বঙ্গ-নিউজঃ বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ বলেছেন, তিনি তার স্বামীর খোঁজে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় আছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শুক্রবার সকালে গুলশানের বাসায় তিনি সাংবদিকদের বলেন, “আমি বিনীতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি। এখন তার নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। তিনি যেন আমার স্বামীকে জনসম্মুখে হাজির করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ নির্দেশনা দেন।”
গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তাকে আটক করতে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্বামীর খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনও করেছেন হাসিনা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেনি। তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে আসেন হাসিনা আহমেদ।
সালাহ উদ্দিনের খোঁজ পাওয়ার গুজব শুনে রাতে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের দুর্গম চরে অভিযান চালিয়েও খালি হাতে ফিরে আসে পুলিশ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন নেতা শুক্রবার সকালে হাসিনা আহমেদ ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মীতা জানাতে আসেন। পরে হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “গোটা জাতি ও বিশ্বের কাছে গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে- আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে।… আশেপাশের লোকেরা দেখেছে; এখন তারা অস্বীকার করবে- এটা হতে পারে না।”
মাহবুবুর রহমান বলেন, “অতীতেও গুম হয়েছে, এখনো হচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। ১০ দিন ধরে একজন তরতাজা মানুষ হারিয়ে গেলেন। তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না- এটা আতঙ্কের কথা। এভাবে সালাহ উদ্দিন আহমেদের মতো একজন রাজনৈতিক নেতা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিশীল অবস্থারই প্রকাশ।”
সরকারের উদ্দেশ্যে এই বিএনপি নেতা বলেন, “কে বা কারা তুলে নিয়ে গেছে তা আমরা জানতে চাই না। তাকে অক্ষত অবস্থায় তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।”
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে ক্ষমতাসীনরা ‘বিভ্রান্তি’ ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সাবেক এই সেনা প্রধান।
“সরকারের লোকজন বলছে, সালাহ উদ্দিনকে নাকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেয়নি। তিনি নাকি নিজেই লুকিয়ে আছেন। আবার গতকাল রাতে শুনলাম কোথায় নাকি তার লাশ পড়ে আছে। পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে রসিকতা করা হচ্ছে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে দেশের এজেন্সিগুলো ব্যর্থ হলে এফবিআই আনা হোক। এভাবে মানুষ হারিয়ে যাবে, পাওয়া যাবে না- কেউ কিছু বলতে পারবে না। এটা হতে পারে না।”
অন্যদের মধ্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শ্যামা ওবায়েদ ও কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৭:৩৫ ৩১৭ বার পঠিত