বঙ্গনিউজ ডটকমঃ নেপাল থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে।
এ ব্যাপারে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ, নেপাল, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিনিধি ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মধ্যে আগামী মে মাসে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ওই বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য জন্য বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী রাধা কুমারী গাওয়ালি।
একই সফরে নেপাল থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী এক চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে আগামী ২৫ মে নেপাল সফরের আমন্ত্রণ জানান।
গত ৭ এপ্রিল পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগে গত ৫ মার্চ নেপালে এ-সংক্রান্ত (নেপালের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি প্রসঙ্গে) যে বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল তা বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় সে সময় বাতিল করা হয়। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিনিধি, এডিবি ও নেপালে জলবিদ্যুতে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা স্থগিত বৈঠকটির নতুন করে সময় নির্ধারণ করেছেন আগামী ২৫ মে।
এ বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর গত ৮ এপ্রিল বিদ্যুৎসচিবকে সফরের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ভারত সরকার নেপালকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানিতে সম্মতি দেওয়ার পরই কাঠমান্ডু এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। ভারতের বিনিয়োগকারীরাও চাইছে বাংলাদেশের কাছে তাদের বিদ্যুৎ বিক্রি করতে।
সার্ক এনার্জি ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানিসংক্রান্ত এই চুক্তি হবে ।
নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে ভারতের ভূমি ব্যবহার করতে হবে, যাকে বিদ্যুতের করিডর বলা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ভারতের জিএমআরসহ দুটি কোম্পানি বিনিয়োগ করছে। এসব প্রকল্পে ২০২০ সালের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে। এর মধ্যে জিএমআর এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করতে চায়।
বাংলাদেশও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল ভারতের সম্মতির বিষয়টি। সম্প্রতি নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত তার ভূমি ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে। এ কারণে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সম্ভাব্য নেপাল সফরেই বিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারে নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশকে নেপাল বিদ্যুৎ দিতে চায়। এর অংশ হিসেবে নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী রাধা কুমারী গাওয়ালি ২০১৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে এ নিয়ে তার বৈঠকও হয়। এরপর গাওয়ালি বাংলাদেশের ভেড়ামারা দিয়ে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার স্থানও পরিদর্শন করেন।
সে সময় নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছিলেন, তারাও ভারতের আদলে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেবেন।
জানা গেছে, হিমালয়ের নেপাল অংশে ভারতীয় কম্পানি জিএমআর বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসির আর্থিক সহায়তায় ১,৫০০ মেগাওয়াটের দুটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। উৎপাদিত ১,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎই তারা বাংলাদেশকে দিতে চায়। তবে এ মুহূর্তে বাংলাদেশ এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকার ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। এ ছাড়া চলতি বছরের মধ্যেই ভারতের ত্রিপুরা থেকে আরো ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১১:১৫ ৩২৭ বার পঠিত