বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘প্রবৃদ্ধি, ব্যবসা, বিনিয়োগ ও শিল্পবান্ধব’ বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
একই সঙ্গে এ বাজেটকে ‘চ্যালেঞ্জিং বাজেট’ বলেও উল্লেখ করেছেন সংগঠনটির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। তাঁর মতে, এ চ্যালেঞ্জিং বাজেট বাস্তবায়নে সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল শনিবার এমন প্রতিক্রিয়া জানান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তাঁর পাশে ছিলেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এ সময় পরিচালকেরাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাতলুব আহমাদ বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়ন ও সঠিকভাবে অর্থ ব্যয় করতে না পারায় প্রতিবছরই বাজেট সংশোধন করতে হয়। বাজেট সংশোধনের কারণে আর্থিক অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য বাজেট বাস্তবায়নে বছরের শুরু থেকেই সুষ্ঠু তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি রাখা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। এ ঘাটতি মেটাতে সরকার দেশীয় ব্যাংক থেকে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা ঋণ নেবে। মাতলুব আহমাদ মনে করেন, ব্যাংকঋণের ওপর সরকারের নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের ঋণ পাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আবার সরকার যদি ঘাটতি অর্থায়ন যথাযথভাবে করতে না পারে, তাহলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে বিনিয়োগ বাড়াতেই হবে। আর বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ব্যাংকঋণের সুদহার কমানো। যদিও সঞ্চয়পত্রের এবং ঋণের সুদহার কিছুটা কমেছে, তবু এক অঙ্কের সুদহার ছাড়া শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়।
জেলায় জেলায় কিডনি ও ক্যানসারসহ জটিল রোগের হাসপাতাল স্থাপনে করমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলে দেশের স্বাস্থ্য খাতের যেমন ব্যাপক উন্নয়ন হবে, তেমনি এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি।
প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্পের মৌলিক কাঁচামাল আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ শুল্কহার ১ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই। একই সঙ্গে শিল্পের কাঁচামালে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার কিংবা ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বাজেটে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের প্যাকেজ ভ্যাট বাড়িয়ে এলাকাভেদে ৩ হাজার ৬০০ টাকা, ৭ হাজার ২০০ টাকা, ১০ হাজার টাকা এবং ১৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব এসেছে। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, এ হারে দোকানদারদের মূসক দিতে অনীহা দেখা দিতে পারে। তাই এ হার আগের মতো রাখা উচিত।
মুঠোফোন ব্যবহারের ওপর প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কসংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে মাতলুব আহমাদ বলেন, আপামর জনসাধারণ যেটা ব্যবহার করেন, সে বিষয়ে কোনো কিছু না বাড়িয়ে বরং কমিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে দ্বিগুণ। এর ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। সরকারকে এটা সুদক্ষভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪৬:৪৭ ৩৬১ বার পঠিত