বঙ্গনিউজ ডটকমঃ আফগানিস্তানে একের পর এক হামলার মাধ্যমে চলতি বছর নিজেদের বসন্তকালীন অভিযানের কথা জানান দিচ্ছে তালিবান। বসন্তকালীন অভিযানের বিষয়টি অবশ্য নতুন কিছু নয়। সাধারণত এপ্রিল মাসের শেষ দিক থেকে তালিবান এই অভিযান শুরু করে। এপ্রিল থেকে পাহাড়গুলোতে তুষার গলে যায় এবং আফগানিস্তানের আবহাওয়া তখন অভিযানের জন্য উপযুক্ত থাকে বলে প্রতি বছরই এই সময়টায় আরো বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বড় ধরনের হামলা চালানো শুরু করে তালিবান। তবে বেশকিছু কারণে এবারের হামলাগুলো অন্য যে কোনোবারের তুলনায় আলাদা।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে তালিবানের বার্ষিক বসন্ত অভিযানের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে দেশজুড়ে নিজেদের সক্রিয় তৎপরতা ব্যাপকহারে শুরু করেছে তারা। প্রতি বছরের মতো এপ্রিলের পরবর্তী সময়টিতে তাদের সক্রিয়তা বাড়িয়ে দিলেও এবার অস্তিত্ব ও ইমেজ রক্ষার তাগিদে আরো মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে । কারণ, বিগত এক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে তালিবানের বিরতিহীন হামলা দেখে এটাই অনুমিত হচ্ছে।প্রাদেশিক রাজধানী কুন্দুজ শহরে পালিয়ে আসা জেলা গভর্নর নাসিরুদ্দিন সাইদি বলেন, কয়েকদিন ধরে এলাকাটি ঘিরে রাখার পর গত সোমবার সকালে তালিবান দাশ্ত-ই-আর্চির দখল নিয়েছে। তাদের মধ্যে ভারি মেশিনগানধারী অনেক বিদেশি যোদ্ধা দেখা গেছে। অন্যদিকে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় গজনি প্রদেশে একটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে তালিবানি হামলায় অন্তত ছয় পুলিশ নিহত হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার থেকে রোববার পর্যন্ত তালিবানের কয়েক দফা হামলায় অন্তত সাত সেনা হারিয়েছে তারা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে ওয়ানইনডিয়া তার প্রতিবেদনে বলেছে, প্রতিপক্ষ জিহাদি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দাপটে কাবু হয়ে থাকা তালিবানের কাছে এবারের বসন্ত অভিযান নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার যুদ্ধের মতোই। আইএসের উত্থানের আগে যতখানি জৌলুসের সঙ্গে এই অঞ্চলে প্রভাব খাটিয়েছে সংগঠনটি, এখন তার অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। পাশাপাশি আফগানিস্তানেও বিভিন্ন প্রদেশে প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে আইএস। কয়েকটি জায়গায় দুটি সংগঠনের সরাসরি সংঘর্ষও হয়েছে। এই বসন্ত অভিযান শুরুর পর থেকে তালিবানের হামলাগুলোর গতি-প্রকৃতি দেখলে বোঝা যাবে, পরিস্থিতি ও আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে যাওয়ার আগেই বিভিন্ন এলাকা যতখানি সম্ভব নিজেদের দখলে নিয়ে নিতে চায় তারা। এ ছাড়া সরকারের কাছে হারানো এলাকাগুলো আবার ফিরে পাওয়ার ইচ্ছা তাদের। উত্তর কুন্দুজ এলাকায় ব্যাপকহারে হামলা তো চলছেই, এর পাশাপাশি হেলমান্দ প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলেও সক্রিয়তা অনেকখানি বাড়িয়েছে তারা।উল্লেখ্য, রাজধানী কাবুলে দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে গত সোমবার ব্যাপক হামলা চালিয়েছে তালিবান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছে। পার্লামেন্ট ভবন ছাড়াও সোমবার রাজধানী কাবুলের ডামাজঙ্গ এলাকাতেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া একই দিন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুন্দুজের দ্বিতীয় আরেকটি জেলার দখল নিয়েছে তালিবান। রোববার প্রদেশের চারধারা জেলার দখল নেয়ার পর সোমবার তারা দাশ্ত-ই-আর্চি জেলা দখল করে নিয়েছে। ওয়ান ইনডিয়া, রয়টার্স।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৪:০২ ৪০৩ বার পঠিত