খোকন-ক্রীড়া ডেস্ক: ২০১২-১৩ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্নের মাঠে ৪-০ গোলে হেরেছিল বার্সা। এরপর ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠেও ৩-০ গোলের হতাশাজনক পরাজয়। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-০ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ২০১২-১৩ মৌসুমের পর আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে বায়ার্নের মুখোমুখি বার্সা। বুধবার শেষ চারের প্রথম লেগে জার্মানির শীর্ষ দলটিকে আতিথ্য দেবে কাতালানরা। ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচটি তাই বার্সার জন্য প্রতিশোধেরই এক লড়াই। বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১ টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ন্যু ক্যাম্পে ফিরছেন বার্সাকে ১৪টি শিরোপা এনে দেওয়া কোচ পেপ গার্দিওলা। তবে এবার ফিরছেন বায়ার্নের কোচ হিসেবে, অর্থাৎ বার্সার প্রতিপক্ষ হয়ে! এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১২, বার্সার কোচ ছিলেন গার্দিওলা। তার সময়ের বেশিরভাগ খেলোয়াড় এখনো বার্সায় আছেন। ফলে তাদের শক্তি কিংবা দুর্বলতা ভালোই জানা আছে বায়ার্ন কোচের।
বার্সার সেরা তারকা লিওনেল মেসির সঙ্গে গার্দিওলার সম্পর্কটা আরো ভালো। এখন নাকি দুজনের মধ্যে বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। এমন দাবি অবশ্য মেসির নিজেরই। ম্যাচের আগের দিন বার্সা ফরোয়ার্ড বলেন, ‘পেপ (গার্দিওলা) এখানে (বার্সায়) থাকা অবস্থায় আমাদের মধ্যে দারুণ এক সম্পর্ক ছিল। সে চলে যাওয়ার পর কয়েকবার অবশ্য তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তবে আমাদের মধ্যে এখন আর কোনো সম্পর্ক নেই।’
বায়ার্নের সঙ্গে বার্সার অতীত ইতিহাসটা অবশ্য খুব একটা সুখকর নয়। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত আটবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয়বার এবং ইউরোপা লিগে দুবার। আর এই আটবারের মধ্যে মাত্র একবার বায়ার্নকে হারাতে পেরেছে বার্সা। বাকি সাত ম্যাচের পাঁচটিতে হেরেছে এবং দুটি ড্র করেছে।অতীত ইতিহাস যেমনই হোক, সম্প্রতি কিন্তু দারুণ ছন্দে আছে বার্সা। ছন্দে আছে বার্সার আক্রমণভাগের এমএনএস নামে পরিচিত সেরা তিন তারকা মেসি, নেইমার ও সুয়ারেজ।
চলতি মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে শেষ ১৬ ম্যাচের ১৫ টিতেই জিতেছে বার্সা। লা লিগায় টানা ১১ ম্যাচে অপরাজিত তারা। লিগে শেষ দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে বার্সা গোল দিয়েছে মোট ১৪টি। ভাবা যায়? পক্ষান্তরে কোনো গোলই হজম করেনি। নিজেদের শেষ ম্যাচে কর্দোবাকে ৮-০ গোলের বন্যায় ভাসায় বার্সা। দলের শেষ দুই ম্যাচের ১৪ গোলের ১১টিই করেছেন মেসি-নেইমার ও সুয়ারেজ। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে এ মৌসুমে এরই মধ্যে ১০৮ গোল করেছেন বার্সার এই ত্রয়ী। বায়ার্নের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বার্সার কোনো ইনজুরি শঙ্কাও নেই। জার্মানির দলটির বিপক্ষে পুরো শক্তির দলই পাচ্ছেন লুইস এনরিক।
অন্যদিকে চার ম্যাচ হাতে রেখে বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতে বেশ উজ্জীবিত বায়ার্ন। এবার নিয়ে টানা চতুর্থবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে জার্মানির শীর্ষ দলটি, যা টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ বার্সেলোনা ছয়বার ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিয়াল মাদ্রিদ টানা পাঁচবার সেমিফাইনালে ওঠে। বায়ার্ন ছন্দে থাকলেও ইনজুরি সমস্যায় জর্জরিত দলটি। কুঁচকির ইনজুরির কারণে বাকি মৌসুম থেকে ছিটকে পড়েছেন দলের ডাচ স্ট্রাইকার আরিয়েন রোবেন। ইনজুরির কারণে সেমির প্রথম লেগে খেলতে পারবেন না লেফট-ব্যাক ডেভিড আলবা। গোড়ালির ইনজুরিতে ভোগা ফ্রাঙ্ক রিবেরির খেলাও অনিশ্চিত। বায়ার্নের শেষ ম্যাচে নাক ফেটে যাওয়া রবার্ট লেভানদোস্কির অবশ্য মুখোশ পরে খেলার কথা।
সব শেষে কথা একটাই, নিজেদের ছন্দ ধরে রেখে বায়ার্নকে হারাতে পারবে তো বার্সা? পারবে তো গত মৌসুমে হারের প্রতিশোধ নিতে? জবাব মিলবে আর কয়েক ঘণ্টা পরই!
সূত্রঃ ইএসপিএন এবং গোল ডটকম
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০৯:২৯ ৩৩৯ বার পঠিত