বঙ্গনিউজ ডটকমঃ মালয়েশিয়ায় কিনাবুলু পাহাড় চুড়ায় আটকা পড়েছে শতাধিক দর্শনার্থী। তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে তারা। ইতোমধ্যে ১০ জন অচেতন হয়ে পড়েছেন এবং তিনজন গাইড পাহাড়ে পাথর চাপায় আটকা পড়ে গেছে। শুক্রবার সকালে হওয়া ভুমিকম্পের পরই তাদের এই করুণ দশা।১৫ সেকেন্ড স্থায়ী ৬ মাত্রার এ ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, দেশটির সবচেয়ে উঁচু পাহারের চূড়া ভেঙ্গে যায়। এবং সেখানে আটকা পড়ে শতাধিক দর্শনার্থী। এদের মধ্যে একজন মারাও গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম স্টার অনলাইন।
তবে নিহত ও আহতদের ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি উদ্ধারকারী দল। তারা এখনও কোনো লাশ খুঁজে পায়নি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে ভুমিকম্পের সময় সিঙ্গাপুরের একজন নারী মারা গিয়েছেন এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন। উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে সাবাহ পার্কে ১৮৯ জন নিবন্ধিত দর্শনার্থী আটকা পরেছেন। তাদের মধ্যে আহত তিনজন সন্ধ্যা নামার আগেই সাবাহ পার্কের বেসক্যাম্পে পৌঁছে গেছে।
চূড়ায় আটকা পড়াদের বেশিরভাগই মালয়েশিয়ান বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল। তবে সিঙ্গাপুর থেকে ৩৮ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ৫ জন, ফিলিপাইনের ৫ জন, যুক্তরাজ্যের ৩ জন, থাই্ল্যান্ডের ৪ জন এবং তুরস্ত, চীন এবং জাপান থেকে একজন করে দর্শনার্থী রয়েছেন।
পাহাড়ে অনবরত পাথর ভাঙ্গনের ফলে দর্শনার্থীদের উদ্ধার করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারী দলের। এখনও শতাধিক দর্শনার্থী আটকা পড়ে আছে বলে জানায় তারা।
হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের উদ্ধার করারও চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পাহাড় চূড়া মেঘ দিয়ে ঢেকে যাওয়ার কারণে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।
তবে অন্ধকার হওয়ার আগেই আটকা পড়াদের মাঝে কম্বল ফেলানো হয়েছে বলে জানান এক উদ্ধারকারী কর্মকর্তা।
তিনি জানান, সেখানকার তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রিরও নিচে হওয়ায় বেশ দুর্ভোগেই আছে দর্শনার্থীরা। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরো কমে যাবে এবং তখন তাদের বাঁচানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাই তারা চাচ্ছে সূর্য ওঠার আগেই যেন তারা সবাইকে উদ্ধার করতে পারে।
এদিকে স্থলপথে ৮৫ জনের একটি উদ্ধারকারী দল কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩,৭৭২ মিটার উঁচু লাবান রাতায় পৌঁছে গেছে বলে জানা গেছে। তারা এখন সেখানে একটি অস্থায়ী পথ তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু অন্ধকার হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের কাজ খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
আটকা পরা দর্শনার্থীদের পরিবারের সদস্যরা ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছে এবং গত সপ্তাহে পাহাড়চূড়ায় সংলগ্ন ছবি তোলা ভ্রমণকারীদের দোষারোপ করছে।
কারো কারো পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করছে। কিন্তু তাদের মোবাইলের চার্জও শেষ হয়ে আসছে। তারা ভীত যে যেকোনো সময় তাদের উপর পাথর ভেঙ্গে পড়তে পারে।
মালয়েশিয়ার ভ্রমণ, সংস্কৃতি ও পরিবেশ মন্ত্রী দাতুক মাসিদি মানজুন বলেন, আটকে পরা দর্শনার্থীদের জন্য খাবার ও পোশাক পাঠানো হয়েছে এবং তাদের উদ্ধারের জন্য একটি উদ্ধারকারী দলও পাঠানো হয়েছে।
সাবাহ পুলিশ কমিশনার দাতুক জালালুদ্দিন আব্দল রহমান আহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তারা হলেন, তুরস্কের দর্শনার্থী সেমিয়া তুরকে(৩৫), রবি স্যাতিঙ্গা (৩০), জেমস মিকোল (২৯)।
তারা গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাদের রানাউ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:০২:৫৫ ৩০৮ বার পঠিত