বঙ্গনিউজ ডটকমঃনানা জল্পনা-কল্পনা শেষে পৌরসভা নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’দের বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছে বিএনপি। দৃশ্যত জোটবদ্ধ নির্বাচন ও প্রার্থিতার কথা বলা হলেও কার্যত কোনো সমঝোতাই হয়নি জোট শরিক দল দুটিতে। এক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে ভিন্ন কোনো পথ বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকদের। গত বুধবার দুপুরে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ডেকে নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার বেলা ১২টার দিকে গুলশান-২-এ খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের একটি কক্ষে সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বরিশাল বিভাগের মজিবুর রহমান সারোয়ার, খুলনা বিভাগের মশিউর রহমান, রংপুর বিভাগের আসাদুল হাবিব দুলু, চট্টগ্রাম বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম চৌধুরী, সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, নির্বাচনী সমন্বয় কমিটির দুই সদস্য যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান ও সহ-প্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স।
সূত্রমতে, বৈঠকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রত্যাহার করাতে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেন মির্জা ফখরুল। বুঝিয়ে-শুনিয়ে প্রার্থীদের প্রত্যাহার করাতে বলা হয়।
সূত্র জানায়, সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে মহাসচিবের বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নেওয়া, জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা ও সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মাঠে থাকার বিষয়ে আলোচনা হয়।
তবে বৈঠকের বিষয়ে মুখ না খুললেও সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচনে এসেছি। বিজয়ী হতেই আমরা পৌর নির্বাচনে অংশ নেব। মহাসচিব আমাদের বলেছেন, আমরা যেন আমাদের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে থাকি।
একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, এখন পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ২৭। এর মধ্যে ২০-২১ জনের মতো সরে আসবেন। ৫-৭ জনের মতো থাকবেন যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এক প্রশ্নের উত্তরে এই নেতা বলেন, মাত্র ৫-৬ জনের জন্য বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।
জানা গেছে, জামায়াতের সঙ্গে কেন্দ্র থেকে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় জোটবদ্ধ নির্বাচনের আশা শেষ পর্যন্ত গুড়ে বালি। ইতোমধ্যে সারাদেশে ৪৪ জামায়াত সমর্থিত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন। বিএনপি দিয়েছে সবগুলোয়। এর মধ্যে ১৩ জনের মতো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সময় ছিল কম। এতে বিএনপিও প্রার্থী ঠিক করতে হিমশিম খেয়েছে। জামায়াতও চাপে আছে। ১০০ জায়গার কথা বলা হলেও ওরা তো শেষ পর্যন্ত ৪৪টিতে দিতে পেরেছে। এটা সময় স্বল্পতার কারণে। ফলে প্রকৃতপক্ষে সমঝোতার জন্য যেটুকু সময় দরকার ছিল, তাও কিন্তু হয়নি। সে কারণেই আমাদের বলা হয়েছে যোগ্যতা, ভোট ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে স্থানীয়ভাবেই এসব বিষয় মিটিয়ে ফেলতে।
জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য সিলেট জামায়াত নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, এ নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এটা দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ঠিক করবেন। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো জানেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৫:০৩ ৩২৮ বার পঠিত