বঙ্গনিউজ ডটকমঃ আগামী মাসেই চিলির বিপক্ষে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। সে ম্যাচে নেইমারকে পাচ্ছে না ব্রাজিল। গত জুনে কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতায় মাঠে গোল বাধিয়ে নিষেধাজ্ঞা মাথায় নেওয়া এই তরুণ তারকার জন্য আফসোস করতেই পারেন কোচ কার্লোস দুঙ্গা। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই নিজেকে যেন কাল নতুন করে চেনালেন নেইমার। জোড়া গোলে ব্রাজিলকে এনে দিয়েছেন এক বড় জয়; প্রথম একাদশে নিজের গুরুত্ব আর প্রয়োজনীয়তাও কোচকে বুঝিয়ে দিয়েছেন বেশ ভালোভাবেই।
ফক্সবোরোর জিলেট স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ব্রাজিলের ৪-১ গোলে জয়ে অবদান নতুন করে দলে ফেরা হাল্কেরও। ব্রাজিলের পক্ষে অপর গোলটি এসেছে রাফিনহার পা থেকে।
নিজেদের মাঠে যুক্তরাষ্ট্রের এই হার কোচ ইয়ূর্গেন ক্লিন্সম্যানের অধীনে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারগুলোর একটি। এর আগে ২০১২ সালে এই ব্রাজিলের কাছেই যুক্তরাষ্ট্র হেরেছিল ৪-১ গোলে। ২০১৪ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও একটি ম্যাচে ৪-১ গোলে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একমাত্র গোলটি আসে ড্যানি উইলিয়ামসনের কাছ থেকে, ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে।
ব্রাজিলের বিপক্ষে কাল ক্লিন্সম্যান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে চেয়েছিলেন। পরিবর্তিত ফরমেশনে মাঠে নেমে সমর্থকদের একটু চমকেও দেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষাটা যে কত বড় ভুল ছিল, সেটা মাঠেই প্রমাণ করে ছাড়ে ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা। ম্যাচের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়েরা খেই হারিয়ে বসেছিলেন। ব্রাজিলীয়রা উল্টো উজ্জীবিত নৈপুণ্যে পুরো খেলাতেই চাপে রাখে ক্লিন্সম্যানের দলকে। চাপ শেষ অবধি বজায় রেখে বড় ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
খেলার প্রথম গোলটি আসে ৯ মিনিটে। চেলসি-তারকা উইলিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের দুজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দারুণ এক ক্রস ফেলে বক্সের মধ্যে। গোলরক্ষক ব্র্যাড গুজান বলটি লুফতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা হাত থেকে বেরিয়ে সোজা হাল্কের পায়ে গিয়ে পড়লে তিনি তা গোলে পরিণত করতে কোনো ভুল করেননি।
গোল খেয়ে পিছিয়ে যাওয়ার পর প্রথমার্ধে একটিই বলার মতো আক্রমণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। ইয়েদিনের একটি চমৎকার ক্রস থেকে জোজি অ্যালটিডোরের শট বাধাপ্রাপ্ত হয় ব্রাজিলীয় রক্ষণে।
‘পরিবর্তিত ফরমেশন’ পরিবর্তন করতে বেশি সময় নেননি ক্লিন্সম্যান। কিন্তু ততক্ষণে খেলার পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে ব্রাজিলের কাছে। আগের ফরমেশনে ফিরেও প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে গোল খেতে খেতে বেঁচে যায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্সেলোর একটা কোনাকুনি শট দারুণভাবেই ফিরিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের গোলরক্ষক গুজান।
বিরতির সময় একাদশে ঢোকেন নেইমার। তাঁর উপস্থিতি যেন নতুন অস্ত্রের শক্তি জোগায় দুঙ্গার দলকে। মাঠে নেমেই পেনাল্টি আদায় করে নেন তিনি। ডেভিড লুইজের একটি পাস থেকে বল পেয়ে নিজেই ডান দিক দিয়ে এক পা-দু পা করে ঢুকে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায়। গোলের খুব কাছাকাছি থাকা নেইমারকে প্রাণপণ বাধা দিতে গিয়েই ভুলটা করে বসেন জিওফ ক্যামেরন। প্রাপ্ত পেনাল্টিটি দারুণভাবেই কাজে লাগিয়ে নেইমার পেয়ে যান তাঁর ৪৫ তম আন্তর্জাতিক গোল। খেলার ৬৪ মিনিটে ম্যাচের স্কোরলাইন ৩-০ বানিয়ে দেন রাফিনহা। লুকাস মউরার দুর্দান্ত এক পাস নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তিনি পরাস্ত করেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে। ৬৭ মিনিটে ওই মউরাই নেইমারকে বানিয়ে দেন তাঁর দ্বিতীয় গোল। ৭০ মিনিটে স্কোর লাইন ৫-০ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু রাফিনহা এলোমেলো শট নিয়ে নষ্ট করেন মোটামুটি নিশ্চিত এক গোলের সুযোগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪১:১৫ ৩২৪ বার পঠিত