বঙ্গনিউজ ডটকমঃ আজ নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধান বিচারপতির প্রতি এ আহবান জানান। তিনি বলেন, সকল মামলায় জামিন হওয়ার পরও সরকার একটি মানহানির মামলায় পিডব্লিউ বা প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার না করার অজুহাত দেখিয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে আটকিয়ে রেখেছে। দু’সপ্তাহ ধরে আটকিয়ে রাখার পরে গতকাল পিডব্লিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে, আজ যখন মাহমুদুর রহমানের মুক্তি পাওয়ার কথা ঠিক সেই মূহুর্তে মাহমুদুর রহমানকে আর একটি মামলায় অভিযুক্ত দেখিয়ে আটকিয়ে রাখা হলো।
সুতরাং দু’সপ্তাহ ধরে পিডব্লিউ প্রত্যাহার না করাটা একটা যে গভীর চক্রান্ত ছিল তা এখন সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো। সরকারের নির্দেশেই সিএমএম এহেন হীন একটি চক্রান্তের অংশীদার হলেন। সরকার মাহমুদুর রহমানের মতো একজন সৎ ও স্পষ্টভাষী মানুষকে শত্রুজ্ঞান করে। তাই এই সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে সেটি ন্যায়নিষ্ঠ, বিবেকবান প্রতিবাদী মানুষকে দমন করতে কাজে লাগাচ্ছে। বিএনপি বারবার অভিযোগ করে এসেছে যে, সরকার আদালতকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করার সর্বাধিক চেষ্টা চালিয়েছে। বিশেষভাবে নি¤œ আদালতকে নিজের কব্জায় রাখার জন্য সরকার অনেকটাই সফল হয়েছেন। কারণ আদালতের বিচারক হচ্ছেন ব্যক্তি মানুষ, সেই মানুষ যদি দলের বিচারে, গোষ্ঠির বিচারে বা অঞ্চলের বিচারে বিবেচনা করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়া অধরায় থেকে যাবে।
তিনি বলেন, দেশের দায়িত্বশীল সব মানুষদের কর্মকান্ড জনগণ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে। মাহমুদুর রহমানের পিডব্লিউ নিয়ে সিএমএম যেভাবে ভূমিকা পালন করলেন তা ন্যায়বিচারের চরম পরিপন্থী। একজন মানুষকে কারাগারে বন্দী রেখে কষ্ট দিতে সরকারের ক্রোধ পরিতৃপ্ত করার সহযোগী হিসেবেই সিএমএম দায়িত্ব পালন করলেন। সিএমএম দু’সপ্তাহ ধরে মাহমুদুর রহমানের পিডব্লিউ প্রত্যাহার করতে অপেক্ষা করেছেন সরকারকে সুযোগ দেয়ার জন্য, যাতে সরকার পুরনো একটি মিথ্যা মামলা যে মামলায় মাহমুদুর রহমানের নাম গন্ধ ছিল না সেই মামলায় জড়িয়ে তাঁকে দীর্ঘদিন আটকিয়ে রাখা যায়। এটি এদেশের বিচারিক ইতিহাসে এক ন্যাক্কারজনক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নীতি হচ্ছে-এই শক্তিকে দাবিয়ে রাখতে হবে, ধ্বংস করতে হবে। ভোটারবিহীন সরকারের যেহেতু জনসমর্থন নেই, তাই তাদের জনসাধারণের প্রতি নীতি হচ্ছে-মানুষকে বশ মানাতে বল প্রয়োগ করা। আর সেই জন্যই এই সময়ের সাহসী, নির্ভিক ও সত্য উচ্চারণে অকপট মাহমুদুর রহমানের ওপর চলছে নানামুখী জুলুম নির্যাতন। ইতিমধ্যে সকল মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও তাঁকে নতুন করে আটকিয়ে রাখার জন্য সরকার একের পর এক বেড়াজাল নির্মাণ করে চলছে। এর ওপর দীর্ঘদিনের কারা নির্যাতনের ফলে মাহমুদুর রহমানের স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটেছে, তাঁর চোয়ালের ব্যথা অসহনীয় হয়ে উঠেছে, তাঁর সাড়ে চৌদ্দ কেজি ওজন হ্রাস পেয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে যেকোন মূহুর্তে তাঁর স্বাস্থ্যগত আরো চরম অবনতি হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুব বিষয়ক সম্পাদক ষৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৯:৪৬ ৩৯২ বার পঠিত