বঙ্গনিউজ ডটকমঃ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটও পাঠায়নি তাদের মেয়েদের দল। সর্বশেষ পশ্চিমা নাগরিকদের জন্য যুক্তরাজ্যের দেওয়া সতর্কবার্তা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য আরও জটিল করে তুলতে পারে পরিস্থিতি। ভারতের দৈনিক মুম্বাই মিরর তো এমন খবরও দিয়েছে, এসব কারণে হুমকির মধ্যেই পড়ে যেতে পারে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন। আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ১৬ দলের এই টুর্নামেন্ট।
দুবাইয়ে গত পরশু থেকে আইসিসির পাঁচ দিনব্যাপী সভা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন প্রধান নির্বাহীদের সভা শেষে কাল হয়েছে এফটিপি ও গভর্নেন্স কমিটির সভা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচালনা পর্ষদের সভাটি হবে কাল ও পরশু। মুম্বাই মিরর-এর বক্তব্য, এই সভায় আইসিসির নীতিনির্ধারকেরা নিরাপত্তার হুমকির কারণে বাংলাদেশ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়া নিয়ে আলোচনা তুলতে পারেন। সম্ভাব্য বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথাও লিখেছে দৈনিকটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক পরিচালক জানিয়েছেন, পরশু আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সভায় বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সরে গেলে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা সেটি আয়োজন করতে চায়। তবে ওই পরিচালকের দাবি, ‘ভারত, পাকিস্তানের বোর্ড বাংলাদেশকে সমর্থন দিচ্ছে। যত দূর শুনেছি অন্য যেসব বোর্ড আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারত, ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদেরও পক্ষে আনা গেছে।’ আশার বাণী শোনালেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুসও, ‘নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। তার মানে এই নয় যে এখান থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চলে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী আইসিসির সভায় সবকিছুই আমাদের পক্ষেই আসবে।’
এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারতেন দুবাইয়ে প্রধান নির্বাহীদের সভায় উপস্থিত থাকা বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি তাঁকে। তবে পরিচালনা পর্ষদের সভায় যোগ দিতে যাওয়া বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে কাল-পরশুর বোর্ড সভায়। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মহিলা দলের স্থগিত সফর প্রসঙ্গেও আলোচনা হবে। নাজমুল হাসানের ভাষায়, ‘এখনই এসব বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। পরশু (কাল) সকালের মধ্যে হয়তো একটা ধারণা দিতে পারব।’
বিসিবি সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দুবাইয়ে বিভিন্ন বোর্ডের সঙ্গে কিছু দ্বিপাক্ষিক সভাও করছেন। জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট বোর্ড তার মধ্যে অন্যতম। জিম্বাবুয়ে বোর্ডের সঙ্গে কথাবার্তায় নভেম্বরে তাদের বাংলাদেশ সফরই মুখ্য বিষয়। এখন পর্যন্ত যা আলোচনা তাতে নভেম্বরে দুটি টেস্ট হয়ে জানুয়ারিতে হওয়ার কথা সিরিজের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অংশ। তবে আগে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলে জানুয়ারিতে টেস্ট খেলা যায় কি না সেটাও আলোচনায় আছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও এই সিরিজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। বিসিবিরই এক কর্মকর্তা জানালেন, ‘নভেম্বরের ফাঁকা সময়ে একটা তিন জাতি সিরিজ হতে পারে। এ নিয়ে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’ বিসিবি সভাপতির কথায়ও একই আভাস, ‘এ রকম একটা আলোচনা চলছে। আমরা দুই বোর্ডের সঙ্গেই কথা বলছি।’
এফটিপির সভায় বাংলাদেশ দলের জন্য আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ চাইবেন, দেশ থেকে এমন কথাই বলে গেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। কালকের সভায় সেই দাবি তিনি তুলেছেনও। ‘আমরা প্রেজেন্টেশন দিয়ে দেখিয়েছি বাংলাদেশের ক্রিকেটের টিআরপি কত বেশি। রেটিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে গত এক বছরে আমাদের ক্রিকেটের মূল্য কতটা বেড়েছে, সেটা দেখানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি বেশি খেলা দাবি করেছি। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ক্রিকেট কতটা জনপ্রিয়, সেসবও তুলে ধরেছি’-মুঠোফোনে বলেছেন বোর্ড সভাপতি। আইসিসির অন্যান্য সদস্যদেশের প্রতিনিধিদের দেওয়া বক্তব্যেও নাকি উঠে এসেছে মাঠ এবং মাঠের বাইরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অগ্রগতির কথা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০০:০৮ ৩৩৪ বার পঠিত