পঁচাত্তরের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে বলে দলীয় নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, তিনি এসবের পরোয়া না করে লক্ষ্যে অবিচল রয়েছেন।
বঙ্গনিউজ ডটকমঃ“যত ষড়যন্ত্র, যাই হোক না কেন, সেগুলো আমি পরোয়া করি না।… আল্লাহ জীবন দেওয়ার মালিক, আল্লাহ জীবন নেওয়ার মালিক। আল্লাহ ছাড়া আমি কারও কাছে মাথা নত করি না, করবও না।”
-
পঁচাত্তরের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে বলে দলীয় নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, তিনি এসবের পরোয়া না করে লক্ষ্যে অবিচল রয়েছেন।
বঙ্গনিউজ ডটকমঃ“যত ষড়যন্ত্র, যাই হোক না কেন, সেগুলো আমি পরোয়া করি না।… আল্লাহ জীবন দেওয়ার মালিক, আল্লাহ জীবন নেওয়ার মালিক। আল্লাহ ছাড়া আমি কারও কাছে মাথা নত করি না, করবও না।”
১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয়। জাতির জনককে হত্যার দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়।
এবার জাতীয় শোক দিবসের আগে-পরে কয়েকটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে।
বর্তমান সরকার আর দুই মাস ক্ষমতায় থাকতে পারবে বলে সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্তব্য করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর ছাপা হয়েছে। একে ষড়যন্ত্র বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তার সরকার কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
এজন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে নিজে প্রস্তুত, বলেন পঁচাত্তরের এক রাতে বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সবাইকে হারানো শেখ হাসিনা।
“বাঙালি জাতির ভাগ্য আমাদের পরিবর্তন করতেই হবে। যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আমি সব সময় প্রস্তুত।”
পঁচাত্তর পরবর্তী প্রতিটি সময়ে আওয়ামী লীগকর্মীদের সাহসী ভূমিকার কথা তুলে ধরে দেশের প্রাচীন এই দলটির উপর নিজের ভরসার কথাও প্রকাশ করেন তিনি।
“আওয়ামী লীগের কর্মীরা কখনোই ভুল করে না। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়, পাশে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যায়।”
১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বাইরে ছিলেন।
সে সময়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “একদিনের মধ্যে আমরা নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে গেলাম। কোথায় যাব? আমার বাবা তো চুরি করে টাকা রেখে যায়নি।
“আমরা অসহায় ছিলাম। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী (ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিলেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “অনেক অসুবিধায় ছিলাম। কিন্তু, কোনোদিন কারও কাছে মাথা নত করি নাই।”
১৯৮১ সালের ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগ প্রধান হিসাবে বাংলাদেশে ফিরে এলেও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অনুমতি না দেওয়ায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসভবনে ঢুকতে না পারার কথাও বলেন তিনি।
“রাস্তায় বসেই বাবা-মা’র জন্য দোয়া চাইতে হয়েছিল।”
স্বাধীন দেশে জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনিদের পুনর্বাসন ও রক্ষায় প্রক্রিয়ার কথাও আসে শেখ হাসিনার বক্তব্যে।
“রশিদ আর পাশাকে নিয়ে দল গঠন করে ইত্তেফাকের মইনুল হোসেন। এরশাদ ফারুক আর রশিদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সুযোগ দেয়।”
ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন) কোনো রাজনৈতিক দল অংশ না নিলেও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীকে বিরোধীদলীয় নেতা বানিয়ে সংসদ গঠন করেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
“অবাক লাগে খুনিদের নামের আগে বিশেষণ দিয়ে বাহবা দিয়েছিল অনেকে।”
জাতির জনক হত্যার দিনে জন্মদিন পালন করায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, “এতদিন কেক কেটেছেন প্রথম প্রহরে। এখন কেটেছেন শেষ প্রহরে। উনার শেষ প্রহর চলে এসেছে।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বর্তমান অবস্থা নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের’ তৎপরতার সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
তিনি বলেন, “আপনারা কারা? আপনারা কার প্রতিনিধিত্ব করেন? আপনারা কোথায় ছিলেন, যখন ৭৫-এর পর সামরিক সংবিধান ছিল? তখন তো কোনো কথা বলেন নাই?”
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫২:১৫ ৩৭৭ বার পঠিত