বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছে মন ভাঙ্গা বাংলাদেশ দল। পরের ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের শরীরী ভাষা গেছে পাল্টে। ভারতের বিপক্ষে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দারুণ আক্রমণাত্মক বাংলাদেশকে দেখা গেলো। বোলারদের সবাই দুর্দান্ত পারফর্ম করলেন বেঙ্গালুরুতে। নিপুণ হাতে বোলারদের ব্যবহার করেছেন মাশরাফি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৪৬ রান করেছে ভারত। তামিম ইকবাল ফিরেছেন বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে। চ্যালেঞ্জটা টাইগার ব্যাটসম্যানরা নিতেই পারেন।
মাশরাফি প্রথম ওভার করেছেন। এরপর টানা চার ওভারে চার বোলার এনেছেন। একে একে এসেছেন অফ স্পিনার শুভাগত হোম, আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসানকে। ভারতের দুই ওপেনার ঝুঁকি নিতে পারেননি। ৫ ওভারে রান এসেছে ২৭। বাউন্ডারির মার তিনটি। গত বছর ভারতের বিপক্ষেই বিস্ময়কর অভিষেক ঘটেছিল মুস্তাফিজের। কাটার বিশেষজ্ঞ আবির্ভাবে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজ হারানোয় বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। এদিন ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে দুই ওপেনার তাকে দুই ছক্কা হাঁকালেন। কিন্তু ওভারের শেষ বলে শোধ নিলেন মুস্তাফিজ। রোহিত শর্মা (১৮) মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। পরের ওভারে সাকিব এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন অন্য ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে (২৩)।
এরপর মাশরাফি আবার ফিরলেন। ফিরলেন শুভাগতও। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪২ রান করা ভারতকে রানের জন্য খাটতে হচ্ছিল। বিরাট কোহলি ও সুরেশ রায়না উইকেটে। কিন্তু সাকিব-মাশরাফি-শুভাগত পরের ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৭ রান। ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫৯ রান ভারতের। স্বাগতিকদের বড় রান করার চেষ্টাটা বড় ধাক্কা খেয়েছে তো বটেই।
সবাই ভেবেছেন রায়না-কোহলি জুটি ঝড় তুলবে। কিন্তু তাদের খেলতেই দিচ্ছিলেন না বোলাররা। ১২ ওভারের মধ্যে নিজের ৪ ওভার শেষ করেছেন মাশরাফি। উইকেট পাননি। কিন্তু রান দিয়েছেন মাত্র ২২। চমৎকার! সাকিবও দারুণ বল করে যাচ্ছিলেন। প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়েছেন। ১ উইকেট নিয়েছেন। ২২ বল পর্যন্ত কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি এই সময়ের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান কোহলি। শুভাগতকে ১৪তম ওভারে ছক্কা মারলেন। পরের বলে বিপজ্জনক কোহলিকে (২৪ বলে ২৪) বোল্ড করে দিয়েছেন শুভাগত। যুবরাজ-ধোনির আগেই নেমেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। সাকিবকে দুটি বাউন্ডারি মারলেন। ৪ ওভার শেষে তবু সাকিবের বোলিং ফিগার চমৎকার : ৪-০-২৩-১।
১৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১১২ রান করা ভারত তো মারবেই। কিন্তু ৪ ওভার পর ফিরেই জোড়া আঘাত হেনেছেন আল-আমিন। বিপজ্জনক রায়না (২৩ বলে ৩০) মারতে গিয়েই সাব্বিরকে ক্যাচ দিলেন। ভাঙ্গে ৫০ রানের জুটি। পরের বলে বাউন্ডারি লাইনে সৌম্য সরকার অনেকদিন মনে রাখার মতো একটি ক্যাচ নিলেন। আড়াআড়ি দৌড়ের পর ডাইভ দিয়ে বল ধরেছেন। পান্ডিয়া (১৫) আউট। হ্যাটট্টিক হলো না আল-আমিনের। পরের চার বলের তিনটি ডট দিলেন।
মাশরাফি ১৭তম ওভারে একটি বারের জন্য ডাকলেন মাহমুদ উল্লাহকে। শুভাগত আগের ওভারে মার খেয়েছেন বলে। কাজ হলো। যুবরাজ (৩) পুল করতে গিয়ে জীবন দিয়ে এলেন। ৪ রানে ১ উইকেট মাহমুদ উল্লাহর। ডেথ ওভারেও দারুণ বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ ১৮তম ওভারে দিলেন ৫ রান। ১৯তম ওভারে ধোনি-জাদেজার ৩ বাউন্ডারি। আল-আমিন ১৪ রান দিলেন। তারপরও আল-আমিনের বোলিং ফিগার: ৪-০-৩৭-২।
শেষ ওভারের প্রথম বলেই মুস্তাফিজ উপড়ে দিয়েছেন রবিন্দ্র জাদেজার (১২) উইকেট। ধোনি ছিলেন। তারপরও মাত্র ৯ রান দিলেন মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে ৩৪ রানে ২ উইকেট তার। ১২ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থেকেছেন ধোনি। শেষ ১০ ওভারে ৮৭ রান তুলেছে ভারত। হারিয়েছে ৫ উইকেট। স্বাধীনভাবে ভারতের ব্যাটসম্যানদের খেলতে দেননি বোলাররা। তাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পেয়েছে জয় করার মতো একটি স্কোর।
বাংলাদেশ সময়: ২২:০৩:০৬ ৪১৪ বার পঠিত