বঙ্গ-নিউজঃআন্দোলনের নামে ‘চোরাগোপ্তা’ হামলা বন্ধ না করলে বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দিয়ে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর হানিফ বিএনপির ডাকা অবরোধে সহিংসতার বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “চোরগোপ্তা হামলা দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায়, কিছু অর্জন করা যায় না। চোরাগোপ্তা হামলা বন্ধ না করলে জনগণ সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সারা দেশে অবরোধের ডাক দেন।
পাঁচদিন ধরে চলা অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ ছাড়াও যানবাহনে আগুন দেওয়া, ভাংচুর, রেলপথে নাশকতার মতো ঘটনা ঘটছে।
মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সম্মিলন বিশ্ব ইজতেমার সময়ও অবরোধ প্রত্যাহার না করায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন হানিফ।
“বিশ্ব ইজতেমায় দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নিয়েছেন। নির্বিঘ্নে তাদের ধর্ম পালনের জন্য অযৌক্তিক অবরোধ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু অবরোধ প্রত্যাহার না করে তারা প্রমাণ করেছে, মুখে ধর্মের কথা বললেও ধর্মের প্রতি তাদের ন্যুনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই,” বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের নামে ‘মিথ্যা বিবৃতি’ এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে খালেদা জিয়ার ফোনালাপের খবর নিয়েও কথা বলেন হানিফ।
তিনি বলেন, “অমিত শাহ খালেদা জিয়াকে ফোন করেননি, বরং খালেদার অফিস থেকে অমিত শাহর ফোনে দুবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার ফোন নষ্ট থাকায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি।”
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের নামে ‘মিথ্যা বিবৃতি’র প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তাদের (বিএনপির) জন্মই হয়েছে মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে। এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা দেশের ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।”
গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলো, নয়াদিগন্ত, ইউএনবিসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের একটি বিবৃতির খবর প্রকাশ করা হয়, যেখানে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে এক সপ্তাহ ধরে বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার নিন্দা জানানো হয় বলে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে ছয় কংগ্রেসম্যান খালেদার ছেলে তারেক রহমানের বক্তৃতা-বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও নিন্দা জানান বলে ওইসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
পরে ওই বিবৃতিটি ‘বানোয়াট’ ছিল বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস ও কমিটির সদস্য এলিয়ট অ্যাঙ্গেল।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বছর পূর্তির দিনে কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে গুলশানের কার্যালয় থেকে বেরোতে পারছেন না খালেদা জিয়া। গত সোমবার কর্মসূচিতে যোগ দিতে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি তিনি। সে সময় তার সঙ্গে থাকা বিক্ষুদ্ধ বিএনপিনেত্রীদের থামাতে পুলিশ পেপার স্প্রে ব্যবহার করলে খালেদা জিয়াও তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এরপর অনেকেই নানাভাবে তার স্বাস্থ্যের খবর নিয়েছেন। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহও টেলিফোনে খালেদার খবর নিয়েছেন বলে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন বিএনপিনেত্রীর প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। যদিও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব অমিত-খালেদার ফোনালাপ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪৪:০৮ ৩৬৮ বার পঠিত