বঙ্গনিউজ দতকমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় দ্বিতীয় আফ্রো-এশিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানে তাঁর তিনদিনের সরকারি সফর শেষে গত রাতে দেশে ফিরেছেন।
তিন দিনব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলন বুধবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় বালাই সিডাং জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফর সঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে জাকার্তার সুকর্ন হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
ইন্দোনেশিয়ার ধর্মমন্ত্রী লোকমান হাকিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাওনাইন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত উইরান্তা আমাজা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
এ বছরের শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে সাউথ-সাউথ সহযোগিতা জোরদার করা।’
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাউথ-সাউথ সহযোগিতার মাধ্যমে এশিয়া ও আফ্রিকার অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অভিজ্ঞতা বিনিময়ে অংশীদারিত্ব জোরদার এবং কৌশল নিয়ে আলোচনা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আফ্রো-এশিয়ার ৩৪টি দেশের রাষ্ট্র অথবা সরকার প্রধানগণ এতে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে প্লেনারি দ্বিতীয় সেশনে ভাষণ দেন। তিনি ভাষণে শান্তি, নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নে সাউথ-সাউথ সহযোগিতা আরো জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বৃহস্পতিবার সম্মেলনের প্রিলিমিনারি সেশনে-৪-এ মিসরের প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মেহবুবের সঙ্গে কো-চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেন। শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিন পিং, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্রং ট্যান স্যাং, মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ থেইন সেন, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে, জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহ ইবনে আল হোসাইন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা, ফিলিপাইনের প্রধানমন্ত্রী ড. রামি হামদুল্লাহ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হেইসেন লুং এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন।
সম্মেলনে এশিয়ান ও আফ্রিকার ১০৫টি দেশের প্রতিনিধি, ১৫টি পর্যবেক্ষক দেশ ও ১৭টি আন্তর্জাতিক সংস্থা যোগ দেয়।
৬০ বছর আগে শুরু হওয়া বানদুং চেতনার আলোকে জোটবদ্ধতার দৃঢ়করণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা এগিয়ে নেয়া এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের দুই মহাদেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ থেইন সেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হেইসেন লুং, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ড. রামি হামদাল্লাহ এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা ও কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমদ বিন আবদুল্লাহ আল-মাহমুদের সঙ্গে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং প্রতিনিধিদের সম্মানে গতকাল রাতে ইস্তানা মারদেকা প্যালেসে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকে উইদোদো ও ফার্স্ট লেডি আইরিনা উইদোদোর দেয়া ভোজসভায় যোগ দেন।
৫৫ বছর আগে ইন্দোনেশিয়ার বানদুং শহরে অনুষ্ঠিত আফ্রো এশিয়ান কনফারেন্সের ৬০তম বার্ষিকী স্মরণে এবং ২০০৫ সালে গঠিত নতুন আফ্রো এশিয়ান স্ট্রাটেজিক পার্টনারশীপের দশম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৮:২৪ ২৮৪ বার পঠিত