পেঁয়াজের দাম বাড়ছে কয়েক সপ্তাহ ধরেই। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি-বিদেশি সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। দেশি রসুনের দামও বাড়ছে। এছাড়া আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি, মাছ, মাংস, মুরগি, ডাল ও চিনি। তবে কমেছে ডিমের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে চাল ও ভোজ্যতেলেরর বাজার।
গতকাল আজিমপুর, মালিবাগ, শান্তিনগর, কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও এটি ৪৫ টাকাতেও বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে। দেশিটার পাশাপাশি অনেক দিন স্থিতিশীল থাকার পরে এবার আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে।
এদিকে আমদানিকৃত রসুনের দাম কয়েক সপ্তাহ ধরেই বেশি। এর মধ্যে দেশি রসুনের দাম ছিল বেশ কম। তবে গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে এই দেশি রসুনের দাম বাড়ছে। গতকাল তা বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি কেজি। তবে আদার দাম অনেক দিন ধরেই কম মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
এখন সময় গ্রীষ্মকালীন সবজির। তবে কৃষিবিজ্ঞানের উৎকর্ষে সারাবছরই সব ধরনের সবজির দেখা মেলে বাজারে। এ সময়ে গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম তুলনামূলক কম থাকার কথা থাকলেও সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রচণ্ড গরমে সবজির স্বাভাবিক সরবরাহ বিঘিœত হচ্ছে। ক্ষেত থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছতেই অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে দাম কিছুটা চড়া বলে তারা জানান। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৫০ থেকে ৬০, পটোল ৫০ থেকে ৫৫, কাঁকরোল ১০০, কাঁচা মরিচ ৭০, গাজর ৪০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৬৫, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০, ঝিঙ্গা ৬০, শিম ৫০, করলা ৪০ থেকে ৫০, শসা ৩৫ থেকে ৪০ এবং প্রতিপিস চাল কুমড়া ৪০ ও লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
বাজারে মাছের দাম আগের মতোই চড়া রয়েছে। প্রতি কেজি দেশি রুই মাছ আকারভেদে ২০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানিকৃত রুই ১৮০ থেকে ২৮০, বড় কাতলা ৩০০ থেকে ৪০০, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০, চিংড়ি আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৭০০, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০, পাঙ্গাশ ১৩০ থেকে ১৫০, সিলভার কার্প ১২০ থেকে ১৮০, মাগুর ৭০০ থেকে ৮০০, আইড় ৩০০ থেকে ৬৫০, বোয়াল ৩০০ থেকে ৫০০, পাবদা ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের সরবরাহ কমেছে। ফলে কিছুটা দাম চড়া।
মাংসের বাজারেও নেই কোনো সুসংবাদ। আগের চড়া দামেই অর্থাৎ গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৪০, খাসির মাংস ৫৫০ থেকে ৬০০, ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০, দেশি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। খামারের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। এছাড়া দেশি মুরগির ডিম ৪০ থেকে ৪২ এবং হাঁসের ডিম ৩২ থেকে ৩৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
রমজানের দুই মাস আগেই ডালের বাজার তেতে উঠেছে। গতকাল দেশি চিকন মসুর ডাল ১৪৫ থেকে ১৫০, দেশি মোটা মসুর ডাল ১৩৫ থেকে ১৪০, অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙ্গারু মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৫৫, নেপালি মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০, অ্যাংকর ৫০ থেকে ৫২, মুগ ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। রমজানে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। গত রমজানে এই ছোলা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।
চালের বাজারে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। আগের সপ্তাহের মতোই মিনিকেট চাল ৪০ থেকে ৪৫, নাজিরশাইল ৪৬ থেকে ৫৪, মোটা চাল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা আটা ২৫ থেকে ২৮, প্যাকেট ৩৩ থেকে ৩৫, খোলা ময়দা ৩২ থেকে ৩৪, প্যাকেট ৪০ থেকে ৪৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। চিনির দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি। গতকাল তা বিক্রি হয় ৫২ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আগের মতোই পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৪৪০ থেকে ৪৫৫ টাকায় এবং এক লিটারের বোতল বিক্রি করা হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। খোলা পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ৬৪-৬৬ টাকায় এবং পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ৬৭ থেকে ৬৯ টাকা লিটার দরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৩:২৮ ৩১৩ বার পঠিত