বঙ্গনিউজ ডটকমঃ মেট্রোরেলের ইঞ্জিন কোচ সরবরাহে দরপত্রে অংশ নেওয়া ৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে চলতি মাসেই যোগ্য প্রতিষ্ঠান বেছে নেওয়া হবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে।”
“এর ভিত্তিতে যোগ্যদের চূড়ান্ত দরপত্রে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন চলতি মাসেই শেষ হবে। নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে কারিগরি দিক থেকে চূড়ান্তভাবে যোগ্য বিবেচিতদের কাছে আর্থিক প্রস্তাবনা চাওয়া হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ামাত্রই চূড়ান্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে।”
গত ৩০ জানুয়ারি মেট্রোরেলের ইঞ্জিন-কোচ সরবরাহে প্রাক-যোগ্যতা যাচাই দরপত্র আহ্বান করা হয়। এজন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৩০টি আবেদনপত্র নিলেও গত এপ্রিল মাসে জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত জমা পড়ে ৮টি আবেদনপত্র।
মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র কুন্ড বলেন, “আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে চীনের নরিনকো গ্রুপ ও বেইজিং সাবওয়ে, ইতালির আনসালদো এসটিএস, ফ্রান্সের অলস্টম ও ভারতের বোম্বারডিয়ার। যৌথভাবে রয়েছে কনসোর্টিয়াম অব হিটাচি অ্যান্ড মিতসুই, কাওয়াসাকি-মিত্সুবিশি কনসোর্টিয়াম ও নিপ্পন সাইকি-এসসি জেভি।”
আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের খ্যাতনামা মেট্রোরেল ইঞ্জিন-কোচ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য প্রধান প্রকৌশলী বলেন, “কমিটি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে, প্রতিষ্ঠানগুলোর কার কি রকম অভিজ্ঞতা রয়েছে বা কে কি ধরণের কাজ করেছে তা এই কমিটি দেখছে।
“যাচাই-বাছাইয়ে কয়টি প্রতিষ্ঠান টিকবে- তা চলতি মাসেই চূড়ান্ত করতে পারব।”
মেট্রোরেলের জন্য ইঞ্জিন-কোচগুলো ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ইএমইউ) নামে পরিচিত। ছয়টি করে ইউনিটের মেট্রোরেলের সামনে ও পেছনে থাকবে ইঞ্চিন।
২০১৯ সালে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতি চার মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল; ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী।
রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে মোট ২৪ জোড়া মেট্রোরেল চলাচল করবে রাজধানীতে। উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই মেট্রো রেল, সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।
প্রতি মেট্রোরেলে ৬টি কোচ থাকবে। প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে ১৮০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে- উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেইট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে, যার ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকাই দেবে জাইকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা জোগাবে সরকার।
নির্মাণকাজে ধাপে ধাপে মোট ৬টি প্যাকেজে আটটি দরপত্র দেওয়া হবে। আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে হবে।
ইতোমধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণে এলাইনমেন্ট ও ১৬টি স্টেশনের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল ভূমি অধিগ্রহণের বিশেষ বিধান রেখে মেট্রোরেল সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৫:৫৩ ৪৪৩ বার পঠিত