বঙ্গনিউজ ডটকমঃ
১৪২. অনুজ্ঞা কী?
উত্তর : আদেশ, অনুরোধ, অনুমতি, প্রার্থনা প্রভৃতি অর্থে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কালে মধ্যম পুরুষের ক্রিয়াপদের যে রূপ গঠিত তাকে অনুজ্ঞা বলে।
১৪৩. ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞায় কোন পুরুষ ব্যবহৃত হয় না?
উত্তর : উত্তম পুরুষ।
১৪৪. ‘রোগ হলে ঔষধ খাবে’ কোন অর্থে ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা?
উত্তর : বিধান অর্থে।
কারক, বিভক্তি, সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদ
১৪৫. ‘কারক’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর : যা ক্রিয়া সম্পাদন করে।
১৪৬. কারক কাকে বলে?
উত্তর : বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সাথে নাম পদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে।
১৪৭. কারক কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : কারক ছয় প্রকার- ১. কর্তৃ কারক, ২. কর্ম কারক, ৩. করণ কারক, ৪. সম্প্রদান কারক, ৫. অপাদান কারক ও ৬. অধিকরণ কারক।
১৪৮. কর্তৃ কারক কাকে বলে?
উত্তর : বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তা ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃ কারক। যেমন- আমার যাওয়া হবে না।
১৪৯. কর্ম কারক কাকে বলে?
উত্তর : যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্ম কারক বলে।যেমন-জিজ্ঞাসিবে জনে জনে।
১৫০. করণ কারক কাকে বলে?
উত্তর : ‘করণ’ শব্দটির অর্থ যন্ত্র, সহায়ক বা উপায়। ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়। যেমন- ফুলে ফুলে ঘর ভরেছে।
১৫১. সম্প্রদান কারক কাকে বলে?
উত্তর : যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। মনে রাখতে হবে, বস্তু নয় ব্যক্তিই সম্প্রদান কারক। যেমন- অন্ধ জনে দেহ আলো।
১৫২. অপাদান কারক কাকে বলে?
উত্তর : যা থেকে কিছু বিচ্যুৎ, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে। যেমন- বোঁটা আলগা ফল গাছে থাকে না।
১৫৩. অধিকরণ কারক কাকে বলে?
উত্তর : ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধারকে অধিকরণ কারক বলে। যেমন এ দেহে প্রাণ নেই।
১৫৪. সম্বন্ধ পদ কাকে বলে?
উত্তর : ক্রিয়া পদের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে যে নাম পদ বাক্যস্থিত অন্যপদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়, তাকে সম্বন্ধ পদ বলে। যেমন-রহিমের ভাই করিম গতকাল এসেছিল।
১৫৫. সম্বোধন পদ কাকে বলে?
উত্তর : ‘সম্বোধন’ শব্দের অর্থ কাউকে ডাকা বা আহ্বান করা। যে পদ দ্বারা কাউকে ডাকা বা আহ্বান করা বোঝায় তাই সম্বোধন পদ। যেমন- ওহে মাঝি, নৌকা ভিড়াও।
প্রশ্ন : সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন কারক নয় কেন?
উত্তর : ক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পর্ক রাখে না বলে।
কারক ও বিভক্তি নির্ণয়
সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দিব কোথা? -কর্ম কারকে শূন্য বিভক্তি।
ঘোড়াকে চাবুক মার। -করণ কারকে শূন্য বিভক্তি।
আকাশে তো রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
এ সাবানে কাপড় কাচা চলবে না। -করণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
আলোয় অাঁধার দূর হয়। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
কান্নায় শোক কমে। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
বাদলের ধারা ঝরে ঝর ঝর। -অপাদান কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি।
জমি থেকে বাড়ি দেখা যায়। -অধিকরণ কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।
পলাতক দাসে দাও স্বাধীনতা। -সম্প্রদান কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
ফেরদৌসী কর্তৃক ‘শাহনামা’ রচিত হয়েছে। -কর্তৃ কারকে তৃতীয়া বিভক্তি।
গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল। -কর্তৃকারকে তৃতীয়া বিভক্তি।
ডাক্তার ডাক।- কর্ম কারকে শূন্য বিভক্তি।
জিজ্ঞাসিবে জনে জনে। -কর্ম কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
এত শঠতা, এত যে ব্যথা, তবু যেন তা মধুতে মাখা। -করণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
লোকটা জাতিতে বৈষ্ণব। -করণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
অন্ধজনে দেহ আলো। -সম্প্রদান কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
সমিতিতে চাঁদা দাও। -সম্প্রদান কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে।
-অপাদান কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।
দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে। -অপাদান কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।
মনেপড়ে সেই জ্যৈষ্ঠের দুপুরে পাঠশালা পলায়ন। -অপাদান কারকে শূন্য বিভক্তি।
বাবাকে বড্ড ভয় পাই। -অপাদান কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি।
যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যে হয়। -অপাদান কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি।
ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও। -কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
দুয়ারে দাঁড়ায়ে প্রার্থী, ভিক্ষা দেহ তারে। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী।
আমাদের সেনারা সাহসে দুর্জয়, যুদ্ধে অপরাজেয়। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
বাড়ি থেকে নদী দেখা যায়। -অধিকরণ কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।
খিলিপান দিয়ে ঔষধ খাবে। -অধিকরণ কারকে তৃতীয়া বিভক্তি।
এ অধীনে দায়িত্ব ভার অর্পণ করুন। -কর্মকারকে সপ্তমী বিভক্তি।
আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে? -অপাদান কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
আজকে তোমায় দেখতে এলাম জগৎ আলো নূর জাহান। -অধিকরণ কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি।
ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাটিয়া চলিল। -অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
দেবতার ধন কে যায় ফিরায়ে ঘরে। -সম্প্রদান কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি।
পরাজয়ে ডরে না বীর। -অপাদান কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি। [চলবে]
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩১:২০ ১৩৭১ বার পঠিত