বঙ্গ-নিউজঃ
বহিষ্কারের পর একের পর এক রাজনৈতিক দল গঠন করে চলেছেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ধানের ছড়া নিয়ে ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামে আরেকটি নতুন দলের মালিক হলেন বিএনপি সরকারের সাবেক এই যোগাযোগমন্ত্রী। গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নতুন এই দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবহেলা করায় কেন্দ্রীয় নেতারা আজ বিচ্ছিন্ন। দেশে আজ আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই। সুষ্ঠু গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেই নতুন এই দল গঠন করলাম।’ বিএনপি থেকে বহিষ্কারের পর নাজমুল হুদা প্রথম গঠন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)। গমের ছড়া নিয়ে সে সময় কম বিতর্ক হয়নি। কিছুদিন যাওয়ার পর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেই সে দল বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। তবে যাদের নিয়ে নাজমুল হুদা বিএনএফ গঠন করেছিলেন, তাদের একজন আবুল কালাম আজাদ ওই নামে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন নিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে রাজধানীর একটি আসনে এমপি হয়েছেন। বিএনএফ বিলুপ্তের কয়েক মাসের মাথায় নাজমুল হুদা বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) নামে আরেকটি দল গঠন করেন। সেবারও নিজেই দলটির চেয়ারম্যান হন। সেটিও কাজে না দিলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) নামে একটি জোট গঠন করে সেটিরও চেয়ারম্যান বনে যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এবার শুক্রবার এলো নতুন আরেক দলের ঘোষণা। সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হুদা বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করায় বিএনপি এখন সরকারে কিংবা সংসদে নেই। আর হরতাল অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচিতে ব্যর্থ হয়ে অনেকটা পরাজয়ের গ্লানি নিয়েই দলটি এখন নিষ্ক্রিয় ও নিশ্চিহ্ন প্রায়।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে অস্তিত্বহীন করতে একদলীয় শাসনে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ আগ্রাসী ভূমিকায় রয়েছে। মামলা-হামলা কোনোটি থেকে দলের নেতাকর্মীরা রেহাই পাচ্ছে না। দলের নেতৃত্বে অ-রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব, সিদ্ধান্তহীনতা, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আর বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত কমিটি গঠনে ব্যর্থতায় দলটি আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে।’ মাঠ পর্যায়ে বিএনপির ‘ত্রাহী অবস্থা’ উল্লেখ নাজমুল হুদা বলেন, ‘দল পরিচালিত হচ্ছে উত্তরাধিকার সূত্রে লন্ডন থেকে নির্দেশিত পথে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছিল স্বজন-বিরোধী। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি তার সম্পূর্ণ বিপরীত।’ তিনি দাবি করেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেই নয়, সরকারের মন্ত্রী গঠন এমনকি সেনাবাহিনী প্রধান নিয়োগেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তে নিকট আত্মীয়দের প্রচণ্ড প্রভাব প্রতিফলিত হতে দেখা গেছে।’ দল গঠন সম্পর্কে নাজমুল হুদা বলেন, ‘বিএনপিকে ভাঙার জন্য নয়, দেশে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি ও তৃণমূলে যে অহেলিত নেতাকর্মীরা রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনতে আমার এ উদ্যোগ। আমি চাই দেশে সুষ্ঠু ধারার গণতন্ত্র ফিরে আসুক।’ তিনি আরো জানান, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দল গঠনে সরকার যদি সহযোগিতা করে আমি তা নেব। এছাড়া আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে এ দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।’ আগামী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে কি না জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, মাত্র শুরু করেছি। তবে দলের কেউ যদি স্থানীয় নির্বাচন করতে চান আমার কোনো সমস্য নেই।’ অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আজাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৬:০৬ ২৭১ বার পঠিত