বঙ্গনিউজ ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারলে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না, ক্রসফায়ার হলেই সমালোচনা শুরু হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনে পুড়ে যাওয়া মানুষের জন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো যতটা না মায়া দেখাচ্ছে, তার থেকে যারা পুড়িয়েছে, তাদের জন্য অনেক বেশি মায়া দেখাচ্ছে।
বুধবার সকালে গণভবনে টেলিভিশন টক শোর আলোচক, সঞ্চালক ও কলামিস্টদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এমন কথা বলেন।
২০১৯ সালেই পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
পয়লা বৈশাখ উদযাপন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকে বাংলা নববর্ষকে সুন্দরভাবে বরণ করে নিয়েছেন। আমার আশা, বাংলা নববর্ষে নবযাত্রা শুরু হবে। বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন আরো দ্রুতগতিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একেবারে নিকট অতীতে যে ঘটনাগুলো ঘটে গেল, সেই হরতাল-অবরোধের নাম করে ৯৩ দিন পর্যন্ত যিনি হরতাল-অবরোধ ডাকলেন, তিনি নিজেই নিজেকে অবরুদ্ধ রেখে মানুষ খুন করা শুরু করলেন। আর জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা, এর থেকে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না। কারণ, এগুলো চোখে দেখে সহ্য করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘কীভাবে অন্তঃসত্ত্বা মা, ছোট্ট শিশু, ছেলেমেয়ে, বাবার সামনে সন্তান, সন্তানের সামনে বাবা-মা-বোন, বাবা-মেয়ে-এই যে পুড়ে পুড়ে মরে যাওয়া বা খেটে খাওয়া মানুষ, একটা বাসের ড্রাইভার, বাসের হেলপার। কাজের শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে বাসের ভেতরে, জানে, দেখতে পাচ্ছে; যাতে বেরোতে না পারে, দরজা আটকে সেখানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া-এটা তো জঘন্য ঘটনা, বর্বরতা।’
এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বিকাশে তার নেয়া পদক্ষেপ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, বেসরকারি খাতে কোনো টিভি চ্যানেল ছিল না। ওই একটা বিটিভিই ছিল। আমিই প্রথম সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেব। বর্তমানে প্রায় ৪১টির মতো বেসরকারি টিভি চ্যানেল।’
তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্য অন্যভাবে চিন্তা করি, মানুষের কর্মসংস্থান কতভাবে বিস্তৃত করা যায়, আমি সেই বিষয়টা আরো বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। কর্মসংস্থান বলতে সর্বস্তরেরই, শিল্পী-সাহিত্যিক-কবি থেকে শুরু করে, টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে সব ধরনের। প্রত্যেকের কিন্তু কর্মসংস্থানের সুযোগ এর মাধ্যমে চলে আসছে। জীবন-জীবিকার একটা সুযোগ আসছে। পাশাপাশি, যত বেশি প্রতিযোগিতা থাকবে, আমাদের শিল্প-সাহিত্যের উৎকর্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। তা নইলে এক বিটিভি কত ধারণ করতে পারে।’
যুদ্ধাপরাধের বিচারে এ পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাকিগুলোর প্রক্রিয়াও শেষ করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাধা তিনি মানবেন না। সরকারের উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা চান, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর অ্যামিরিটাস আনিসুজ্জামান, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান, উপন্যাসিক সেলিনা হোসেন, সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৫:১৪ ৩৪৫ বার পঠিত