বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে।
আজ সকাল নয়টা ১০ মিনিটে এ শুনানি শুরু হয়।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি চলছে। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রথমে শুনানি করছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
মুজাহিদের রিভিউ শুনানি শেষে একই আপিল বেঞ্চে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর রিভিউ আবেদনেরও শুনানি শুরুর কথা রয়েছে। মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় আবেদনটি ৩ নম্বরে রয়েছে।
গত ১৪ অক্টোবর আপিল বিভাগে পৃথকভাবে রিভিউ আবেদন করেন মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরী। পরদিন আবেদন দু’টির দ্রুত শুনানির দিন ধার্যের আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ২০ অক্টোবর রিভিউ শুনানির দিন ০২ নভেম্বর ধার্য করেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপর রিভিউ শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন জানান মুজাহিদ। অন্যদিকে নিজের পক্ষে কয়েকজন সাফাই সাক্ষীকে সমন জারি করার আবেদন জানান সাকা চৌধুরী।
গত ০২ নভেম্বর কার্যতালিকায় এলেও ১৭ নভেম্বর রিভিউ দু’টির শুনানির দিন ধার্য করেন সর্বোচ্চ আদালত। শুনানি পেছাতে মুজাহিদের আবেদনটি গ্রহণ করে এ দিন ধার্য করা হয়। তবে নিজের পক্ষে কয়েকজন সাফাই সাক্ষীকে সমন জারি করতে সাকা চৌধুরীর আবেদন খারিজ করে দেন।
মুজাহিদের মতোই সাকা চৌধুরীরও প্রধান আইনজীবী হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদন দু’টির শুনানিতে আসামিপক্ষে নেতৃত্ব দেবেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, যিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একজন উপদেষ্টা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আপিল মামলাগুলোর মতোই সাকার রিভিউ আবেদনের শুনানিতেও রাষ্ট্রপক্ষে নেতৃত্ব দেবেন।
মোট ৩৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৩২টি যুক্তি দেখিয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়েছেন মুজাহিদ। রিভিউয়ের পেপারবুক দাখিল করা হয়েছে তিন শতাধিক পৃষ্ঠার।
গত ১৬ জুন আলী একাত্তরের কিলিং স্কোয়ার্ড আলবদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদ ও গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম অঞ্চলের নৃশংসতম মানবতাবিরোধী অপরাধের হোতা সাকা চৌধুরীর আপিল মামলার সংক্ষিপ্তাকারে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ পৃথক পৃথকভাবে এ রায় দেন। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
পরে ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ওই দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। পরদিন ০১ অক্টোবর তাদেরকে আপিল বিভাগের রায় অবহিত করে কারাগার কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে পড়ে শোনানো হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা তাদের মৃত্যু পরোয়ানা।
নিয়ম অনুসারে সে থেকে নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করেন মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরী।
যদি এ রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যায় এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে দু’জনেরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে ফাঁসির রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন, বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়ার সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১১ আগস্ট আপিল করেন মুজাহিদ।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হন মুজাহিদ। পরে ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৫:৫৫ ৩২২ বার পঠিত