বঙ্গনিউজ ডটকমঃব্যবসাবান্ধব পরিবেশের দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২১তম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী বাণিজ্য সাময়িকী ফোর্বস এ বছর ১৪৪টি দেশ নিয়ে এ তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকার শীর্ষ দেশ ডেনমার্ক, আর একেবারে নিচের দেশ চাদ।
ফোর্বস-এর তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে স্থান পেয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ। দেশগুলো হলো শ্রীলঙ্কা (৯১তম), ভারত (৯৭তম), ভুটান (১০১তম) ও পাকিস্তান (১০৩তম)। এ অঞ্চলের যে দেশটি বাংলাদেশের নিচে রয়েছে তা হলো মিয়ানমার (১৪০তম)। ফোর্বস-এর ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
১১টি বিষয়কে পরিমাপক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বার্ষিক এ তালিকা। বিষয়গুলো হলো সম্পত্তির অধিকার, উদ্ভাবন, কর, প্রযুক্তি ও দুর্নীতি; ব্যক্তিগত, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা; আমলাতন্ত্র বা লালফিতার দৌরাত্ম্য, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং পুঁজিবাজারের সক্ষমতা। বিষয়গুলোর প্রতিটিকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে।
পরিমাপকগুলো সার্বিকভাবে বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২১তম হলেও পৃথকভাবে কোনো কোনো ক্যাটাগরিতে খানিকটা ভালো অবস্থানেও রয়েছে দেশটি। যেমন: পুঁজিবাজারের সক্ষমতায় ৪৩তম, করভারে ৭০তম, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ৮০তম, ব্যক্তিস্বাধীনতায় ৯২তম ও লালফিতার দৌরাত্ম্যে ৯৪তম স্থানে বাংলাদেশ। আর পিছিয়ে আছে বাণিজ্য স্বাধীনতা (১৩৭তম), অর্থনৈতিক স্বাধীনতা (১৩১তম), সম্পত্তি অধিকার, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি (১২৭তম) এবং দুর্নীতির ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৪০০ ডলার, জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯০ লাখ, সরকারি ঋণ জিডিপির ২৪ শতাংশ, বেকারত্ব ৫ ও মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ।
নিচের দিকে থাকা দেশগুলোর পিছিয়ে পড়ার কারণ বা চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতিবেদনে মূলত দায়ী করা হয়েছে ব্যাপক মাত্রার দুর্নীতি এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে খুব কম মাত্রার স্বাধীনতাকে। সহিংসতা, দারিদ্র্য, বৈষম্য, অপর্যাপ্ত পরিবহন ও কৃষি অবকাঠামো, অ-কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব ইত্যাদি বিষয়ও উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এতে।
তালিকার শীর্ষ ১০ দেশ যথাক্রমে ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, কানাডা, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য। শীর্ষ ২৫টি দেশের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ইউরোপের দখলে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান চার ধাপ পিছিয়ে এ বছর হয়েছে ২২তম। বিশ্ব বাণিজ্যের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হয় দেশটিকে।
আগের মতোই এবারও ডেনমার্ক শীর্ষস্থান দখল করার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবসা-সহায়ক পরিবেশ নির্ণয়ের ১১টি পরিমাপকের একটি বাদে সব কটিতে শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে এর অবস্থান। বিশেষত, ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে দেশটির অবস্থান খুবই মজবুত। দুর্নীতিও অনেক কম। আর নিয়ন্ত্রণ পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনায় দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ ও যোগ্য দেশগুলোর অন্যতম।
তালিকায় যেসব সংগঠনের প্রতিবেদন থেকে উপাত্ত নেওয়া হয়েছে সেসবের মধ্যে আছে বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, হ্যারিটেজ ফাউন্ডেশন, প্রোপার্টি রাইটস অ্যালায়েন্স ও ফ্রিডম হাউস।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৬:২৯ ৩১০ বার পঠিত