বঙ্গনিউজ ডটকমঃ প্যাকম্যান : উচ্চতা পাঁচ ফুট সাড়ে ছয় ইঞ্চি। ৬৪ ম্যাচে ৫৭ জয়। যার ভেতর ৩৮টা নক আউট। ভবিষ্যতে যিনি হয়তো ফিলিপিন্সের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন। বিখ্যাত ভিডিও গেমের ভিত্তিতেই তাঁর ছদ্মনাম প্যাকম্যান। তিনি-মানি পাকিয়াওয়।
মানি : উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। ৪৭ ম্যাচে ৪৭টাই জয়। ২৬টা নক আউটে। তিনি রিংয়ের মধ্যে যত না ভালো আপারকাট মারতে মারেন তার থেকে বেশি তীক্ষ্ম তাঁর ব্যবসা-বুদ্ধি। তিনি- ফ্লয়েড ‘মানি’ মেওয়েদার।
শনিবার বক্সিংয়ের এই দুই বিখ্যাত চরিত্র সর্বপ্রথম একে অপরের বিরুদ্ধে রিংয়ে নামছেন। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট লাস ভেগাসের এমজিএম এরিনা। যে ম্যাচকে বলা হচ্ছে বক্সিংয়ের ইতিহাসে সবথেকে দামী লড়াই। তিরিশ কোটি ডলারের লড়াই। যে ম্যাচের অধীর অপেক্ষায় হলিউড তারকা থেকে বক্সিংয়ের প্রাক্তন কিংবদন্তিরা।তবে যে লড়াই নিয়ে পৃথিবী জুড়ে এত হইচই সেই ম্যাচকে আদৌ যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়ামহল ভাল নজরে দেখছে না। বহু ক্রীড়াবিদ এই ম্যাচের পাশে ‘‘দুই স্বার্থপর, লোভী অ্যাথলিটের বেকার ম্যাচের” তকমা বসিয়ে দিয়েছেন। তাদের যুক্তি, যখন পাঁচ বছর আগে মেওয়েদার ও পাকিয়াওয় দু’জনেই নিজেদের সেরা ফর্মে ছিলেন তখন কেন ম্যাচটার কথা ভাবা হয়নি? যদিও বিতর্ক উড়িয়ে এক সূত্রের মতে, মেওয়েদার বনাম পাকিয়াওয়-র স্বপ্নের লড়াইয়ের জন্য ২০০৯ থেকেই আগাম কথাবার্তা শুরু হয়। কিন্তু এই-ওই সমস্যার জন্য ম্যাচটা হয়ে ওঠেনি।
এই ম্যাচে যিনিই জিতুক না কেন, তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফুলে ফেঁপে উঠবেই। শোনা যাচ্ছে, এক দিকে যেমন মেওয়েদার পাবেন ১ কোটি ৮০ মিলিয়ন ডলার, তেমনই পাকিয়াওয় পাবেন ১ কোটি ২০ মিলিয়ন ডলার। তাই নিন্দুকেরা এ-ও বলছেন যে, এই ম্যাচে হার-জিত কিছু যায় আসবে না দুই বক্সারের কাছে। তবে বাইরে থেকে যাই বলা হোক না কেন, দুই শিবিরের মধ্যে বাগযুদ্ধের মহড়া তুঙ্গে। মেওয়েদারের বাবা যেমন বলে দিয়েছেন, পাকিয়াওয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে হাসতে হাসতেই জিতবে তার ছেলে। ‘‘এই ম্যাচটা মেওয়েদারের কাছে সাধারণ লড়াইয়ের মতোই। ও আরামেই জিতবে ম্যাচটা,” বলছেন মেওয়েদার সিনিয়র। ম্যাচের আগে বিতর্ক উস্কে মেওয়েদার একটা ছবি পোস্ট করেন যেখানে তার টি-শার্টে ফিলিপিন্সের জাতীয় পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি। কিন্তু মেওয়েদার বলছেন, ‘‘আমি পাকিয়াওয়কে নিয়ে উপহাস করতে চাইনি। ফিলিপিন্সেও আমার অনেক ভক্ত আছে।”
পাশাপাশি আবার পাকিয়াওয়র শিবির থেকে খবর, লাস ভেগাস আসার ফ্লাইটে প্যাকম্যান খরচ করতে চলেছেন ৪ কোটি ডলার। যাতে তার সঙ্গে আসা বন্ধুবান্ধবদের কোনও কষ্ট না হয়। পাকিয়াওয়র ট্রেনার রোচ আবার মেওয়েদারের গা-ছাড়া মনোভাবকে তীব্র কটাক্ষ করেন। ‘‘মেওয়েদারকে দেখে মনে হচ্ছে ও হয়তো লড়াই করতে আসবে না এমজিএম গ্র্যান্ডে।”
দুই বক্সারের মধ্যে এগিয়ে কে, সেই প্রসঙ্গেও দু’ভাগ বক্সিং সাম্রাজ্য। এক দিকে যেমন মাইক টাইসন বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় মেওয়েদার খুব স্লো হয়ে গিয়েছে। পাকিয়াওয়র ঘুষিগুলো খুব শক্তিশালী। ওই জিতবে।” আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বক্সার আমির খান বলছেন, ‘‘ফ্লয়েড এত চালাক ও ঠিক কোনও উপায় বের করবে জেতার।” যিনিই জিতুক না কেন, সবার আশা একটাই, এই দুই ‘লোভী অ্যাথলিট’ যেন আলি-ফ্রেজারের মতোই স্মরণীয় লড়াই উপহার দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৬:৪৯ ২৭১ বার পঠিত