বঙ্গ নিউজ ডটকমঃ মুখোমুখি ডালমিয়া ও শ্রীনি। ফাইল ছবিরাজনীতির দাবার ছকটা এভাবেই পাল্টে যায়। মুহূর্তেই। আজ যে বন্ধু, কাল সে-ই হয়তো প্রতিপক্ষ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান প্রধান জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কই ছিল সাবেক, বলা ভালো অপসারিত প্রধান এন শ্রীনিবাসনের। কিন্তু কলকাতার একটি দৈনিকের খবর, দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। শুধু চিড় নয়, দৈনিকটি বলছে, এই সম্পর্ক এখন রূপ নিয়েছে সংঘাতে।
সত্যি সত্যিই তা হলে, এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জন্য সুখবরই। আ হ ম মোস্তফা কামাল বনাম শ্রীনিবাসন সংঘাতের অধ্যায়টা বিশ্বকাপেই শেষ হয়ে যাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। শ্রীনিবাসন এক রকম বদলা নিতে ফাইনালের ট্রফি কামালের বদলে নিজে নিয়েছেন। এরপর বাংলাদেশে ফিরে কামাল সংবাদমাধ্যমে যেভাবে আক্রমণ করেছেন শ্রীনিকে, সে খবর নিশ্চয়ই কানে পৌঁছে গেছে তাঁর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমই তাই অনুমান করছে, বিসিসিআই-বিসিবি সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে এই ঘটনা। এমনকি আগামী জুনে ভারত সফরটা নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কার মেঘ। শুধু তা-ই নয়, ভারত বাংলাদেশকে এড়িয়ে চলতে শুরু ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোও প্রভাবিত হতে পারে। টেস্ট খেলুড়ে বাকি নয়টি দলই যে হয় ভারত-অনুগত নয়তো ভারতের প্রভাব বলয়ে নতি-স্বীকার করেছে। যদিও কামাল আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ বলে পুরো ভারতকে প্রথমে চটিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে কূটনৈতিক চালটা ভালো চেলেছেন। বলেছেন, তাঁর লড়াইটা শুধু একজনের বিপক্ষে, পুরো ভারতের বিপক্ষে নয়।
সেই একজনটা ভারতেও খুব একটা জনপ্রিয় নন। আইপিএলের নানা কেলেঙ্কারির জন্য তাঁকে দায়ী করা হয়। তবে ভারতীয় বোর্ডের মধ্যে শ্রীনিবাসনের একটা প্রভাব তো আছেই, তাঁর অনুগতের সংখ্যাও কম নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, খোদ ডালমিয়াই শ্রীনির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে লড়েছেন শারদ পাওয়ার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। শ্রীনির সরে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুফল পেয়েছেন ডালমিয়াই।
কিন্তু এই দুজনের সম্পর্কে সংঘাত এখন ‘অনিবার্য’ বলে মন্তব্য করেছে এবেলা। দুজনের ‘মধুচন্দ্রিমা’ও উধাও হয়ে গেছে বলে লেখা হয়েছে। আর কদিন বাদে শুরু হচ্ছে আইপিএল। কিন্তু এখনো আইপিএলের চেয়ারম্যানের নামই ঠিক করা যায়নি। এই চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়েই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন শ্রীনি ও ডালমিয়া। শ্রীনির আরও ক্ষোভের কারণ হচ্ছে, ডালমিয়া তাঁকে উপেক্ষা করে সচিব অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সব করছেন। আইপিএল চেয়ারম্যান হিসেবে শ্রীনি চান রঞ্জীব বিসওয়ালকে। কিন্তু অনুরাগ ঠাকুরদের পছন্দ অজয় শিরকে। আইপিএল কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর তখনকার বিসিসিআই প্রধান শ্রীনির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে পদত্যাগ করেছিলেন এই শিরকে। তাঁকেই যদি আইপিএল চেয়ারম্যান করা হয়, শ্রীনির জন্য সেটা হবে এক রকম চপেটাঘাত।
শ্রীনি-ডালমিয়ার দ্বন্দ্ব ‘উপকার’ করে দিতে পারে বিসিবির। এমনিতেই ডালমিয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুবন্ধু হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। শ্রীনির সঙ্গে ডালমিয়ার দূরত্ব বাড়লে, শ্রীনি রোষানলের আঁচ থেকেও বাংলাদেশের ক্রিকেটের দূরত্ব বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৩:০০ ৩৫৪ বার পঠিত