বঙ্গনিউজ ডটকমঃ এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্ন, তাহলে বাংলাওয়াশ হচ্ছে? নাসির হোসেনের সরল উক্তি, ‘ইনশাআল্লাহ।’ আগের দুটি ম্যাচ নিয়ে ভাবতে রাজি নয় বাংলাদেশ। মঙ্গলবার অনুশীলনে নামার আগে টিম মিটিংয়ে অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা একটি বার্তাই দিয়েছেন সবাইকে- প্রথম দুটি ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে, এমনটা ভেবেই শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য মাঠে নামতে হবে।
বাংলাওয়াশ নিয়ে দল কী চিন্তাভাবনা করছে? মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রাক-ম্যাচ কথোপকথনে নাসির হোসেন বলেন, ‘দলের চিন্তা ম্যাচ জেতার। আমরা জেতার জন্যই খেলব। পাকিস্তান সিরিজ আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। সেটা ভারতের বিপক্ষে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। আমরা যে যেমন, সেভাবে যদি খেলতে পারি, তাহলে ভারতকে শেষ ম্যাচেও হারাতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, আমরা যদি দুটি ম্যাচ হারতাম, তাহলে আমাদের যেমন চাপ থাকত, সেভাবেই যেন শেষ ম্যাচটা খেলি। ম্যাচ জেতার জন্যই খেলতে হবে। সবাই যেন বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। এক ইঞ্চি জমিও ছাড় দেয়া যাবে না।’ অর্থাৎ, নিজেদের ভারতের জায়গায় দেখছে বাংলাদেশ।
এখন একটাই আলোচনা- হোয়াইটওয়াশ। ভারত শেষ ম্যাচে হার এড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। নাসির বলেন, ‘আমরা জানি, ভারত আমাদের ওপর সর্বোচ্চ আক্রমণ করবে। তবে কে কী পরিকল্পনা করে আমাদের ওপর আক্রমণ করল, এটা দেখার বিষয় নয়। আমরা কী করছি, সেটাই আমাদের কাছে আসল। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই আলাদা আলাদা রোল আছে। আমরা নিজেদের কাজটা মাঠে ঠিকঠাকমতো করার চেষ্টা করব।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে রাগ নিয়ে খেলব কেন? টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখতে ভালোই লাগে। আমরা কী প্রতিযোগিতা করব। দেশের মানুষ তো আমাদের চেয়ে বেশি লড়াই করে!’
বাংলাদেশের ফিল্ডিং এখন অনেক ধারালো হয়েছে। বেশ কয়েকটা সিরিজে বাংলাদেশ তার প্রমাণ দিয়েছে। এই উন্নতির কারণ কী- জানতে চাইলে নাসির বলেন, ‘মাঠে যারা খেলাটা উপভোগ করে তারাই ভালো ফিল্ডিং করে। দু’একজন ছাড়া আমাদের দলের সবাই ভালো ফিল্ডার।’ ফিনিশার হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন নাসির। এখন ফিল্ডিং ও বোলিংয়ে নজর কাড়ছেন। তাহলে কি ব্যাটসম্যান নাসির আড়াল পড়ে যাচ্ছেন? তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে গোটা সিরিজে আমি একটিমাত্র বল খেলেছি। ভারতের বিপক্ষে সিরিজেও এক ম্যাচে সুযোগ পেয়েছি। আমি আসলে সুযোগই পাচ্ছি না, তার আগেই খেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’ দ্বিতীয় ম্যাচের পর টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা বলেছিলেন, ‘নাসির এখন বাংলাদেশের সেরা অফ-স্পিনার।’ নাসির বলেন, ‘যে বনে বাঘ নেই, সে বনে বিড়ালই বাঘ! আমাদের ১১ জনের মধ্যে অফ-স্পিনার নেই, সেক্ষেত্রে হয়তো আমিই সেরা। তবে হয়তো আগের থেকে একটু ভালো বল হয়েছে।’
নাসির বলেন, ‘মাশরাফি ভাই আমাকে বলেন, তুই কিন্তু বোলিং করবি। বল করার সময় মনে করবি, তুই দলের সেরা বোলার।’ পাকিস্তানের পর ভারতকে হারানোয় অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশ এখন বড় দল হয়ে গেছে। নাসিরের কথায়, ‘আমি এখনও বলব না যে, আমরা বড় দল হয়ে উঠছি। এখনও পুরোপুরি বড় দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারিনি। কারণ আমরা হোম কন্ডিশনে খেলছি।’ তিনি বলেন, ‘এই দলের আমরা অনেক দিন ধরে খেলছি। সবচেয়ে বড় কথা, জয়ের অভ্যাস তৈরি হয়েছে। শেষ কয়েকটি সিরিজে আমরা ভালো খেলেছি। এটাই নিয়মিত করার চেষ্টা করছি। দু’তিন বছর এভাবে খেললে মনে হবে বড় দল হয়ে উঠেছি।’
কাল সারা দিন আকাশে মেঘ ছিল, বৃষ্টিও হয়েছে। আজও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ম্যাচে জেতার পর খেলাটা কতটুকু প্রত্যাশার? নাসির বলেন, ‘শেষ ম্যাচটি না হলে আক্ষেপ থাকবে অবশ্যই। কারণ ভারত বড় দল। তাদের বিপক্ষে খেলে আমরা শিখতে পারব। আমরা চাই, ম্যাচটা হোক। হারজিত যাই হোক, আমরা খেলতে চাই।’ প্রথম দুটি ম্যাচে জয়ের নায়ক মুস্তাফিজুর রহমান। নেটে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কীভাবে তাকে খেলে- শুনুন নাসিরের মুখে, ‘নেটে ওর বল খেলতে প্রায়ই আমাদের সমস্যা হয়। আমি মাঝে মাঝে দুষ্টুমি করে বলি, যখন ব্যাটিং করব তখন আমাকে কাটার মারবি না।’
বাংলাদেশ সময়: ৩:০১:২৭ ৩৫৫ বার পঠিত