বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ঢাকা শহরে অন্তর্বর্তীকালীন জরুরি পয়ঃনিষ্কাশন লাইন নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়িমসি শুরু করেছে ঢাকা ওয়াসা। এমনিতেই সময় ও ব্যয় বাড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ প্রকল্পটি। এর মধ্যে ফের প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঢাকা ওয়াসা তৃতীয়বারের মতো প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রও নেয়নি ওয়াসা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরাস্তু খানের সভাপতিত্বে ‘অন্তবর্তীকালীন জরুরি পয়ঃলাইন নির্মাণ ও পুনর্বাসন’ প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ৮৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিলো। কিন্তু বারবার সংশোধন করে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পব্যয়।
দ্বিতীয় দফায় আবারও প্রকল্পটির সময় বেড়ে দাঁড়ায় ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এবং ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৯১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় প্রকল্পটির মেয়াদ ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়নো হয়।
অন্যদিকে পিইসি সভায় পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পটির ড্রেনেজ পাইপলাইন স্থাপনের জন্য রাস্তা কাটার সময় ধুলা-বালি ওড়ে। এক্ষেত্রে ধুলা-বালি দূর করার জন্য সব সময় পানি ছিঁটানোর ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। কিন্তু সে ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি ঢাকা ওয়াসা পরিবেশ অধিদফতরের কাছ থেকে কোনো ছাড়পত্র নেয়নি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য।
পরে সভায় ওয়াসার প্রতিনিধি বলেন, প্রকল্পটি সমাপ্তির পথে রয়েছে। তাই এ সময় ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
সূত্র জানায়, নানা অজুহাতে আবারও প্রকল্প সংশোধনের সুপারিশ করেছে ঢাকা ওয়াসা।
প্রকল্পের আওতায় হাইয়ার ও লোয়ার ডায়ামিটার পাইপ বৃদ্ধি, ১৫০ মিলিমিটার ব্যাসের সার্ভিস সংযোগ পাইপ বৃদ্ধি, ৮শ’ মিলিমিটার ব্যাসের আরসিসি স্যুয়ার লাইন ও দরবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে প্রকল্প সংশোধন করতে চায় ঢাকা ওয়াসা।
ম্যানহোলের ঢাকনা সংখ্যা ও পয়ঃলাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, নতুন পয়ঃলাইনের পরিমাণ হ্রাস এবং পয়ঃলাইনের পুনর্বাসন কাজ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে হাজারীবাগ স্টেশনের জন্য পাম্পের ক্ষমতা বৃদ্ধি, হাজারীবাগের ইলেকট্রিক সাবস্টেশনের ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকিউরমেন্ট, প্ল্যানের টেন্ডার পদ্ধতি পরিবর্তন ইত্যাদি কাজ এখনও অধরাই রয়ে গেছে।
রাজস্ব খাত বৃদ্ধির কথা বলেও প্রকল্পটি সংশোধন করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
তবে এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে আইএমইডি’র এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের যেসব অংশে পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে তার নির্দিষ্ট কারণ
উল্লেখ করতে হবে ওয়াসাকে। ঢাকা শহরে মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। প্রকল্পটি যাতে মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। এবার প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি-না সে বিষয়েও আমাদের নিশ্চয়তা দিতে হবে ওয়াসার পক্ষ থেকে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পের কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেই লক্ষ্যে আরও এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে। আগামী এক বছরের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৯:৫৫ ৩৬৯ বার পঠিত