প্রচারে নামছেন খালেদা, ক্ষুব্ধ আ.লীগ-জাপা

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » প্রচারে নামছেন খালেদা, ক্ষুব্ধ আ.লীগ-জাপা
বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫



Untitled-8বঙ্গনিউজ ডটকমঃ আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের ২৩৪ পৌরসভায় নির্বাচন। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার রণপ্রস্তুতি নিয়ে মুখিয়ে আছে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারে নামার সুযোগ পাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলটির হাইকমান্ড। তবে রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী হওয়ায় এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির একাধিক নেতা। ক্ষুব্ধ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও।

বিএনপি সূত্রমতে, পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামবেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারিসহ একাধিক পৌরসভায় তিনি প্রচারে অংশ নেবেন। যেমন নিয়েছিলেন গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। যেহেতু তিনি (খালেদা জিয়া) রাষ্ট্রীয় কোনো পদে আসীন নন, তাই প্রচারে অংশ নিতে তার প্রতি কোনো বিধি-নিষেধ থাকছে না। আর এই সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে নারাজ দলটির হাইকমান্ড।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে দেশের বিভিন্ন পৌর এলাকায় যাবেন বেগম জিয়া। কিন্তু সরকার পরোক্ষভাবে চাপ দিচ্ছে, যাতে বেগম জিয়া প্রচারে অংশগ্রহণ করতে না পারেন। এক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হলে পরিণতি শুভ হবে না।’

এদিকে, পৌর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে নামার খবরে ক্ষুব্ধ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এতে করে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না বলে মনে করছে দলটি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিএনপিকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রটোকল নিয়ে বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। অথচ সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। তিনি (খালেদা জিয়া) নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হবে না।’
তথ্যমতে, গত ২৯ নভেম্বর ইসি সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচনে এমপিদের প্রচারের সুযোগ চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেন- নির্বাচনী আচরণবিধিতে সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না বলে যে আইন রয়েছে, সেটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমপিরা যেহেতু নির্বাহী ক্ষমতা রাখেন না, সেহেতু তারা এই নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

এছাড়া পৌরসভা নির্বাচন যেহেতু দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাই এ নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্যদের প্রচারের সুযোগ থাকা উচিত। এটা সংসদ সদস্যের রাজনৈতিক অধিকার। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির এ দাবির ঘোর বিরোধিতা করে বিএনপি। ওইদিনই ইসির সঙ্গে আরেক বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক বলেন, কোনোভাবেই এমপিদের প্রচারের সুযোগ দেওয়া যাবে না, তারা যেন কোনোভাবে প্রভাব খাটাতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। পরদিন ৩০ নভেম্বর ইসির বৈঠকে পৌর নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারের সুযোগ দেওয়ার দাবি নাকচ করে কমিশন। ইসি জানায়, রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী নন- এমন যে কেউ আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। আর এতে আইনি বাধায় আটকে যায় ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্যদের প্রচারে অংশগ্রহণ।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচন যেহেতু দলীয়ভাবে হচ্ছে আর দলীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা প্রচারে অংশ নেওয়া অধিকার। কিন্তু ইসির নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি বাড়তি সুযোগ পাবে, যা নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আশা করি খালেদা জিয়া নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচারে অংশ নেবেন। তবে তাঁর প্রচার কোনো কাজে আসবে না, তাঁর জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির জবাব দেবে পৌর ভোটাররা।’

আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু আজ: তফসিল অনুযায়ী, আজ বুধবার পৌরসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক নিয়ে প্রচার শুরু হবে। যদিও অনানুষ্ঠানিক প্রচার চলছে অনেক আগে থেকেই। বিধিনিষেধ থাকায় আ.লীগ ও জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্যরা অংশ না নিতে পারলেও বিএনপির সব স্তরের নেতারা প্রচারে নামতে পারছেন। মেয়রপ্রার্থী দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রচার করতে পারবেন আজ থেকে।

ইসি সূত্র জানায়, আইনানুযায়ী দল ও প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করা যাবে না, শুধু পথসভা ও ঘরোয়া সভা করতে পারবেন তারা। পথসভা ও ঘরোয়া সভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় জানিয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। নেই মিছিল (শোভাযাত্রা) বের করারও সুযোগ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটের প্রচারের পাশাপাশি বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় নির্ধারিত সংখ্যক মাইকে প্রচার চালানো যাবে। সরকারি সুবিধাভোগী ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ’ প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে দলকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ৬ মাসের জেলসহ প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারবে ইসি।

এদিকে, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু হলেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সরকারদলীয় তিন সংসদ সদস্যকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে সতর্ক করে সংসদ সদস্যদের জনসভা, পথসভা না করতেও নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ৩ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তারিখ ছিল ৫ ও ৬ ডিসেম্বর। প্রচার শুরু আজ ৯ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে ইসি।

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৩:৪১   ২১১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আজকের সকল পত্রিকা’র আরও খবর


নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন হাজী মোহাম্মদ হারিজ খান
সেরে উঠলেন ক্যানসার রোগীরা
আশুলিয়ায় খুশবু রেস্তোরাঁ উদ্বোধন
ধর্মপাশায় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচী
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কূটনীতিকদের আন্তরিক হতে হবে: শেখ হাসিনা
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন

আর্কাইভ