বঙ্গনিউজ ডটকমঃ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করেছেন ভারতের শিলং হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এজন্য তাকে নর্থ-ইস্ট ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সালাহ উদ্দিনের স্বাস্থ্য ও মেডিকেল রিপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বুধবার শিলং সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসকরা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সময় টিভি।
চিকিৎসকদের চূড়ান্ত ছাড়পত্র না পাওয়ায় সালাহ উদ্দিনকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপগুলোও ঝুলে রয়েছে।
দীর্ঘ দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর সালাহ উদ্দিন গত ১১ মে শিলংয়ে উদ্ধারের পর অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় পুলিশের কাছে আটক হন। এরপর ১২ মে থেকে শিলং সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শিলং হাসপাতালের ডা. ডি জে গোস্বামীর তত্ত্বাবধানে সালাহ উদ্দিন তার হার্ট ও কিডনির চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে স্ত্রী ও সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ তার সঙ্গে দেখা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সালাহ উদ্দিনকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।
তবে এখন পর্যন্ত অসুস্থতার কারণে সালাহ উদ্দিনকে দেশটির আদালতে হাজির করা হয়নি। ফলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপও নিতে পারছেন না তার পরিবার।
শিলং হাসপাতালের ডা. গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে সালাহ উদ্দিনের কিডনিতে কিছু জটিলতা পাওয়া গেছে।’
এর আগে তিনি জানিযেছিলেন, ‘বুধবার আমরা চিকিৎসকরা সালাহ উদ্দিনের বিষয়ে এক সঙ্গে বসব। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন কিনা, নাকি আরো চিকিৎসা দরকার সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তবে শিলং টাইমস সরকারি আইনজীবীদের বরাতে খবর দিয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশের আইনে সালাহ উদ্দিন একজন অভিযুক্ত। এজন্য দুদেশের মধ্যকার কিছু পদক্ষেপের বিষয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা এও পরামর্শ দিয়েছেন যে, সালাহ উদ্দিন অথবা তার পরিবার বাংলাদেশের অভিযোগ নিয়ে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। এর বাইরে তারা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও যেতে পারেন।
তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দারস্থ হবে। দুই মন্ত্রণালয় মিলে সালাহ উদ্দিনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবীরা জানান, ফরেনার্স অ্যাক্টে কেউ আটক হলে তার সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর জেল। তবে দেশ ভেদে ভারতে এই সাজার রকমফেরও রয়েছে।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় দিনের মত শিলং হাসপাতালে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছেন হাসিনা আহমেদ। এই সাক্ষাৎ শেষে তিনি রাতে মেঘালয় হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এসপি মহন্তের সঙ্গে দেখা করেন।
এসপি মহন্তের সঙ্গে হাসিনা আহমেদ কিভাবে তার স্বামীকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে পরামর্শ করেন।
পরে আইনজীবী মহন্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালের ছাড়পত্র পাওয়ার পর সালাহ উদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হবে। সেখানে তার জামিন হলেই কেবল বাইরের কোনো দেশে নেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমি সালাহ উদ্দিনকে ভারতে আরো ভালো চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করতে তার স্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছি। তিনি স্বামী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপের পর আমাকে পুরো বিষয়টি জানাবেন বলেছেন।’
এর আগে হাসপাতালে স্বামীর সঙ্গে দেখা করে বের হওয়ার সময় হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত ২০ বছর ধরে সালাহ উদ্দিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে তাকে ওখানেই নেওয়া দরকার।’
বাংলাদেশ সময়: ১২:৩৩:১১ ৩১২ বার পঠিত