বঙ্গনিউজ ডটকমঃ স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি নমুনা দেখিয়ে এর প্রয়োজনীয়তা ও বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে প্রচারণায় নেমেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রোববার স্মার্ট কার্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে ইসি। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণার তাগিদের পরই জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ জনসচেতনতার উদ্যোগ নিয়েছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র করে, পরিচয় দিন গর্ব ভরে’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য, কার্ডের প্রয়োজনীয়তা ও নাগরিক সেবার বিষয়ে জানানো হচ্ছে।
“কার্ডের নমুনা প্রকাশ করে বিলবোর্ড, অ্যাডভোকেসি কিটস, গণমাধ্যমে এর বিজ্ঞাপন, প্রচারণাসহ নানাভাবে তা তুলে ধরা হচ্ছে। শিগগির নাগরিকদের হাতে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।”
সঠিক নাগরিক শনাক্ত, নাগরিক সেবা নিশ্চিত ও আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন সুবিধার জন্যে স্মার্ট কার্ডের প্রয়োজন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্রে নিরাপত্তার জন্যে চিপ, বারকোড, মেশিন রিডেবল জোন রয়েছে।”
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, স্মার্ট কার্ড দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই, সহজে নকল করা সম্ভব নয়।
“এতে তিন স্তরে ২৫টির বেশি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন চালানো সম্ভব। নাগরিকদের সব তথ্য চিপ-এ সংরক্ষিত থাকবে।”
স্মার্ট কার্ডের প্রাথমিক নমুনা অনুমোদন হলেও তা প্রচার করা হয়নি।
ইসি কর্মকর্তা বলেন, “এই প্রথম গণমাধ্যমে স্মার্ট কার্ড কেমন হচ্ছে তার রঙিনচিত্র তুলে ধরা হল। জনগণ এতে কার্ড সংগ্রহে উৎসাহিত হবে।”
স্মার্টকার্ডের উল্লেখযোগ্য সেবার বিষয়ে নিবন্ধন অনুবিভাগের মহা পরিচালক জানান, ২০টিরও বেশি সেবায় উন্নতমানের এ জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে- আয়করদাতা শনাক্তকরণ, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন, পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও নবায়ন, চাকরির জন্য আবেদন, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা ও ঋণকিস্তি, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, সরকারি ভর্তুকি-সহায়তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিমানবন্দরে ই-গেট (আসা-যাওয়া) সুবিধা, শেয়ার আবেদন-বিও একাউন্ট খোলা, ট্রেডলাইসেন্স প্রাপ্তি, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বিবাহ-তালাক রেজিস্ট্রেশন, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া, মোবাইল-টেলিফোন সংযোগ নেওয়া, বিভিন্ন ধরনের ই-টিকেটিং, সিকিউরড ওয়েব লগ ইন, ই-ফরম পূরণে নাগরিকের সঠিক ও নির্ভুল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোজন।
দেশের সব নাগরিক যাতে নির্ভুল স্মার্টকার্ড নিশ্চিত করতে পারেন, সে লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য সংশোধনেরও অনুরোধ জানান সুলতানুজ্জামান।
“আমরা শিগগির স্মার্ট কার্ড দেব। কোনোভাবেই আমরা চাই না- ভুল তথ্যসহ নাগরিকরা কার্ড সংগ্রহ করুক। এজেন্যে অন্তত অগাস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধনের অনুরোধ করছি।”
বর্তমানে ৯ কোটি ৬২ লাখেরও বেশি নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ১৫ লাখের মতো ভোটারের হাতে লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে।
স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের লক্ষ্যে ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিস নামে এক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সব ভোটারের হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছাবে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৭:৫১ ২৬৮ বার পঠিত