বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী যাতে জিততে না পারে সেজন্য সবধরনের চেষ্টা করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে এক ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ অভিযোগ করেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন নারী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানানো প্রস্তাব উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দিপু মনি।প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন কন্যা টিউলিপ সিদ্দীক, রুশনারা আলী এবং রূপা হক এদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে। তিনি বলেন, এ ব্রিটিশরাই ২শ’ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছে। আজকে সেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাঙালি সদস্য নির্বাচিত। তারা নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তারা তিনজন নির্বাচিত হয়েছে, এটা জাতির গৌরবের বিষয়। এ তিন কন্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে দোয়া চান। আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্যাগ ছাড়া কখনও কোনো মহৎ কাজ সাধন করা সম্ভব নয়। একথা জাতির পিতা বলেছেন, এটা আমরা সবসময় মনে রাখি। বাংলাদেশের মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবন পাক, সেটাই আমাদের কামনা। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। আমরা বিজয়ী জাতি, সেই বিজয়ের মুকুট যেন আমাদের মাথায় সবসময় শোভা পায়, এজন্য আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসি, তখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিল, তখন তার নির্দেশ ছিল আমরা যেন কোনোভাবেই দেশে ফিরতে না পারি। সেভাবেই সে বাধা দিয়েছিল। ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। অনেক বাধা অতিক্রম করে আমাদের চলতে হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। দেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর নাম ভুলেনি। এজন্য আমি দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে আরো অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মাহবুব উল আলম হানিফ, আব্দুল মান্নান, বেগম সানজিদা খানম, সাগুফতা ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট আবু জাহির, একেএম শাজাহান কামাল, বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, মো. মনিরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান ও স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবরণের পর শেখ রেহানা ও তাঁর নিজের সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ও আমার বোন হয়েও কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা কখনও নেননি। উপরন্তু সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করেছেন। নিজের ছেলেমেয়েদের এবং আমার ছেলেমেয়েদেরও মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শে আমাদের সন্তানদের বড় করেছি, তারাও দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। তিনি দেশবাসীর কাছে টিউলিপের জন্য দোয়া চান। শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে লন্ডনে থাকা খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান টিউলিপ যাতে নির্বাচিত হতে না পারে, সেজন্য অনেক বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে। ভোটারদের ওপর হামলা করাসহ এমন কোনো অপপ্রচার নেই, যা সে করেনি। শতবাধা অতিক্রম করে টিউলিপকে নির্বাচিত করার জন্য তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:১০:৩৫ ৩৮১ বার পঠিত