বঙ্গ-নিউজঃ
বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের ২৯ বিলিয়ন (২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার অতিক্রম করেছে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই গত ২৫ এপ্রিল রিজার্ভ প্রথম বারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ৯০ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে যায়।
গত কয়েকদিনে বাড়তে বাড়তে তা আবার ২৯ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ আতিক্রম করেছে।
বৃহস্পতিবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২৯ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার ছিল বলে ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং আমদানিতে ধীর গতির কারণে গত কয়েক বছর ধরে রিজার্ভ ‘সন্তোষজনক’ অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের গচ্ছিত ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়েছিল ভুয়া বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে।
শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ লাখ ডলার আটকানো হয়। ফিলিপিন্সে যাওয়া কিছু অর্থ উদ্ধার হলেও বাকিটা এখনও অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ২৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়; পরে তা আবার ২৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
গত ২৫ এপ্রিল প্রথম বারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় রিজার্ভ।
আকুর সদস্যভুক্ত দেশগুলো থেকে আমদানি করা পণ্যের বিল একসঙ্গে দুই মাস পর পরিশোধ করা হয়।
আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষ দিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে আসে। এরপর বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন রিজার্ভে ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি।
সে সময় আকুর বিল বাবদ ২০ কোটি ডলার পরিশোধের কথা ছিল। তাতে রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসত।
রিজার্ভ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফসহ দাতাদের সহায়তা পাওয়া যাবে না- এসব বিবেচনায় তখন আকুর দেনা পুরোটা শোধ না করে অর্ধেক দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই একবারই আকুর বিল বকেয়া রাখা হয়েছিল বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
প্রতি মাসে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয়ের খরচ হিসাবে বর্তমানে হাতে থাকা রিজার্ভ দিয়ে আট মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি।
এই সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স কমেছে ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।
অন্যদিকে অর্থবছরের ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে পণ্য আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খোলার পরিমাণ কমেছে ২ শতাংশ।
এই সময়ে জ্বালানি তেল আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমেছে। আর খাদ্যপণ্য (চাল ও গম) আমদানির এলসি কমেছে ৩৮ দশমিক ৫২ শতাংশ।
302520151050
ডিসেম্বর ২০০৯মে ২০১৩এপ্রিল২০১৪জুন ২০১৫অগাষ্ট ২০১৫অক্টোবর ২০১৫২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬১৯ এপ্রিল ২০১৬৯ মে ২০১৬
বাংলাদেশ সময়: ১০:০০:০২ ৩৭৯ বার পঠিত