রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি সোনার দোকানে অলংকার দেখছেন ক্রেতারা। ছবিটি গত রাতে তোলা l ছবি: প্রথম আলোবঙ্গনিউজ ডটকমঃচলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ছে। সব ধরনের সোনার দর ভরিতে এবার বাড়ছে ১ হাজার ২২৫ টাকা। ভালো মানের সোনার ভরি দাঁড়াচ্ছে ৪৩ হাজার ৭৪০ টাকা। কাল শনিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) গতকাল বৃহস্পতিবার মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। সোনার পাশাপাশি রুপার দাম ভরিতে ৫৮ টাকা বাড়িয়েছে সমিতি। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি সোনা-রুপার মূল্যবৃদ্ধি করে তারা। ফলে এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ৪৫০ টাকা বাড়ছে।
নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেট সোনার দাম পড়বে ৪৩ হাজার ৭৪০ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেট ৪১ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের দাম হবে ৩৪ হাজার ৯৯২ টাকা ভরি। সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরি ২৩ হাজার ৯১১ টাকা দাঁড়াবে। আর ২১ ক্যারেট (ক্যাডমিয়াম) রুপার ভরি হবে ৯৯১ টাকা।
আজ শুক্রবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ৪২ হাজার ৫১৫ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪০ হাজার ৪১৫ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ৩৩ হাজার ৭৬৭ টাকায় বিক্রি হবে। আর সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরির দর ২২ হাজার ৬৮৬ টাকা। ৯৩৩ টাকায় বিক্রি হবে প্রতি ভরি রুপা।
জানতে চাইলে জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে সোনার দাম গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ভরিতে ১ হাজার ৯০০ বেড়েছে। ফলে দেশের বাজারে না বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।’ তবে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকলে সামনের সপ্তাহে সমিতি আবার সোনার দাম বাড়াবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শীতের সময় বিয়েশাদির অনুষ্ঠান বেশি হওয়ায় মানুষ অলংকার বেশি কেনে। দাম বাড়ানোয় ব্যবসা কমে যাবে কি না—জানতে চাইলে এনামুল হক খান বলেন, ‘সোনার দামে যখন ঊর্ধ্বগতি থাকে, মানুষ তখন বেশি কেনে। আর দাম কমের দিকে থাকলে মানুষ অপেক্ষা করে। ফলে দাম বাড়ানোর কারণে ব্যবসা খারাপ হওয়ার শঙ্কা কম।’
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ২২৪ টাকা কমায় সমিতি। তার আগে ২৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স (২ দশমিক ৪৩ ভরি) সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৬৬ মার্কিন ডলার। গত ১৩ জানুয়ারি যখন সোনার দাম বাড়ানো হয়, তার আগে ১০ তারিখ আন্তর্জাতিক বাজারে দর ছিল প্রতি আউন্স ১ হাজার ১০৩ মার্কিন ডলার। আর গতকাল প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়ে হয় ১ হাজার ১৪৭ মার্কিন ডলার।
জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে। সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরোনো স্বর্ণালংকার গলিয়ে তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, সেটি নিশ্চিত নয়।
এদিকে অলংকার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের কিছু বিষয় নজরে রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ক্রেতাদের অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত ও সমিতির নিবন্ধিত জুয়েলার্স থেকে অলংকার কেনা উচিত। এ ছাড়া ক্যাশ মেমোতে সোনার পরিমাণ, মজুরি ও কত ক্যারেটের সোনা, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে কি না, সেটি দেখে নেওয়া দরকার। এ ছাড়া বাংলাদেশে অলংকারের গায়ে ‘হলমার্ক’ চিহ্ন থাকে। এর দ্বারা অলংকারে কতটুকু বিশুদ্ধ সোনা আছে, বোঝা যায়। হলমার্ক চিহ্নিত অলংকার কিনলে ক্রেতারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫০:৩৪ ৩০৫ বার পঠিত