বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ লেখক, কলামিস্ট ও রাজনীতিবীদ- অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন
সংস্কৃতি এমন একটি বৈশিষ্ট্যময় শব্দ যার মধ্যে লুকিয়ে আছে, একটি জাতি বা সমাজের বহুদিনের জীবন সংগ্রামের অভিজ্ঞতার ফসল, যা সেই সমাজের নিজস্ব সত্তার পরিচয়। অর্থাৎ একটি সমাজ বিবর্তনের কোন স্তরে অবস্থান করছে, তা সেই জাতির সংস্কৃতির বিকাশের গতি ধারা বিচার বিশ্লেষন করে এই সমাজে অনাগত দিনে সামাজিক, রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক পরিবর্তনে কোন্ দিকে ধাববান তা অনুমান করা যায়। বিভিন্ন সমাজ বিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সংস্কৃতির বিভিন্ন ব্যাখ্যা দান করেছেনে। ভাববাদী ও বাস্তববাদী দার্শনিকদের মধ্যে সাংস্কৃতির ব্যাখ্যার ভিন্নতা সুস্পষ্ট। উভয় শিবিরের চিন্তাবীদদের ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা স্রোতের দিকে আলোক পাত না করে। নৃবিজ্ঞানী জন টেলারের সংস্কৃতির ব্যাখ্যা অধিক প্রনিধান যোগ্য, একটি সমাজের মানুষ জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে গিয়ে যা কিছু সৃষ্টি করেছে সেই গুলির সমষ্টি রুপ হল সেই সমাজের সংস্কৃতি।সংস্কৃতি দুই প্রকার-বস্তৃৃঃগত ও অবস্তুগত। বস্তুগত সংস্কৃতি বলতে মুলত বুঝায়, এই নিষ্ঠুর ও কঠিন পৃথিবীতে অর্থাৎ প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রামে বেচে থাকতে বা প্রয়োজনীয় চাহিদা পুরন করতে মানুষ যে সব বস্তুগত হাতিয়ার বা বস্তু তৈরী করছে, যা মানুষের চলার পথে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে। দৃশ্যত সেইগুলিকেই বস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে গৌন হয়ে থাকে।
অবস্তুগত সংস্কৃতি মানুষের জীবন সংগ্রামে অপরিহার্য না হলেও মানুষের চিন্তা, চেতনা, মনও জগতের বিকাশ, সৃজনশীলতা, অবসর, বিনোদন, সমাজের সভ্যতা, কৃষ্টি, মানবিক গুনাবলী ও রুচিশীলভাবে গড়ে তুলতে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অবস্তুগত সংস্কৃতি বলতে সাহিত্য, কবিতা, নাটক, নাচ-গান ছায়াছবি, সামাজিক মুল্যবোধ, নৈতিকতা ইত্যাদি বুঝায়। একটি সমাজের জাতির সুষ্ঠু সামাজিক কাঠামো নৈতিক মুল্যবোধ উন্নত মানসিকতা, সৃজনশীলতা ,রুচিবোধ, সৌন্দর্যবোধ, সমাজের ঐক্য ও সংহতি গড়ে তুলতে সার্বজনীন স্বাভাবিক ভাবে বিকাশিত অবস্তুগত সংস্কৃতির ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ন। পাশাপাশি অবস্তুগত সংস্কৃতির বিকৃত রুপ এবং সামাজ্র ও সামাজিক সাম্রাজ্যবাদী দেশের অপসংস্কৃতির সম্প্রসারন সমাজ জীবনে ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে সামাজিক মুল্যবোধের অবক্ষয়, যুুব সমাজের মধ্যে অস্থিতিশীলতা, সমাজ কাঠামোর ভাঙ্গন, সমাজের প্রান শক্তি যুব সমাজের চারিত্রিক গুনাবলী ধ্বংস করে তাদের কে সমাজের ধ্বংসকারী অসুরী শক্তি রুপে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বর্তমানে আমাদের সমাজের যুব সমাজের দিকে দৃষ্টি দিলেই তার প্রমান মেলে।
এই জগতের বিচিত্র ধর্মী জাতির মধ্যে যে সংস্কৃতিগত পার্থক্য দেখা যায় তার মুলত কারন ভৌগলিক আবহওয়া, ধর্মীয় ঐতিহ্য, মানসিক ও পরিবেশগত। মানুষ যখন থেকে জৈবিক চাহিদা, দূরঅঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা, ধর্ম প্রচার কিংবা অন্য কোন কারনে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তিরত হতে থাকে, তখন থেকে এক জাতির সংস্কৃতি অন্য জাতির সংস্কৃতির সাথে মিশ্রিত হয়ে যায়। বিশেষ করে বর্তমান শতাব্দীতে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রচার যন্ত্রের অদ্ভূতপূর্ব দ্রুত উন্নতির ফলে সংস্কৃতির মিশ্রন প্রক্রিয়া আরো দ্রুত হয়েছে। অপর দিকে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি ও ভারত যোগাযোগ এবং প্রচার যন্ত্রের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রন করছে। এই সব দেশে তাদের স্বার্থের কারনে তাদের অশ্লীল এবং অপসংস্কৃতির উপাদান গুলি বিশেষ করে ভারত আমাদের দেশে বিস্তার করছে। চলতি শতাব্দীতে কোন জাতি জোর গলায় বলতে পারে না যে তাদের সংস্কৃতি অমিশ্রিত। বিশেষ করে উন্নত সমাজের সংস্কৃতির প্রভাব থেকে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি আজ মুক্ত। প্রয়োজনের তাগিদেই হোক কিংবা প্রচার যন্ত্রের কারনেই হোক এই মিশ্রন প্রক্রিয়া বিশ্বে আবর্তিত হচ্ছে। আমাদের নব্য স্বাধীন দেশটি এর আওতা থেকে মুক্ত নয়। বিশেষ করে পাকিস্তানের কাছ থেকে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার সূচনা লগ্ন থেকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতি যোগাযোগ জাতীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে। ফলে আমাদের দেশের উপর অন্যান্য জাতির সাংস্কৃতিক প্রভাব থেকে মুুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। উন্নত সাংস্কৃতি অনুন্নত সমাজের উপর আধিপত্য বিস্তার করে এটাই স্বাভাবিক। সভ্যতার ইতিহাস এটাই প্রমান করে। এছাড়া চলতি বিশ্বের কালের স্রোত দেওয়া এবং নেওয়া (থধশণ ্র্ টপণ ) । বিশেষ করে আমাদের মত অশিক্ষিত, কুসংস্কারময়, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ে থাকা অনুন্নত দেশটিকে দ্রুত উন্নতির দিকে ধাবিত করতে হলে বাইরের জগতের যা কিছু মঙ্গল ও কল্যানকর তা আমাদের সমাজের উপযোগী করে গড়ে নিতে হবে। তাছাড়া এই সত্যকে কোন্ যুক্তিতে অস্বীকার করব যে, আমাদের শত শত শতাব্দীর কুসংস্কার, অত্যাচার, দাসত্ববোধ, দালালী করার মানসিকতা আমাদের হৃদয়ের চিন্তাধারা প্রসারের গতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। ভারত বর্ষের যুব সমাজকে সনাতন চিন্তধারার গন্ডি থেকে বের করে প্রান সঞ্চার করার জন্য যেসব মনিষী চেষ্টা করেছিলেন তার মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দ অন্যতম। তিনি ভারতের অধঃপতিত যুব সমাজকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ভারতের যুব সম্প্রদায়কে জাপানে যাওয়া উচিৎ। জাপানীদের কাছে ভারত এখনতো সর্বপ্রকার উচ্চ ও মহৎ পদার্থের স্বর্গ রাজ্যস্বরুপ। শুধু জাপান নয়, আমাদের এই সদ্য স্বাধীন দেশের দ্রুত উন্নতির জন্য সমস্ত সভ্য জাতীর মানব কল্যানকর জিনিসের জন্য, আমাদের প্রানহীন এই সমাজের সীমাবদ্ধ চিন্তাধারাকে সম্প্রসারন ও যুক্তিসঙ্গত করে গড়ে তুলে জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধি করে, সমাজ বিকাশকে দ্রুত উন্নত করতে উন্নত বিশ্বের মৌলিক ও প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি অবশ্যই আয়ত্ব করা আমাদের জন্য আমাদের দ্বার খুলে দেয়া অপরিহার্য। এই বাস্তবতা আমরা যত তাড়াতাড়ি মেনে নিতে পারবো ততই আমাদের মলর্মণঢ ধভ থলর্রমর ভাষায় আন্তর্জাতিক ভিক্ষার ঝুড়ি বলে অসম্মানজনক খেতাব দ্বারা ভুুপাতিত দেশটির জন্য কল্যানকর। সংকীর্নতাই মৃত্যু, সম্প্রসারনই জীবন। আধুনিক বিশ্বের যে সব দেশ সভ্যতার চরমে উঠেছে। তাদের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, উন্নত বিশের দেশগুলি জগতের অন্যান্য জাতির বা সমাজের জন্য কল্যানকর বা উন্নতিতে যে উপাদানগুলি সহায়ক, সেইগুলি রপ্ত করে তাদের জ্ঞানের ভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। আমরা আরও দেখতে পাই অনেক উন্নত দেশ অন্যান্য জাতির সংস্কৃতির উন্নত উপাদানগুলি চুরি পর্যন্ত করেছে। তারা আমাদের মত অনুন্নত দেশের মেধাবী ছেলেদের অর্থের বিনিময়ে তাদের সমাজে স্থান করে দিচ্ছে, তাদের সমাজের উন্নতিকে আরও বেগবান করতে। আজ দেখা যাচ্ছে, ভারত আমাদের দেশের মেধাবী যুবকদের তাদের দেশে কাজে লাগানোর জন্য জায়গা করে দিচ্ছে। আজ থেকে শত বৎসর পূর্বে জাপানের (মেইজি) শাসনের আমলে, জাপানকে পৃথিবীর উন্নত আধুনিক রাষ্ট্রের সমপর্যায়ে গড়ে তুলবার উদ্দেশ্যে, তাদের দেশের যুব সমাজের একটা বিরাট অংশকে পাশ্চাত্যদের জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষার লক্ষ্যে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় জাপান আধুনিক সভ্যতার উল্লেখ্যযোগ্য কোন কিছু সৃষ্টি না করেও এই পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞান রপ্ত করে, ঐ পাশ্চাত্যসভ্যতাকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আমাদের শত সহস্র বৎসরের গোড়ামী, অন্ধত্ব, কুসংস্কার ও দালালী মানসীকতার সংকীর্ন বৃত্তের মধ্যে পথ হারা নক্ষত্রের মত লক্ষ্যহীন ভাবে ঘুরপাক খাচ্ছি। অপর দিকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ তাদের সমাজের প্রতিটি দিকে উন্নতির জন্য প্রতিযোগীতায় রত, সুতরাং যতদিন না আমারা আমাদের গন্ডি অতিক্রম করে স্প্রসারিত হতে না পারছি, ততদিন আমাদের অচল, স্তব্ধ জাতির হৃদয়ের গতির সৃষ্টি হবে না। আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক জগত স্থবীর, কুয়াশাচ্ছন্ন ঘোলাটে অবস্থার মধ্যে বিরাজমান। এর প্রকৃত ভিত্তি অনুসন্ধান করতে হলে, আমাদের এই উপমহাদেশের সম্রাজ্যবাদী শক্তির শাসনের কিছু অতীত ইতহাসের বিচার বিশ্লেষনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ভারতবর্ষ একটি বিচিত্রময়ধর্মী উপমহাদেশ। পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির রক্তের সমন্বয়ে বিভিন্ন ভাষা, নানা বর্ন, একাধীক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বসবাস এই উপমহাদেশে। ভৌগলিক আবহওয়া ও সাংস্কৃতিকগত পার্তক্যের কারনে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভাষা, চিন্তা, চেতনা, আচার-ব্যবহার ও সংস্কৃতিগত নিজস্ববৈশিষ্ট্য নিয়ে আপন মহিমায় দন্ডায়মান। ইংরেজদের আগমনের বহুপূর্ব থেকেই এই সংস্কৃতি যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিলো, এই উপমহাদেশের বিচিত্রধর্মী সংস্কৃতি ও নানারকম সম্পদের মোহ, বৃটিশদের এই উপমহাদেশে আগমনের অন্যতম কারন। সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশরা দখলদারীর সাথে সাথে দখলদারীরর স্বার্থের কারনে অন্যান্য অঞ্চলের মত এই অঞ্চলের সংস্কৃতির নিজস্ব গতি রুদ্ধ করার ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছিল। আধুনিক রাষ্ট্র ও সমাজ বিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলী বলেছেন ‘‘জাতীয় সীমানার বাইরে অপর কোন জাতি দখলের পরে যদি দেখা যায়, সে জাতির মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ এবং ধর্মীয় মুল্যবোধ প্রবল, যার কারনে সামরিক ভাবে দখলদারী প্রতিষ্ঠা করা কষ্টসাধ্য। তা হলে দখলদারী দেশে একটা দালাল শ্রেনী সৃষ্টি করতে হবে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে তারা দখলদারী দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। সেই সাথে দখলদারী ও আধিপত্য চিরস্থায়ী করতে সেই সমাজের সংস্কৃতি লাইব্রেরী ধ্বংস করে, দখলদারী সমাজের সংস্কৃতি চালু করতে হবে।’’ ইংরেজরা এই শিক্ষা অনুসরন করে, এই উপমহাদেশের সংস্কৃতি জগত ধংস করে, তাদের সংস্কৃতির প্রভাব বিস্তার করার উদ্দেশ্য নিয়ে ইংরেজী শিক্ষার প্রবর্তন করেছিল। আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের বাহন ইংরেজী শিক্ষার যে প্রয়োজন ছিলো সেটা আমরা অস্বীকার করিনা। আমাদের বক্তব্য তাদের এই শিক্ষা দেবার পিছনে যে কৌটিল ষড়যন্ত্র ছিলো সেটাই তুলে ধরা। তারা এই শিক্ষার মাধ্যমে এই উপমহাদেশের এমন একটি মনস্তাত্বিক সহায়ক শ্রেনী সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, যারা শ্রেনীগত সুযোগ সুবিধা ও নিজেদের গোষ্ঠিগত স্বার্থের কারনেই বৃটিশ শাসনকে এই উপমহাদেশে টিকিয়ে রাখতে ইংরেজ দখলদারদের পাশে এসে দাড়াবে। এই উপমহাদেশে ইংরেজ শিক্ষা দেবার অন্তরালে তাদের যে অভিসন্ধী ছিল, তা ছবির মত পরিস্কার হয়ে উঠে। ভারতবর্ষে ইংরেজী শিক্ষা প্রবর্তন নিয়ে বৃটিশ পার্লামেন্ট এমপিদের বক্তব্যের মাধ্যমে তার ইঙ্গিত রেখেছিলেন বিশেষ করে স্কটল্যান্ডের সদস্য জন মিল, এই উপমহাদেশের ইংরেজী শিক্ষা দেবার পেছনে শুধু উকালতিই করেন নাই। তিনি এই উপমহাদেশের এমন পক্রিয়ায় ইংরেজী শিক্ষা দেবার সুপারিশ করেছিলেন যে, জন্মে, বর্ণে ভারতীয় হবে, কিন্তু চিন্তা ধারায় হবে ইংরেজ। ইংরেজী শিক্ষা দেবার পিছনে তাদের যে অশুভ চিন্তাধারা ক্রিয়াশীল ছিল, পরবর্তী সময়ে তাদের চিন্দা ধারা বহুলাংশে সফল হয়েছিল। ইংরেজদের সঙ্গে এই দেশের যে চাটুকার ও দালাল শ্রেনী ঘনিষ্টভাবে জড়িত ছিল। মুলত তাদেরই একটা বিরাট সংখ্যক সদস্য এই ইংরেজী শিক্ষার আওতায় এসেছে। এদের অধিকাংশই পরবর্তিতে বৃটিশ বিরোধী যে সব জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম হয়েছিল এরা নির্লজ্জভাবে জাতীয় ষ¦ার্থকে উপক্ষো করে বৃটিশদের পক্ষ অবলম্বন করেছিল। তৎকালীন জমিদার সংঘের সভাপতি নির্লজ্জভাবে ঘোষনা করেছিলেন, জমিদারের শ্রেনী স্বার্থের কারনে এই ভারতবর্ষ ইংরেজ রাজত্বটিকিয়ে রাখার প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তবে এরা সমাজের মোট জনসংখ্যার তুলনায় খুবই নগন্য ছিল। এরা সাধারনত দেশের বৃহত্তম জনগনের সঙ্গে সম্পর্কহীন ছিল। এরা নিজেদের শ্রেনীদের একটা আলাদা সতন্ত্র সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল । যা অনেকেই বাবু সংস্কৃতি বলে অভিহিত করে থাকেন। তবুও এর পাশাপাশি সমাজের উপযোগী কল্যানকর, স্বাধীন চিন্তাধারা দ্বারা পরিচালিত সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। কিন্তু তার গতি ছিল খুবই মন্থর। একদিকে অর্থের সংকট অপরদিকে বৃটিশ নিরাপত্তা বাহিনীও তাদের এই দেশীয় দালালদের অত্যাচার নির্যাতনের ফলে এই সব জাতীয়তাবাদী চিন্তাবিদ ও লেখকদের কলমের গতি অনেকটা মন্থর হয়ে পড়েছিল। তাই বলে তাদের কলমের লিখনকে একেবারেই থামিয়ে দিতে সক্ষম হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৯:২২ ৯৭৫ বার পঠিত