হিমালয়ের সেই ছেলেটির ‘বস’ হওয়ার গল্প

Home Page » বিজ্ঞান-প্রযুক্তি » হিমালয়ের সেই ছেলেটির ‘বস’ হওয়ার গল্প
শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৬



গুগলের সার্চ প্রধান অমিত সিংগালবঙ্গনিউজ ডটকমঃগুগলের সার্চ প্রধান অমিত সিংগাল অবসরে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে গুগলের সার্চ ব্যবসার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২৬ ফেব্রুয়ারি সিংগালের বিদায়ের দিন। তাঁর জায়গায় আসছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগের নির্বাহী জন জ্ঞানেন্দ্র। ভারতের একটি ছোট শহর থেকে উঠে এসে গুগলের বড় একটি পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি তরুণদের জন্য প্রেরণাদায়ক। এ বিষয়টি সম্প্রতি উঠে এসেছে ইন্ডিয়া টুডে ও আইবিএনলাইভের প্রতিবেদনে।

 

২০০০ সালে গুগলে যোগ দিয়েছিলেন সিংগাল। তখন থেকে গুগলের ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের কারিগরি উন্নয়ন দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে দ্রুত, স্মার্ট ও মোবাইল যন্ত্রে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছে। গুগল সার্চের ক্যালকুলেটর, আবহাওয়ার তথ্য যুক্ত করার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। গুগল প্লাসে লেখা একটি পোস্টে সিংগাল লিখেছেন, ‘আমি যখন শুরু করেছিলাম, মাত্র ১৫ বছরের ব্যবধানে আমরা গুগলকে এ অবস্থায় নিয়ে আসতে পারব। গুগলকে যে প্রশ্নই করা হোক না কেন, তথ্য খুঁজে এনে হাজির করবে। আমার প্রিয় স্টার ট্রেক কোম্পানি বাস্তবতার মুখ দেখছে। আমি যা ধারণা করেছিলাম, এটা তার চেয়ে বেশি কিছু।’

সিংগালের জন্ম ভারতের ঝাঁসিতে। তিনি আইআইটি রুকরি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিগ্রি নেন। এরপর এমএস করেন মিনেসোটা ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্নেলে থাকা অবস্থায় ইনফরমেশনাল রিট্রাইভাল বিষয়ে গবেষণা করেন। এরপর গুগলে যোগ দেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল অপারেটর এটিঅ্যান্ডটির কারগরি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। তিনি ৩০ টির বেশি গবেষণাপত্র ও বেশ কিছু পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী।

গুগল প্লাসে ‘দ্য জার্নি কনটিউজ…’ শিরোনামে একটি পোস্টে সিংগাল লিখেছেন, প্রিয় বন্ধুরা, আমার জীবন একটি স্বপ্নময় যাত্রার মতো। হিমালয়ের পাদদেশে স্টার ট্রেক কম্পিউটারের স্বপ্ন দেখে ছোট একটি ছেলে হিসেবে বেড়ে ওঠা, এরপর অভিবাসী হিসেবে মাত্র দুটি সুটকেস হাতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো ছাড়া আর কিছু নয়। এরপর গুগল সার্চের দায়িত্ব নেওয়া। জীবনের প্রতিটি মোড় আমার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করেছে এবং উন্নত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

সিংগাল বলেন, গুগলে ১৫ বছর পার হওয়ার পর নিজেকে এই প্রশ্নটি করেছি, ‘আগামী ১৫ বছর কী করতে যাচ্ছি?’ উত্তরটা হচ্ছে-অন্যদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমার কাছে কম সৌভাগ্যবান মানুষগুলোকে সবকিছু দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে সব সময়। পরিবারের জন্য সময় দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার এখনই উপযুক্ত সময়। দারুণ রূপ পাচ্ছে প্রযুক্তির বিষয়গুলো। সার্চ ইঞ্জিন আগের চেয়ে শক্তিশালী আরও অভিজ্ঞ মানুষের হাতে তা আরও উন্নত হবে।

সিংগাল তাঁর অভিজ্ঞতা হিসেবে লিখেছেন, গত ১৫ বছরে আমি যা তৈরি করেছি, এতে আমি গর্বিত। সার্চ মানুষের জীবনকে উন্নত করেছে। ১০০ কোটির বেশি মানুষ আমাদের ওপর নির্ভর করে। মানুষকে তথ্য দিয়ে ক্ষমতায়ন করা আমাদের লক্ষ্য। বিশ্বে গুগল সার্চ যে প্রভাব ফেলেছে তা অনস্বীকার্য। আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন কে ভেবেছিল মাত্র ১৫ বছরের সংক্ষিপ্ত সময়ে আমরা একটি বাটন চেপে গুগলকে জিজ্ঞাসা করলেই সব উত্তর পেয়ে যাব। এখন আমাদের কাছে গুগল দ্বিতীয় প্রকৃতি। আমার স্বপ্নের স্টার ট্রেক কম্পিউটারের স্বপ্ন সফল হয়েছে। আমি যা ভেবেছিলাম এটা তার চেয়েও বেশি কিছু।

অমিত তাঁর বিদায় উপলক্ষে ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি গুগলকে ভালবাসি। এটা এমন কোম্পানি, যা সঠিক জিনিস তৈরিতে বিশ্বাস করে, বিশ্ববাসীর জন্য ভালো কিছু তৈরি এবং মানুষের কথা ভেবে জিনিস বানায়। পেছনে ফিরে দেখলে আমি অনেককে ধন্যবাদ দেব। আমি এখন গর্ব, কৃতজ্ঞতা আর আনন্দ আমার হৃদয়ে ধারণ করেছি। আমার পরবর্তী ১৫ বছর কীভাবে কাটাব, তা ঠিক করতে হবে। দাতব্য কাজের পাশাপাশি আমার পরিবারকে সময় দিতে চাই। আমার ব্যস্ত জীবনে স্ত্রীকে যে সময় দিতে পারিনি সেই স্ত্রী, সন্তানকে সময় দিতে চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪১:০৬   ২৫১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি’র আরও খবর


ব্যবহৃত ল্যাপটপ ওয়ারেন্টিসহ বিক্রি করছে Device mama
ইতিহাসে প্রথম, ল্যাবে তৈরি রক্ত মানুষের দেহে !
শক্তিশালী প্রসেসরে নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনছে মটোরোলা
যবিপ্রবির ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ জাল- আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ
ভারত ৩৬টি স্যাটেলাইট স্থাপন করল একসঙ্গে !!
মোবাইল ব্যাংকিং এখন গ্রাহক সংখ্যা ১৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং দৈনিক লেনদেনও ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
চাঁদের উদ্দেশে নাসার রকেট উড়াল দেবে
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ছাড়বে রাশিয়া
“Whatsapp” এ কল রেকর্ড করবেন যেভাবে ?
তাইওয়ান সীমান্তে চীনা যুদ্ধবিমান; ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর

আর্কাইভ