বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ মহাসেন উপকূলবর্তী এলাকায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঘড় মহাসেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিবেগে এগিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে। সবচেয়ে কাছে মংলা থেকে ৫৭৫ কি.মি দূরুত্বে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’।
বুধবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তবে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন বাংলাদেশি উপকূলের দিকে আরো এগিয়ে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টি মংলা বন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪২৬ কিমি, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪৬৩ কিমি দূরে অবস্থান করছে।
তিনি আরও জানান,” ঘূর্ণিঝড় মহাসেন এর ফলে উপকূলবর্তী এলাকায় ৫ থেকে ৭ ফুট জলোচ্ছাসের সৃষ্টি হবে। চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চারপাশ সমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।”
সেই জন্য উপকূলবর্তী এলাকার জনগণকে নিরাপদ এলাকায় যাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে (ক্রমিক নং-২৭) বলা হয়, (১৫ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কি.মি দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কি.মি দক্ষিণপশ্চিম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কি.মি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল (১৭.৫ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৭ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ)। ২০ কিলোমিটার গতিবেগে ক্রমেই এগিয়ে আসছে উপকূলবর্তী এলাকায়।
পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
মহাসেন বৃহস্পতিবার ভোরে পটুয়াখালী-টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এসময় ঘণ্টায় ৯০-১০০ কি.মি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ভোরে চট্টগ্রামের নিকট দিয়ে পটুয়াখালী (খেপুপাড়া)-টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের বর্ধিতাংশের প্রভাবে বুধবার রাত ১০টা থেকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি’র মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৯০ কি.মি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
মংলা সমূদ্র বন্দরকে ৫নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১০০ কি.মি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-৯০ কি.মি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে চট্রগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৪:০১ ৪৭৩ বার পঠিত