এ বছর ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ট্যাঙ্গো, লাইন, হ্যাংআউটস, স্কাইপ, টুইটার, ইমো বন্ধ ছিল।
বঙ্গনিউজ ডটকমঃ টানা ২২ দিন ফেসবুকহীন কেটেছে এ বছর! ভিপিএন দিয়ে যাঁরা ফেসবুক ব্যবহার করেছেন তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু টানা ২২ দিন দেশে ফেসবুক বন্ধ নিশ্চয়ই এ বছরের আলোচিত একটি ঘটনা। শুধু কী ফেসবুক, এ বছর তো কয়েকদিন করে বন্ধ থেকেছে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ট্যাঙ্গো, লাইন, হ্যাংআউটস, স্কাইপ, টুইটার, ইমোর মতো সেবাও।
২০১৫ সাল অবশ্য দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার বছর। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উন্নয়ন সূচকে এ বছর একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। তথ্য ও যোগাযোগ সুবিধার এই সূচকে এ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪ তম, যা ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছিল ১৪৫ তম। ১৬৭টি দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সূচক প্রকাশ করে জাতিসংঘের এ টেলিকমিউনিকেশন-ভিত্তিক এ সংস্থাটি। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ধারায় এ বছর দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক আয়োজন ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে, বিপিও সামিট হয়েছে। সব ছাপিয়ে এ বছরে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে আলোচিত ঘটনা ফেসবুকসহ যোগাযোগের অ্যাপস বন্ধ হয়ে যাওয়া।
বছরের শুরুতেই বন্ধ যোগাযোগের অ্যাপস
এ বছরের একেবারে শুরুর দিকে দেশে ভাইবার ও ট্যাঙ্গো অ্যাপস দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ১৮ জানুয়ারি ভাইবার ও ট্যাঙ্গো বন্ধ করে দেয় সরকার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এক চিঠি এবং মৌখিক নির্দেশে ওইদিন ভোর পাঁচটা থেকে সেবা দুটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ হয়। ভাইবার ও ট্যাঙ্গো বন্ধের কারণ হিসেবে বিটিআরসির সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিটিআরসি এ কাজ করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৯ জানুয়ারি ভাইবার ও ট্যাঙ্গোর পর হোয়াটসঅ্যাপ, মাইপিপল ও লাইন নামের আরও তিনটি ভয়েস ও মেসেজিং সেবা বন্ধ করে দেয় সরকার। বিটিআরসির কর্মকর্তারা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে সেবা বন্ধের অনুরোধ পেয়ে বিটিআরসি এ ব্যবস্থা নেয়। বিভিন্ন অনলাইন, ফেসবুকসহ সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমেও ভাইবার ব্যবহার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবহারকারীরা। বাংলাদেশে ভাইবার বন্ধ হওয়ার এই খবর এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান ও দ্য হিন্দুর মতো সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়। বন্ধ থাকা ভাইবার ও ট্যাঙ্গোসহ সামাজিক যোগাযোগের পাঁচটি ভয়েস ও মেসেজিং সেবায় ২১ জানুয়ারি বুধবার রাত ১২টা থেকে খুলে দেয় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন।
বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিনা খরচে কথা বলা ও নিজেদের অবস্থান গোপন রেখে কথা বলার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগের জন্য ভাইবার ব্যবহার করেন। এমনকি নাশকতার কাজেও প্রয়োজনীয় যোগাযোগ সারা হচ্ছে ভাইবার ব্যবহার করে। এ ব্যাপারে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেবা দুটি বন্ধে বিটিআরসির সহায়তা চায়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিটিআরসি থেকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয় মুঠোফোন কোম্পানি ও আইজিডব্লিউগুলোর কাছে। সে অনুযায়ী ভাইবার ও ট্যাঙ্গো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন ও মাইপিপল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে বলে জানানো হয়। এ কারণে তাদের পক্ষ থেকে ভাইবার ও ট্যাঙ্গো বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ানো এবং নতুন তিনটি সেবা বন্ধের অনুরোধ আসে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির নতুন নির্দেশনাটি আসে।
নিরাপত্তার কারণে ফেসবুক বন্ধের ইঙ্গিত
জানুয়ারি মাসের পর এ বছরের ৮ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপ বন্ধের ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী। এক সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গি অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধরতে জটিলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল করেছি। এর শুভ ফলও যেমন আছে, খারাপ ফলও আছে। আমরা থ্রি-জি ও ফোর-জিতে চলে গেছি। এ কারণে জঙ্গিরা ইন্টারনেট, ভাইবার থেকে শুরু করে নানা ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ জন্য আমাদের চিন্তাভাবনা আছে, যদি খুব বেশি ব্যবহার করে হয়তো একটা সময়ের জন্য বা কিছুদিনের জন্য বন্ধ করে দেব। এই লিংকগুলো (জঙ্গি অর্থায়নের সূত্র) যাতে ধরা যায়।’
১১ নভেম্বর সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি সেলিমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাইবার অপরাধ বন্ধ করতে এবং সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ধরতে প্রয়োজন হলে কিছুদিনের জন্য ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব ভালো কাজের কিছু খারাপ দিক আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল মানুষ পাচ্ছে। এ সুযোগ ব্যবহার করে কিছু কিছু মানুষ ক্রাইম করছে। দুর্ভাগ্য হলো, কিছু লোকের মন্দ কাজের জন্য অনেক সময় ভালো মানুষ কষ্ট পায়। তাই সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ধরার জন্য প্রয়োজন হলে কিছুদিনের জন্য হলেও ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা হবে। যখন প্রয়োজন হবে, আমি এটা বন্ধ করব। বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের ধরার চেষ্টা করা হবে।’
বন্ধ নেট, ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের বেশ কিছু মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। প্রথমে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। পরে আরেকটি নির্দেশনায় লাইন, ট্যাংগো, হ্যাংআউটসহ আরও কয়েকটি মাধ্যম বন্ধের কথা জানানো হয়। তবে এ কাজটি করতে গিয়ে ওই দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে বাংলাদেশ। ১৮ নভেম্বর দুটি আলাদা নির্দেশনায় এ সব মাধ্যম বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিটিআরসির উচ্চ পর্যায়ের সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে বিটিআরসি এ নির্দেশনা জারি করেছে।
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। ওইদিন দুপুরে প্রথম নির্দেশনায় ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। পরে আরেকটি নির্দেশনায় লাইন, ট্যাংগো, হ্যাংআউটসহ আরও কয়েকটি মাধ্যম বন্ধের কথা জানানো হয়। কয়েকটি সূত্র জানায়, লিখিত নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধের কথা বলা হলেও মৌখিকভাবে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী আইআইজিগুলো বেলা দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এক ঘন্টা ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে। পরে বিটিআরসি থেকে ইন্টারনেট সেবা চালু করার কথা জানিয়ে দেওয়ার পর সেটা চালু করা হয়।
২২ দিন পর…
টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর ১০ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক খুলে দেয় সরকার। ওইদিন দুপুরে ফেসবুক খুলে দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একই সময়ে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ফেসবুক খুলে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপরই বেলা একটা ৪৫ মিনিটে দেশের সব মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের ফেসবুক খুলে দেওয়ার নির্দেশনা পাঠায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
তারানা হালিম বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এখন বিঘ্নিত হবে না, সেটি নিশ্চিত হয়েই সরকার ফেসবুক খুলে দিয়েছে। ফেসবুক খোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন জুনাইদ আহমেদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দেশের তরুণদের কথা মাথায় রেখে তিনি (সজীব ওয়াজেদ) ফেসবুক খুলে দিতে অনুরোধ করেন। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফেসবুক না থাকায় সমস্যায় পড়ছিলেন তরুণেরা। জুনাইদ আহমেদ আরও বলেন, ফেসবুকভিত্তিক অপরাধ কার্যক্রমের বিষয়টি ভবিষ্যতে সতর্কতার সঙ্গে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফেসবুক খুললেও ১৩ ডিসেম্বর টুইটার, স্কাইপ ও ইমো বন্ধ করার নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। দেশের সব মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েকে (আইআইজি) রাতে এক ই-মেইল বার্তায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে পাঠানো ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, ভাইবার ও অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি স্কাইপ, ইমো ও টুইটার আপনার নেটওয়ার্ক থেকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের এ নির্দেশ বলবৎ থাকবে।
১৪ ডিসেম্বর দেশের অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। ওই দিন ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, স্কাইপসহ বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। ওই দিন থেকে খুলে যায় ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, লাইন, ট্যাংগো, হ্যাংআউট, স্কাইপ, ইমো, টুইটারসহ বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম।
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সরকার বন্ধ থাকা সব যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম খুলে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। এরপরই সন্ধ্যায় এগুলো খুলে দেওয়া হয়। দেশের সব মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েকে (আইআইজি) এসব অ্যাপস খুলে দেওয়ার এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
শাহজাহান মাহমুদ আরও বলেন, এখন থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ বা খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বিটিআরসি।
কমে গেছে ইন্টারনেটের গ্রাহক
বছরজুড়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবাগুলো বন্ধ ও খোলার ঘটনা দেশের তরুণ উন্মুক্ত পেশাজীবীদের (ফ্রিল্যান্সার) ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়াও দেশের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে এ খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়।
এদিকে চলতি বছরের নভেম্বরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাত লাখ কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকার ফলেই এ সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে বলে টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটি ৩৯ লাখ হয়েছে। গত অক্টোবরে এ সংখ্যা ছিল পাঁচ কোটি ৪৬ লাখ।
ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব অনুযায়ী, ফেসবুক বন্ধ হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২৩০-২৪০ জিবিপিএস (গিগা বিট প্রতি সেকেন্ড)। এ সব মাধ্যম বন্ধ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তা ৩০ শতাংশ কমে ১৭০ জিবিপিএসে নেমে যায়। গত ১৪ ডিসেম্বর এগুলো খুলে দেওয়ার পর ব্যান্ডউইথ ব্যবহার আগের পর্যায়ে ফিরে এসেছে। আইআইজি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ স্ট্রাটেজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কমে যাওয়ার মূল কারণ।’ মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীও গত এক মাসে পাঁচ কোটি ২৩ লাখ থেকে নয় লাখ কমে পাঁচ কোটি ১৪ লাখ হয়েছে। মোবাইল অপারেটররাও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমে যাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকার বিষয়টিকেই সামনে এনেছেন।
নাম প্রকাশ না করে একাধিক মুঠোফোন অপারেটরের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ফেসবুক, ভাইবার বন্ধ থাকায় নভেম্বরে তাদের নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমে যায়।
সব মিলিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপ, ইমোর মতো অ্যাপ বন্ধ করার ঘটনার জন্য ২০১৫ সালটি নিশ্চয় পাঠকদের মনে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৫:২১ ৩৭২ বার পঠিত