বঙ্গনিউজ ডটকমঃপূর্ণিমা ছবি: সুমন ইউসুফ: দুই বছর আপনার কোনো খবর নেই।
: (হাসি) আমি আছি তো!
: কী করেছেন?
: স্বামী, মেয়ে, সংসার এসব নিয়েই আছি। কোথা দিয়ে যে দিন কেটে যায়, টেরই পাই না।
: অভিনয়?
: অভিনয়ও করছি। অনেক দিন পর। দুটি নাটক। আরিফ খানের আমার বেলা যে যায় আর তুহিন হোসেনের প্রেম অথবা দুঃস্বপ্নের রাত। প্রথমটিতে অভিনয় করেছি মাহফুজ আহমেদ আর দ্বিতীয়টিতে মোশাররফ করিম ও ইরেশ যাকেরের সঙ্গে।
কথা হচ্ছে নায়িকা পূর্ণিমার সঙ্গে। সর্বশেষ তিনি অভিনয় করেছেন নুজহাত আলভি আহমেদের একটি নাটকে। ২০১৩ সালে। এরপর পুরো দুই বছর কোনো কাজ করেননি তিনি। জানালেন, তাঁর মেয়ে আরশিয়ার বয়স এখন দেড় বছর। মেয়ের জন্যই এতটা সময় কাজ থেকে দূরে ছিলেন।
পূর্ণিমার সঙ্গে দেখা হেলা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। রোববার বিকেলে ছবি তোলার জায়গা চূড়ান্ত করলেন পূর্ণিমা নিজেই। সেখানে ৩০০ ফুট রাস্তার পাশে কোথাও, ছবি তোলার ফাঁকেই কথা বলা।
পূর্ণিমার গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে, পেছনে মোটরসাইকেলে এই প্রতিবেদক আর আলোকচিত্রী। গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বের করে মোটরসাইকেল দেখছে আরশিয়া। হাত নাড়ছে। মায়ের সঙ্গে বাইরে বেড়াতে এসে দারুণ খুশি।
ছবি তোলা হচ্ছে। হাতে সময় খুব অল্প। মেয়েকে নিয়ে সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরতে চান পূর্ণিমা।
: আপনি তো নিকুঞ্জে ছিলেন। বসুন্ধরায় কবে এলেন?
: মাস দুয়েক হলো। নিকুঞ্জে বাসার সংস্কারকাজ হচ্ছে। তাই এখানে এসেছি। আরও মাস ছয়েক থাকতে হবে। কাজ শেষ হলে আবার ফিরে যাব। আর এখানে আমার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছেন। যেহেতু কাজ করছি, তাই মেয়েকে আত্মীয়ের বাসায় রেখে যাই। খুব সুবিধা হচ্ছে।
পূর্ণিমা চলচ্চিত্রের নায়িকা। কিন্তু এখন কাজ করছেন নাটকে। চলচ্চিত্রে আবার কবে দেখা যাবে? পূর্ণিমার মুখে হাসি। বললেন, ‘আমি কিন্তু অনেক আগে থেকেই নাটক করছি। চলচ্চিত্রের ফাঁকেই। যখন চলচ্চিত্রে খুব ব্যস্ত ছিলাম, তখন ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছি। চলচ্চিত্রের জন্য অনেক সময় লাগে। আমার মেয়ে যেহেতু খুব ছোট, তাই চলচ্চিত্রে কাজ করা একটু কঠিন। নাটকে অল্প সময় লাগে। তাতে মেয়ের তেমন অসুবিধা হয় না।’
চলচ্চিত্রে এখনই কাজ করতে চান না পূর্ণিমা। একমাত্র কারণ আরশিয়া। মেয়ে একটু বড় হওয়ার পর তবেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
আর এবার নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে বললেন, ‘অনেক দিন থেকেই কাজ শুরু করার কথা ভাবছি। অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ তো ছিলই। আমি একটা ভালো কাজ দিয়ে ফিরতে চেয়েছি। এবার সেই সুযোগ পেয়ে গেলাম। আমার বেলা যে যায় নাটকে আফজাল হোসেন আর সুবর্ণা মুস্তাফাও অভিনয় করেছেন। তাঁরা যখন অভিনয় করেন, কথা বলেন, আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি।’
নাটক আর চলচ্চিত্র, দুটো কাজই সহজ মনে করেন পূর্ণিমা। কারণ দুই জায়গাতেই তাঁকে অভিনয় করতে হচ্ছে। তবে আলাদা করে গুরুত্ব দিলেন চলচ্চিত্রকে। কারণ এর বাজেট এবং আয়োজন অনেক বড়।
পূর্ণিমা কতটুকু সময় অবসর পান? ‘একদমই না। বাচ্চার মা কোনো অবসর পান না। পুরোটা সময়ই বাচ্চাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আর এই সময়ে আমার ওজন বেড়ে যায়। যখন কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই, তখন থেকে স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে উঠি। খাবার নিয়ন্ত্রণ করছি। নিয়মিত ব্যায়াম করছি। অবসর কোথায়?’ বললেন পূর্ণিমা।
রাঁধুনী পূর্ণিমার খবর কজন জানেন? পূর্ণিমা কিন্তু বাসায় নিয়মিত রান্না করেন। মাংস আর খিচুড়ি রান্না খুব সহজ মনে করেন। আর তাঁর হাতে তৈরি এই খাবার নাকি বাসার সবার দারুণ পছন্দ। এদিকে ফেসবুকে প্রায়ই নিজের রান্না করা খাবারের ছবি দেন পূর্ণিমা। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘যে রান্নাগুলো দেখতে সুন্দর হয়, সেগুলোর ছবি ফেসবুকে দিই। জীবনে একবার পিৎজা তৈরি করেছিলাম। সেই ছবি দেওয়ার পর তা নিয়ে সে কী হইচই।’
এখন গল্প লিখছেন পূর্ণিমা। জানালেন, গত দুই বছরে তিনি টিভিতে অনেক কাজ দেখেছেন। বেশির ভাগ কাজ দেখেই হতাশ হয়েছেন তিনি। এর বড় কারণ মনে হয়েছে কাহিনির সংকট। এরপর নিজেই গল্প লিখছেন। সামনে এগুলো নিয়ে কেউ যদি নাটক তৈরির জন্য আগ্রহী হন, তাতে খুশি হবেন পূর্ণিমা।
এদিকে কারওয়ান বাজারে তখন ঝুম বৃষ্টি। বারবার ফোন বাজছে। অফিস থেকে ফোন। কারওয়ান বাজারের মেঘ তখনো বসুন্ধরায় এসে পৌঁছায়নি। ছবি তোলা শেষ। পূর্ণিমার সঙ্গে মেয়ে আরশিয়া। তাই পূর্ণিমার গল্প এখানে থামাতে হলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৫:৫৪ ৩৪৮ বার পঠিত