PreviousNext
বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ইংলিশ বোলারদের তোপের মুখে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপের তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া দেখে হতবাক শেন ওয়ার্ন ও রিকি পন্টিং। এই দুই সাবেক ক্রিকেটার এমন বিপর্যয়ের জন্য উত্তরসূরিদের কৌশলগত ব্যর্থতা ও মনোভাবকেই দায়ী করছেন।
0
1
937
নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনে স্টুয়ার্ট ব্রডের বিধ্বংসী বোলিংয়ে মাত্র ৬০ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তাদের ইনিংসটি মাত্র ১১১ বল স্থায়ী হয়।
টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে এর আগে এত কম বলে কোনো দল অল আউট হয়নি। প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে কম বলে আউট হওয়ার আগের রেকর্ডটিও অস্ট্রেলিয়ারই ছিল। ১৮৯৬ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৩ বলে অল আউট হয়ে গিয়েছিল তারা। সেবার তারা ৫৩ রান করেছিল।
লাঞ্চের আগেই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন স্টুয়ার্ট ব্রড। প্রথম ওভারেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে ‘ব্যাকফুটে’ ঠেলে দেন তিনি। এরপর দ্রুত আরও ৬ উইকেট নিয়ে অতিথিদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগই দেননি ডানহাতি এই পেসার। বাকি দুটি উইকেটের ১টি করে নেন মার্ক উড ও স্টিভেন ফিন।
এ দিন স্বাগতিকদের ফিল্ডিংও ছিল এক কথায় দুর্দান্ত। তাই ব্রড ও ফিনদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং দারুণ সব ক্যাচ নিয়ে অসাধারণ একটা সেশন কাটানো ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের বাহবা দিতেও পিছপা হলেন না টেস্টে ৭০৮ উইকেট নেওয়া ওয়ার্ন।
তারপরও মাইকেল ক্লার্কদের এমন বাজে পারফরম্যান্সের পেছনে দলটির কৌশলই অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করেন ওয়ার্ন।
“টেস্ট ক্রিকেট পুরোটাই কৌশল আর মৌলিকতার বিষয়। সব সময় লড়াই করে যাওয়াটাই আসল। ব্রডের প্রশংসাপ্রাপ্য, তিনি (প্রতিপক্ষকে) ওই সব ভুলগুলো করতে বাধ্য করেছেন। কিন্তু আমি এখনও মনে করি, অস্ট্রেলিয়া আরেকটু রক্ষণাত্মক হতে পারতো এবং ভালো কৌশলে খেলতে পারতো।”
মাঠে নামার আগে এক জন ব্যাটসম্যানের একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত। সেটা এদিন অস্ট্রেলিয়ার কারোরই ছিল না বলে মনে হয়েছে ওয়ার্নের।
“দেখে মনে হয়েছে তারা (ক্লার্করা) কিছুটা হতভম্ব। বাস্তবিক কোনো পরিকল্পনাই ছিল না তাদের। শেষ টেস্ট ম্যাচ থেকে তাদের এটা শেখা উচিত ছিল।”
ওয়ার্নের মতে, এই ধরনের পিচে কৌশলই আসল। এখানে বল যত দেরিতে সম্ভব খেলা যায় ততই ভালো, নয়তো ছেড়ে দিতে হবে। উইকেট বিলিয়ে না দিয়ে টিকে থাকাটাই আসল বলে মনে করেন টেস্টে তিন হাজারের বেশি রান করা ওয়ার্ন।
এজবাস্টনে হওয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ৩৬.৪ ওভারে ১৩৬ রানে অল আউট হয়েছিল তারা। পরে মাত্র তিন দিনেই ম্যাচটি ৮ উইকেটে হেরে যায় অতিথিরা।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেশি সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলাটাও অস্ট্রেলিয়ার এই ‘বাজে’ পারফরম্যান্সের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার ওয়ার্ন। লর্ডসে হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল-সে উদাহরণও টানেন ওয়ার্ন।
“মনে হচ্ছে, এমন ঘটনা দ্রুত অনেকবার ঘটছে।”
ওই টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ ওভারে ১০৩ রানে অল আউট হয়ে ৪০৫ রানে হেরেছিল ইংল্যান্ড।
ম্যাচের আগে ইতিবাচক খেলার প্রত্যাশার কথা শুনিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা। আর এই বিষয়টা যেন পন্টিংকে বেশি ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।
“এটা বলা কেন? তোমরা রক্ষণে ইতিবাচক হতে পার, বল ছেড়ে অথবা সামনে এগিয়ে গিয়ে কিংবা পিছনে এসে রক্ষণাত্মক খেলে এটা দেখাও।”
পন্টিংয়ের মতে, এই কন্ডিশনে জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলা সম্ভব না। সেটা কাজে আসবে না।
“কিভাবে তারা খেলতে চায়, এই বিষয়ে তারা দ্বিধাগ্রস্ত ছিল কি না জানি না। এটা হওয়া উচিত নয়। কন্ডিশন এমন হলে আপনাকে একটা পথ খুঁজে বের করতে হবে।”
অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের বিপর্যয়ের শুরু হয় প্রথম ওভারেই। শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর বিপর্যয় সামলাতে না পারা দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ ১৩ রান করেন মিচেল জনসন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ রান করেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক।
ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলের প্রসঙ্গে পন্টিং বলেন, “আমার মনে হয় না, তারা যথেষ্ট রক্ষণাত্মক মনোভাবের ছিল। টপ-অর্ডারদের তুলনায় মিচেল জনসনই হয়তো ভালোভাব বল ছেড়েছে।”
বাংলাদেশ সময়: ১১:১২:৪৩ ২৫১ বার পঠিত