বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের বাংলাদেশ আগমন ঘিরে ঢাকার ১নং এজেন্ডায় যেমন তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা তুলে ধরা আছে। তেমনি মমতাও তাঁর ১নং এজেন্ডায় রেখেছেন বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া। কেননা দীর্ঘদিন ধরে পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে রফতানি বন্ধ৷
মমতা ব্যানার্জির ঢাকার হজরত শাহ জালাল আম্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলেন বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে৷ বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরন৷
শাহরিয়ার আলম মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন৷ আওয়ামী লীগের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে মমতা ব্যানার্জি এসেছিলেন প্রায় ১৬ বছর আগে। সেই সময়ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনাই৷
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশে এটাই মমতার প্রথম সফর৷ তাঁর চলাচল ও অবস্থান নিয়ে ঢাকায় নেওয়া হযেছে কড়া নিরাপত্তা। যা আগে ভারতের কোন শীর্ষ নেতার ক্ষেত্রে এতোটা চোখে পড়েনি।
ঢাকা রওনা হওয়ার আগে কলকাতায় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের বলেন, এই সফর দুই বাংলার সম্পর্ককে মজবুত করে তুলবে৷
তবে এরমধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে৷ তা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কী আলোচনা হয় সেদিকে তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশের মানুষ৷
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ এসেছেন৷ এই বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্তসহ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তবে মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিস্তার পানিবণ্টন।
মুখ্যমন্ত্রী বিমান থেকেই তাঁর সফর নিয়ে টুইট করেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের যে তার নাইকো শেষ৷’
মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল৷ প্রতিদিনই দুই বাংলা থেকে বহু মানুষ যাতায়াত করেন৷ তিনি বলেন, তিস্তা পানিবণ্টন নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না৷ আলোচনা করি, তার পর বলব৷ সাংবাদিকদের মমতা বলেন, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় হবে৷
ছিটমহল প্রসঙ্গে মমতা বলেন, আমি এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সিদ্ধাম্ত আগেই জানিয়ে দিয়েছি৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের মৎস্যজীবী এবং অন্য অনেকে যাঁরা সীমাম্তের এপারে এসেছিলেন তাঁরা দীর্ঘদিন বিচারাধীন বন্দি ছিলেন৷ তাঁদের অনেককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷
বাংলাদেশে আসার আগে মমতার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের টেলিফোনে কথাও হয়৷ সুষমাকে মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ঘুরে এসে তিনি বিস্তারিত সব জানাবেন৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে এসেছেন একঝাঁক শিল্পপতি, চিত্রতারকা ও কয়েকজন মন্ত্রী৷ মন্ত্রীদের মধ্যে মমতার সঙ্গে আছেন ফিরহাদ হাকিম ও ব্রাত্য বসু৷ এসেছেন ২০ জনের মতো সাংবাদিক।
আরও এসেছেন মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র৷ অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, কবি সুবোধ সরকার, অরিন্দম শীল, সংসদ সদস্য মুনমুন সেন ও অভিনেতা দেব। জরুরি কাজ থাকায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আসতে পারেননি৷
আসার কথা ছিল কবির সুমনেরও৷ তিনি অসুস্থ৷
মমতার এবারের কর্মসূচি ঠাসা। এবারও দেখতে যাবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মিউজিয়াম৷ বণিকসভার সঙ্গেও বৈঠক করবেন৷ শুক্রবার রাত ১২টার পর একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের শহিদমিনারে তিনি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন৷
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩০:১২ ২৮৪ বার পঠিত