৬ ফেরুয়ারী সকালে দেশবাসীকে আনন্দে উদ্দেলিত করে রাজাকারের ফাঁসির রায় হলো না খবরটা দেখে দেশবাসীর সাথে আমারও মন খারাপ হয়ে গেল। স্তব্ধতা আর দীর্ঘ নিঃশ্বাস ঘিরে থাকল।
এক ধরনের প্রহসনতা যেন বিচারে। যে বন্দী নয় তাকে ফাঁসি দেয়া হলো। আর যে বন্দী আছে তাকে দেয়া হলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! বিচারের রায় কার্যকর করে একটা উপমা উদাহরণ স্থাপন করতে হলো না।
ফাঁসি দেয়া পলাতক আসামী কোন মানবতাবাদী দেশে আশ্রয় নিয়ে বেশ আরামে বাকি জীবন কাটিয়ে দিবে।ফাঁসির দণ্ড ঝুলছে বলে তাকে দেশে পাঠানো হবে না।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কি স্বশ্রম নাকি শুধুই আরাম আয়েসে জেলে থাকা?
বাংলাদেশের কয়েদিদের দিয়ে কি ধরনের কাজ করানো হয় ঠিক জানা নাই। তবে এমন সাজা প্রাপ্ত রাজাকারদের দিয়ে ব্রিটিশদের মতন যদি কঠিন কাজগুলো করানো হতো! হাতে পায়ে ডাণ্ডা বেড়ি বেঁধে দিয়ে, প্রতিদিন চাপকে চাপকে পিঠের চামড়া তুলে লবন ছিটিয়ে দেয়া হতো তা হলেও কিছুটা মজা বুঝত। যেমন অসংখ্য মানুষকে তারা কষ্ট দিয়েছে। ফাঁসির দড়িতে লটকে একবারে মরার চেয়ে বাকী জনম ধরে প্রতি মুহুর্তে মরত।যাবজ্জীবন হবে আজীবন মৃত্যু পর্যন্ত। কোন দশ মাস হিসাবের জেলের বছর নয়। চৌদ্দো বছরে আজীবন নয়।
তবে আশংকা প্রতি মুহুর্তে তাদের মুক্তি পাবার। তাই এদের ফাঁসি চায় বাংলাদেশের মানুষ।
আমি মানুষের মৃত্যুর পক্ষের মানুষ না হলেও এদের কঠিন শাস্তি বা ফাঁসির পক্ষে। কারণ এরা মানুষ না রাজাকার। আর কেউ যেন রাজাকার হওয়ার আস্পর্ধা না দেখায় বাংলাদেশে তাই এদের এমন কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
এদের বিচারের এত লম্বা তরিকা এসবও আমার পছন্দ নয়। ওরা যে মানুষ মেরে ছিল উল্লাসে তখন কি এত বিচার বিশ্লেষন করেছিল? জনতা জানে এদের রাজাকার পরিচয় । এদেরকে জনতার হাতে তুলে দেয়া দরকার এদেরকে ফুটবল বানিয়ে খেলার জন্য।
আজ সারা বাংলাদেশে গড়ে তুলেছে ধর্মের আড়ালে তাদের লাঠিয়াল। যারা অর্থের জন্য, ধর্মের জন্য জেহাদের জন্য মারমুখি স্বার্থপর পিশাচ, নব্য রাজাকার। প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় একজন শিবির আজ। শুরুতে এরা ছিল গুটি কয়, শীতের সাপের মতন লুকিয়ে ছিল গর্তে। ৭৫ এরপর থেকে গর্ত থেকে বেড়িয়ে মুখোশের আড়ালে আজ বিশাল আকার বিষাক্ত ফনা তুলেছে স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আবার । যাদের সহায়তায় পেয়েছে এতোটা আসকারা তাদেরও বিচার হওয়া দরকার।প্রতিটি বাড়ির রাজাকারকে চিহ্নত করুক পরিবারের লোকজন।
কাল একটা ঝড়ের মতন দিন গেল। কোন কিছু বলা কওয়ার সময় পেলাম না। এর মাঝে জনতার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এমন অনেক উত্তাল মিছিলে সামিল হওয়া ঘটনা মনে পরছে।টানটান উত্তেজনা অনুভব করছি।
বিদেশের মাটিতেও তুষার ঝড়ের মাঝে প্রতিবাদে মানব বন্ধনে রাস্তায় নেমেছিলাম কতবার এদের শাস্তির জন্য। ইসলামিক সেন্টারে সাইদি কে ঢুকতে না দেয়ার জন্য রাস্তায় রাজাকার বিরুধী প্রতিবাদ মুখর সময় মনে পরছে।
প্রজন্ম হৃদয়ের দাবী জানাতে, তাদের ভালোবাসার প্রখর রূপ দেখাতে রাস্তায় নেমে এসেছে দেশ ব্যাপী।
কিন্তু সাথে আশংকা থেকে যাচ্ছে বারবার শত্রুর ঘরে উঠে যাওয়া ফলাফলের । ইতিহাসের ভয়।প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তারা আরেকটি মুক্তিযুদ্ধর জন্য প্রস্তুত এক বুক সাহস হাতে। তারা বিজয়ের পতাকা হাতে ঘরে ফিরুক।কোন রকম বিভ্রান্তি যেন তাদের বিচ্যুত করতে না পারে, নিঃ স্বার্থ ভালোবাসা মানুষের পক্ষ থেকে। সত্যের প্রতিষ্ঠা হোক মুক্তির সূচনা হোক শুভকামনা……..তোমাদের জন্য হে সাহস
বাংলাদেশ সময়: ৫:০৯:২১ ৫৩৮ বার পঠিত