বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ শুরু থেকেই সম্ভাবনার প্রদীপ জ্বেলেছিলেন মডেল অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নী। নানা কারণেই তিনি ছিলেন আলোচনায়। আবার সমালোচনাও তার পিছু ছাড়েনি। মাঝে বিরতি দিয়ে নতুন করে আবারও অভিনয়ে ফিরেছেন এ অভিনেত্রী। ফেসবুকে কিংবা মুঠোফোনে খুব সহসা সাড়া মিলে না তিন্নীর। তাই যোগাযোগের ব্যর্থ চেষ্টা করেও হাল ছেড়ে দেয়ার মুহূর্তেই অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন। ওপারের কণ্ঠটি তিন্নির। পুরো নাম শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নী। শুরু করলেন এভাবে- ‘ধন্যবাদ খোঁজ নেবার জন্য। হুম, আমি বেশ ভালো আছি সবার দোয়ায়। আমার ভক্তরা আমাকে সব সময়ই মিস করে আমি জানি। তাদের জন্যই আমার কাজে ফিরতে ইচ্ছে করে। কিন্তু আগের মতো নিয়মিত কাজে ফেরার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। হঠাৎ কোনো গল্প ভালো লাগলে কাজ করব। বাকি সময় নিজের মতো করে কাটাব।’গল্প বাছাইয়ের বাতিকটা আগে থেকেই ছিল তিন্নী। নিজের জীবনকে অনিয়মের জালে জড়ালেও কাজের ব্যাপারে বরাবরই চুজি মেয়েটি। ফিরতি যাত্রায়ও সেটার প্রতিফলন দেখা গেছে। গল্প ভালো লেগেছে বলে এরইমধ্যে একদিন শুটিং করেছেন শামীম শিকদারের রচনায় ও সঞ্জয় সমদ্দারের নির্দেশনায় বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ সহযোগিতায় নির্মিতব্য নাটক ‘চেকপোস্ট’-এ। এতে সহশিল্পী হিসেবে তিন্নী পেয়েছেন শতাব্দী ওয়াদুদকে। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘চেকপোস্টের গল্প ভালো লাগায় কাজটি করেছি। তবে বৃষ্টির কারণে সেদিন হাতিরঝিলে শুটিং হয়নি। আমরা শুটিং করেছি বিজয় সরণিতে। কাজ ফেঁসে গেছে। আবার কাজ করব আমি আগামী সপ্তাহে। তখন আশা করি নাটকটির কাজ শেষ হয়ে যাবে। যতটুকু কাজ করেছি খুবই ভালো লেগেছে। একটি চেকপোস্টের গল্প, আশা করি খুব ভালো লাগবে দর্শকের।’
অনেক চেষ্টা করেও ব্যক্তি জীবন নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এ অভিনেত্রী। এ নিয়ে তার কোনো আগ্রহও নেই। বর্তমান নিয়েই তার যত ভাবনা। ব্যক্তি জীবনটা তার একান্তই নিজের। তাই শেয়ারিংয়ের মনোভাবটাও নিজের মধ্যে আবদ্ধ রেখেছেন।
২০০৪ সালে ‘কেয়া বিউটি সোপ’ ও বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে রাতারাতি তারকা বনে যান তিন্নী। এর পরপরই মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ধারাবাহিক নাটক ‘৬৯’-এ অভিনয় করে মুগ্ধ করেন দর্শককে। তার অভিনীত দর্শকপ্রিয় নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ‘অপেক্ষা’, ‘নীল কুয়াশা’, ‘এই মায়া’ ‘সুখের অসুখ’, ‘কবি বলেছেন’, ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারা’, ‘দয়িতা’ ‘বউ’ ইত্যাদি। এ সব নাটকে তিন্নির অনবদ্য অভিনয় অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছে। ২০০৭ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায় তিন্নী প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তবে বাণিজ্যিকভাবে তাকে দেখা যায় ২০১২ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘সে আমার মন কেড়েছে’ চলচ্চিত্রে। এতে তিনি জুটি বাঁধেন শাকিব খানের সঙ্গে। কিন্তু সে বছরই তার ব্যক্তি জীবনে নতুন করে ঝামেলা শুরু হওয়ায় সিনেমার কোনো ধরনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। ছবিটিও ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়। ফলে বাণিজ্যিক সিনেমার নায়িকা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে হারিয়ে যান তিন্নী। শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, ব্যক্তি জীবনের নানা টানাপোড়েনের কারণে মিডিয়া থেকেও হারিয়ে যায় মেয়েটি। মাঝে চয়নিকা চৌধুরীর নির্দেশনায় অপূর্বর বিপরীতে একটি নাটকে অভিনয় করেন ২০১৩ সালের শুরুতে। এরপর আর কোনো নাটকে দেখা যায়নি তাকে। গত বছর তিন্নী তার নিজের মায়ের লেখা একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, আবারও অভিনয়ে ফিরেছেন তিন্নী। তবে সেটার স্থায়ীত্ব কতো সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। অপেক্ষা শুধু সময়ের।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৩:৩৯ ৪২৪ বার পঠিত