বঙ্গ-নিউজ:দেশে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন ক্রিকেটারেরা। মিরপুর শেরেবাংলায় ওই প্রস্তুতিপর্বও বেশ জমজমাটই। বিসিবির দুই পরিচালক নাঈমুর রহমান দূর্জয় ও খালেদ মাহমুদ সুজন তো প্রায় সারাক্ষণই থাকছেন ক্রিকেটারদের পাশে। সুযোগ পেলেই ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলেন। সমস্যা আছে কিনা, কেমন হচ্ছে, কেমন হলে আরো ভালো হয় সেগুলো জানার চেষ্টা করেন। নাঈমুর রহমান সদ্য দায়িত্ব পেলেন ক্রিকেট অপারেশন্সের। ফলে তার ব্যস্ততা একটু বেশিই। খালেদ মাহমুদ সুজন, গেম ডেভেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হয়েও মাশরাফির সাথে লেগে থাকার অর্থ তিনি বিশ্বকাপে জাতীয় দলের ম্যানেজারও। এরা দুইজনই কখনো ক্রিকেটারদের ব্যাটিং-বোলিং কাছ থেকে দেখেন। আবার কখনো ডেকে বিভিন্ন কথা বলে উৎসাহ জোগানোর চেষ্টা করেন। গতকাল বিশ্বকাপে নিজের ভাবনা জানিয়েছেন সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। তার লক্ষ্যও কোয়ার্টার ফাইনাল। সে লক্ষ্যে সবাইকে সামর্থ্য অনুসারে খেলার প্রয়োজনীয়তার কথাও জানান দিয়েছেন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেষ দুই বছর যেভাবে খেলেছি তা ধরে রাখার চেষ্টা করব। আর যদি বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ভালো করা যায় তবে এটা অনেক কিছুই। চেষ্টা থাকবে এবার ভালো কিছুই করার। শেষ বছরে যেভাবে পারফর্ম করেছি সেভাবেই পারফর্ম করার।’
জিম্বাবুয়ে সিরিজেই হারিয়েছেন অধিনায়কত্ব। সেটা নিয়ে এখন আর কিছু ভাবেন না জানিয়ে মুশফিক বলেন, ‘অনেক আগের থেকেই অধিনায়কত্ব নিয়ে ভাবনাচিন্তা বাদ দিয়েছি। এখন আমার চিন্তা কিভাবে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করা যায়। তবে অধিনায়ক না থাকলেও আমার ওপর দলের একটা দায়িত্ব সব সময়ই থাকে। সেটা পূরণে চেষ্টা করব।’ নিজেদের অনুশীলনের ধরন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৪ ওভারে ২০ রান করতে হবে সে সময় কোনো উইকেট হারানো যাবে না। পাওয়ার প্লেতে ৩০ রান করতে হবে এবং উইকেট পড়লে ৩০ রান। কিন্তু উইকেট না পড়লে আরো বেশি রান করতে হবে। এভাবে অনুশীলন হয়েছে। বেশির ভাগ সময় ব্যাটসম্যানরাই জিতেছেন। বোলাররা প্রথম দিকে একটু কষ্ট করলেও পরে বোলারেরা প্রভাব দেখিয়েছেন। ওভারঅল সেশন বেশ ভালো হয়েছে।’
২০০৭ বিশ্বকাপ খেলে আসা মুশফিক বলেন, ‘বিশ্বকাপ বড় টুর্নামেন্ট। প্রচার-প্রচারণাও বেশি। তবে আমার কাছে আর ১০টা সিরিজের মতোই। এখানে বিশ্বের সেরা দলগুলো খেলে। সুতরাং গত কয়েক বছরে যেমন পারফর্ম করেছি, এবার তার থেকে বড় কিছু করব এমন ভাবনা নেই। চেষ্টা করব স্বাভাবিক খেলাটা ধরে রাখতে।’
অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে খেলা বলে সবাই কন্ডিশন নিয়ে অনেক কথা বলছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের খেলাগুলো দেখলে বোঝা যাবে যে, স্পিনারেরা খারাপ করেননি। নিউজিল্যান্ডেও শ্রীলঙ্কা তিনজন স্পিনার খেলিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় এখন মওসুমের শেষ সময়। তাদের উইকেটগুলো খুব বেশি সিমিং বা বাউন্সি নাও হতে পারে। যদিও ওদের উইকেটে বাউন্স একটা প্রাকৃতিক বিষয়। সেখানে পেসাররা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’ বাস্তবতা মেনে বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য কতটুকু এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক দূর যাওয়ার সামর্থ্য আছে আমাদের। দলে বেশ কয়েকজন পারফরমার এখন। সবাই যদি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারি; শুধু দ্বিতীয় রাউন্ড কেন আরো বেশি দূরে যেতে পারি। তবে প্রাথমিক ল্য অবশ্যই দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া। ইনশাআল্লাহ আমরা তা পারব।’
অস্ট্রেলিয়ার মাঠ বড়Ñ এ প্রসেঙ্গ তিনি বলেন, ‘আমরা এখানেও মাঠ বড় করে খেলেছি। আজকের (মঙ্গলবার) অনুশীলনে ৮৫ থেকে ৯০ গজ পর্যন্ত সীমানা বাড়ানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সীমানাগুলোও এমন। এখানে আমরা আজ (মঙ্গলবার) প্রথমবার অনুশীলন করেছি। মাঠের বিষয়গুলো ভেবে আমাদের খেলতে হবে। সে সব বিষয় আমাদের চিন্তায় আছে। অস্ট্রেলিয়াতে মাঠ এক রকম, আবার নিউজিল্যান্ডে গেলে অন্য রকম হবে। অনেক আগে থেকেই এসব নিয়ে ভেবেছি। কোচ অনেক দিন অস্ট্রেলিয়াতে কাজ করেছেন। তিনি আমাদের এ সব বিষয়ে বলেছেন। এখন পরিকল্পনাগুলো মাঠে প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ কী হবে সেটা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কন্ডিশন বড় বিষয়। আবহাওয়া-পিচ দেখে খেলতে হবে। বোলিং-ব্যাটিং বা ফিল্ডিং সব কিছুই অনেক চিন্তা করতে হবে। বিশেষ করে প্রথম ১০ ওভার গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু আমাদের জন্য নয়; সব দলের জন্যই কঠিন হবে।’ তবে তিনি শুরুটা ভালো চান। সূচনা ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে সেটা ধরে রাখার পরিকল্পনাই থাকবে তাদের মূলে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:২০:০৩ ৪৩৪ বার পঠিত