ফ্রিডম ২৫১বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃযাঁরা ২৫০ রুপি দামের ফোন পেতে আগাম ফরমাশ দিয়েছিলেন, তাঁদের হতাশ হতে হচ্ছে। ৩০ হাজার আগ্রহী ক্রেতার অর্থ ফেরত দিচ্ছে ভারতের নয়ডাভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান রিংগিং বেল। গতকাল রোববার ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কিত ফ্রিডম ২৫১ নামের ২৫১ রুপির স্মার্টফোনটির নির্মাতা রিংগিং বেল স্মার্টফোন বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার পর প্রথম দিনে ৩০ হাজার ইউনিটের জন্য আগাম অর্থ গ্রহণ করেছিল। সেই অর্থ তারা ফেরত দিয়েছে।
রিংগিং বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহিত গোয়েল দাবি করেন, ৩০ হাজার ক্রেতার অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু নগদে ফোন বিক্রি করা হবে।
ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র ২৫০ রুপিতে স্মার্টফোন বাজারে আনার ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দেয় রিংগিং বেল। আগাম ফরমাশ নেওয়া শুরু করার প্রথম দিনই ৩০ হাজার ফরমাশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে বাকি সাত কোটি নিবন্ধন জমা পড়ে তাদের ওয়েবসাইটে। এতে ওই সাইট কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
গত শুক্রবার রিংগিং বেলের প্রেসিডেন্ট অশোক চাধা ঘোষণা দেন, স্মার্টফোন হাতে পাওয়ার পর দাম পরিশোধ করবেন ক্রেতারা। আমরা ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতিতে ফোন বিক্রি করব। যাঁরা ২৫১ রুপির ফোনের জন্য ফরমাশ দিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে ফোন পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত হবে এবং ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।
চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে ২৫ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বের সবচেয়ে সাশ্রয়ী স্মার্টফোন তৈরির বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভারতের একটি কল সেন্টারের পক্ষ থেকে এফআইআর ও সুনামহানি করায় মামলা করা হয়েছে।
রিংগিং বেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তারা পেমেন্ট গেটওয়ে পেইউবিজের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ক্রেতা পণ্য হাতে বুঝে পেলেই কেবল অর্থছাড় করবে ওই পেমেন্ট গেটওয়ে।
এর আগে রিংগিং বেল দাবি করেছিল, সরকারের কাছ থেকে তারা সমর্থন পাবে। তবে ভারতের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রমোশন বিভাগের সচিব আমিতাভ কান্ট রিংগিং বেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা সরকারি কোনো প্রকল্প নয়। মেক ইন ইন্ডিয়ার সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
সম্প্রতি রিংগিং বেল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ভারতের কংগ্রেসদলীয় এক সাংসদ। প্রমোদ তিওয়ারি শুক্রবার ভারতের রাজ্যসভায় ২৫১ রুপির স্মার্টফোনকে ‘প্রতারণা’ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতের বিজেপির নেতাদের এই প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন এবং সরকারের কাছে এর উত্তর চান।
তিওয়ারি অভিযোগ করেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করছি। এ সরকার বড় একটি কেলেঙ্কারি করছে। বিজেপির আমলে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির ঘটনাটি ঘটবে। এ পণ্যটি উদ্বোধনের সময় বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কেলেঙ্কারির সঙ্গে তাঁরা যুক্ত। তাঁরা মেক ইন ইন্ডিয়া কথা বললেও মেক ইন ফ্রড করছে।’
২৫১ রুপিতে মানুষের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে কংগ্রেসের এই সংসদ দাবি করেন, ইতিমধ্যে ছয় কোটি ফরমাশ পেয়েছে এই ফোন কোম্পানিটি। ২৫১ রুপি করে হলেও শত শত কোটি টাকা তারা সংগ্রহ করেছে। এই ফোনটি তৈরির খরচ ১ হাজার ৪০০ রুপি হবে বলে এর পরিচালক স্বীকার করলেও তাঁরা কীভাবে মাত্র ২৫১ রুপিতে তা বিক্রি করবেন, তা সত্যিই আশ্চর্যের বিষয়।
তিওয়ারি প্রশ্ন তোলেন, ২৫১ রুপিতে যদি স্মার্টফোন পাওয়া যায়, তবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কেন ২০-৩০ হাজার রুপিতে ফোন বিক্রি করছে। হয় এতে কোনো গলদ আছে বা ওই ফোন কোম্পানিগুলোর কোনো গলদ আছে। সরকারকে এর উত্তর দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৮:৪৬ ৩৩৭ বার পঠিত