও এই ধরনের কাজ হয়নি। কুমার বিশ্বজিত্, সামিনা চৌধুরী, শুভমিতা ব্যানার্জি ও ন্যান্সির ৮টি গানের অপূর্ব সংমিশ্রণে দর্শকরা দেখতে পারবেন দারুণ রোমান্টিক একটা চলচ্চিত্র। আশা করি এই নতুন কনসেপ্ট ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। আমাকে এমন একটি ব্যতিক্রমী কাজে সুযোগ করে ইতিহাসের সাথে যুক্ত করবার জন্য আমি, পরিচালকসহ, প্রযোজকদের ধন্যবাদ জানাই। এমন গুণীজনের সাথে অভিনয় করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।
ছোটপর্দায় বেশ নিয়মিতই দেখা যায় বড় পর্দায় নিয়মিত না হওয়ার পেছনে কারণ কী?
খুব ছোটবেলায় গান শিখেছিলাম। সে সময় স্বপ্নও ছিল গায়ক হওয়ার। কিন্তু বড় হয়ে সে ইচ্ছেটা যে কোথায় উড়ে গেছে জানি না। আর সত্যি কথা বলতে আমি হলাম বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোটপর্দার অভিনেতা। এই পরিচয়টা দিতেই বেশ গর্ববোধ করি। বিষয়টি আমার সহজ স্বীকারোক্তি। আর আমার চেহারা দর্শক সবচেয়ে দেখেছেন মোবাইল ফোনে, সবাই মোবাইল ফোনে ভিডিও গান দেখে আমাকে চিনেছে। আমি হলাম মোবাইল ফোন অভিনেতা। মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে পছন্দ করি। কেন না আমি বাংলাদেশের মিউজিক ভিডিওর ধরন বদলে দিতে চাই। তাই মিউজিক ভিডিওতে কিংবা ছোট পর্দায় কাজ করার সময় নিজের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে কাজ করি। বড় পর্দার বেশীরভাগ তো বাণিজ্যিক তাই নিজের আগ্রহটাও কম।
বর্তমানে মিউজিক ভিডিওর একটি নিয়মিত ধারা চলছে, তবে এ নিয়ে অনেক সমালোচনাও চলছে। আপনার জায়গা থেকে কী বলবেন?
মিউজিক ভিডিওর রীতিটা আগেও ছিলো তবে এখনকার মতো এতো বেশী ছিলো না। আর মিউজিক ভিডিওর রীতি চালু হওয়াতে আমাদের নিজেদেরই ভালো হয়েছে। আমরা এখনো আমাদের গানের বাজারটাকে ধরে রাখছি। এই ট্রেন্ডজ চালু না হলে হয়তো আজ আমরা ভিনদেশী শিল্পীদের গানের ভিডিওগুলো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে আলোচনা সমালোচনায় মুখর থাকতাম। কিন্তু এখন আমাদের কাজ ভালো হোক খারাপ হোক আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখছি। এখন অধিকাংশ গানের হিটের পেছনে অন্যতম অবদান কিন্তু মিউজিক ভিডিও। গানের সাথে মিউজিক ভিডিও গানটিকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যায়। যার কারণে মিউজিক ভিডিও সেক্টরটা একটা সম্ভাবনাময় অবস্থানে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। আমিও সেই আগ্রহটাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। দেখা যাক আমার চেষ্টা কতটুকু সফল হয়। দর্শক-শ্রোতারা ভালোভাবে গ্রহণ করলে মনে করবো আমি সঠিক পথেই এগুচ্ছি।
মডেলিং থেকে সরাসরি পর্দায় কাজ করা বিষয়টা কতোটুকু কঠিন ছিলো?
বলতে গেলে অনেক কঠিনই ছিলো। এখনও যে সহজ তা কিন্তু নয়। অভিনয়টা ঠিক শেখার বিষয়, আমি প্রতিদিনই নতুন করে অনেক কিছু শিখছি, শেখার চেষ্টা করছি। বিজ্ঞাপনের মডেলিং আর পর্দায় কাজ করা দুটো পুরো আলাদা বিষয়। পর্দায় অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি,ভাব বিনিময় থেকে শুরু করে সংলাপ দিতে হয়। বিষয়টা করতে গেলে বোঝা যায় বেশ কঠিন। আমি থিয়েটার কর্মী ছিলাম, ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের হাতেখড়ি। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত শিখেই যাচ্ছি। কিন্তু একটা বিষয় এখন যারা মডেলিং থেকে এসে নাটকে কাজ করবে, তাদের অভিনয় শেখানোর মতো কোন প্রতিষ্ঠান নেই। টিভি নাটকের সমসাময়িক অভিনয় শেখানোর মতো কোনো প্রশিক্ষকও নেই। তাতে অবশ্য ক্ষতিটা আমাদেরই হচ্ছে। নতুনরা হয়তো যে কোনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু থিয়েটারে যারা বছরের পর বছর অভিনয় করে যাচ্ছে, কাজ করে যাচ্ছে তারা হয়তো সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মাঝে মাঝে আমাদের থিয়েটারের দিকেও নজর দেয়া উচিত্, খোঁজ খবর রাখা উচিত্। কারণ সুযোগের অভাবে অনেক থিয়েটার কর্মী অন্ধকারে পড়ে আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৪:১৯ ৩৬৭ বার পঠিত