বঙ্গনিউজ ডটকমঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁর লন্ডন সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার একান্ত পারিবারিকভাবে কাটিয়েছেন। তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। দীর্ঘ আট বছর পর পরিবারের সবাইকে কাছে পেয়ে তিনি বেশ আনন্দিত।
খালেদা জিয়া গত বুধবার সকালে ব্রিটেনে পৌঁছে লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেছেন। বাস্তবিক লন্ডন সফরের প্রথম দুই দিনই তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটিয়েছেন। এ সময় তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি কিংবা দলের কোনো নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। গতকাল তিনি বাসা থেকে বেরও হননি। তবে বিকেলের দিকে ছেলের বাসায়ই দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। বিএনপিপ্রধান আজ-কালের মধ্যেই চোখের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তাঁর চিকিৎসার বিষয়টি দেখভাল করছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।
বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার একাধিক নেতা বলেন, প্রায় দীর্ঘ আট বছর পর খালেদা জিয়া তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে একসঙ্গে কাছে পেয়েছেন। এর মধ্যে আছে ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের শূন্যতা। সব মিলিয়ে এটা এক আবেগঘন পারিবারিক মিলন। তবে তিনি আপনজনদের কাছে পেয়ে বেশ আনন্দিত। তাঁরা জানান, খালেদা জিয়া প্রায় দুই সপ্তাহ লন্ডনে থাকতে পারেন। তাই রাজনৈতিক কোনো বিষয়ে তাড়াহুড়া করা হচ্ছে না। তবে খালেদা জিয়ার এই সফরে দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন।
এদিকে বিএনপির প্রধানের লন্ডনে অবস্থান ও সফরসূচি নিয়ে বেশ গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। পশ্চিম লন্ডনের একটি হোটেলে তাঁর বুকিংও রয়েছে। তবে তিনি তারেক রহমানের বাসা ও হোটেল মিলিয়েই অবস্থান করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য মুশফিকুল ফজল আনসারী লন্ডন থেকে সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন পর পরিবারের একান্তজনদের একসঙ্গে পেয়েছেন। আর সে সুবাদে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন। স্বভাবতই এ সময়টা পুরো পরিবারের কাটছে পারস্পরিক সুখ-দুঃখ ও আবেগ-অনুভূতি ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে।
জানা গেছে, খালেদা জিয়া সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন এমপির সঙ্গে বৈঠক করবেন। দলের সিনিয়র বেশ কিছু নেতাও লন্ডনে পাড়ি দিয়েছেন। তাঁরাও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করবেন। মামলার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দলের অনেক নেতাই লন্ডনে আসতে পারেননি। তবে এই সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের কারো সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ হবে কি না সে বিষয়টি অবশ্য কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের এই সফরে সাংগঠনিক বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। বিশেষ করে দল পুনর্গঠন, অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটি গঠন ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার বিষয়গুলোতে জোর দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে যান। সেই থেকে স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি লন্ডনেই অবস্থান করছেন। খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে তাঁর প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী শর্মিলা রহমান দুই মেয়ে জাফিয়া ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে কয়েক দিন আগেই লন্ডনে চলে আসেন। দীর্ঘ আট বছর পর খালেদা জিয়া পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এবার লন্ডনেই ঈদ উদ্যাপন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪২:৫০ ২৯৯ বার পঠিত