বঙ্গনিউজ ডটকমঃ তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কমানোসহ আগামী অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কয়েকটি নীতি সহায়তা ঘোষণা দেওয়ার পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে।
বৃহস্পতিবার বাজেট প্রস্তাবের পর রোববার লেনেদেন শুরুর প্রথম দশ মিনিটে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক লাফে ৮৩ পয়েন্ট বাড়ে, লেনদেন হয় ৫৭ কোটি টাকার শেয়ার।
এরপর এক ঘণ্টার মাথায় সূচক কিছুটা কমে ৪ হাজার ৬৬৮ পয়েন্ট হয়। ২৩০ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল হয়।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরুর প্রথম ৯ মিনিটে সিএসসিএক্স সূচক বাড়ে ৯৩ পয়েন্ট, লেনদেন হয় ৫ কোটি টাকা শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। একঘণ্টার লেনদেন শেষে সিএসসিএক্স আরও বেড়ে ৮ হাজার ৭৩৫ পয়েন্ট হয়।
সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকার পুঁজিবাজারে ২১৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে, কমেছে ৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির দাম।
লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে সামিট পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার, বেক্সিমকো লিমিটেড ও ফার কেমিক্যালস।
করপোরেট কর কমায় ব্যাংক, বীমা, আর্থিক থাক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, প্রকৌশল, ওষুধসহ প্রায় সব খাতের শেয়াররেই দাম বেড়েছে।
বাজেট প্রস্তাবের দিন বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীদের দোলাচলের মধ্যে ডিএসইএক্স ৪ পয়েন্ট বেড়েছিল, লেনদেন হয়েছিল ৪৯৯ কোটি টাকার শেয়ার।
বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর হার কমানো এবং বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ের করমুক্তসীমা বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
ভবিষ্যতে পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণের আশা প্রকাশ করে বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, “বিগত চার বছরের কার্যক্রমের ফলে পুঁজিবাজার এখন একটি ভালো অবস্থানে পৌঁছেছে। পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আরও কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে চাই।”
এ কারণেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন খাতের কোস্পানির করপোরেট করহার কমানো হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আগের মতোই ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যারা এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তাদের করহার আগের চেয়ে কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। এক্ষেত্রে করহার ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানির করহার ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এর বাইরেও পুঁজিবাজারের জন্য আরও কিছু সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
বিনিয়োগকারীরা এতদিন কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে যে আয় করতেন, তা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত ছিল। এই সীমা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া কোম্পানি বা অংশীদারী ফার্মের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হতে অর্জিত মুনাফার উপর যে ১০ শতাংশ উৎসে কর দিতে হতো, তা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এসব প্রস্তাবের বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, “সরকার পুঁজিবাজারের দিকে যথেষ্ট নজর দিয়েছে এবং বাজারকে বড় করতে চাচ্ছে।
“তালিকাভুক্ত না হলে সরকার কর বেশি পায়। তারপরও কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য সরকার যে ছাড় দিচ্ছে তাতেই বাজারের প্রতি সরকারের গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে।”
বাংলাদেশ সময়: ১২:২২:০৩ ৩৬১ বার পঠিত