বঙ্গ-নিউজ ডটকম: জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে রাজধানীতে কোনো সাড়া নেই। ভোর থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিকভাবেই চলছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যানবাহন ও লোকজনের সংখ্যা।জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির একেএম ইউসুফকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে জামায়াত। সকাল ৬টা থেকে এ হরতাল শুরু হয়েছে।
রাজধানী বিভিন্ন স্পটে থাকা আমাদের করেসপন্ডেন্টরা জানান, অন্যান্য সব হরতালের সময় ভোরের দিকে রাস্তায় যানবাহন কম থাকলেও মঙ্গলবারের হরতালে একই সময়ে অনেক গাড়ি চলতে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় সকাল ৮টার মধ্যেই বিভিন্ন ট্রাফিক মোড়ে গাড়ির ভিড় ও যানজট দেখা গেছে।
মতিঝিল, পল্টন ও কমলাপুর এলাকা থেকে , অন্যান্য যে কোনো হরতালের চেয়ে মঙ্গলবারের হরতালে যানবাহন চলাচল বেশি রয়েছে। কর্মদিবসের তুলনায় যানবাহন কম থাকলেও অন্যান্য হরতালের চেয়ে এ হরতালে যান চলাচল অনেক বেশি।
এসব এলাকায় ভোর ৬টা থেকে বিআরটিসি, ইপিসি, ৩ নাম্বার, গাবতলীগামী ৮ নাম্বার, বিহঙ্গসহ বিভিন্ন সার্ভিসের বাস এবং সিএনজির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও চলতে দেখা গেছে।
এসব এলাকায় সকাল ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হরতালের সর্মথনে কোনো মিছিল-পিকেটিং করতে দেখা যায়নি হরতাল আহ্বানকারীদের।
মহাখালী,বনানী ও গুলশাল এলাকায় কোথাও হরতালের সর্মথনে মিছিল করতে দেখা যায়নি।
জামায়াত-শিবির কর্মীরা বিভিন্ন গলি থেকে মিছিল বের করবেন- এমন খবরের ভিত্তিতে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন গলিতে তল্লাশি চালাচ্ছেন পুলিশের সদস্যরা।
মালিবাগ, মগবাজার, বাড্ডা ও নতুন রাস্তা থেকে হরতালে যে কোনো ধরনের বিশঙ্খলা এড়াতে সবোর্চ্চ সর্তক রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
মোটরসাইকেল আরোহীর পাশাপাশি যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকেই চেক করছে পুলিশ।
এছাড়াও মহাখালী, গাবতলী, শ্যামলী, ফার্মগেট, শাহবাগ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় যান চলাচল রয়েছে স্বাভাবিক।
হরতালের শুরু থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত পুরান ঢাকায় কোনো উত্তাপ লক্ষ্য করা যায়নি। কাকডাকা ভোর থেকেই পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়কে অনেকটা স্বাভাবিকের মতোই যান চলাচল করছে।
সিদ্দিক বাজার, ইংলিশ রোড, রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, লক্ষ্ণীবাজার, বাংলাবাজার, ইসলামপুর, ধোলাই খালসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কোথাও কোনো পিকেটিং বা জামায়াত-শিবির কর্মীদের দেখা যায়নি।
ভোর থেকেই বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল করছে অন্যান্য দিনের মতোই। পুরান ঢাকায় চলাচলকারী আজমিরী, স্কাইলাইন, ইউনাইটেড, ভিক্টর, সুপ্রভাত পরিবহনগুলোর চলাচলেও হরতালের কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। প্রতিদিনের মতোই সদরঘাটঘামী লোকজনের চলাচলে মুখর দেখা গেছে এসব এলাকার ফুটপাত।
কোতোয়ালি ও সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার কোথাও কোনো পিকেটিংয়ের খবর নেই। যান ও লোকজন চলাচলও স্বাভাবিকের মতোই।
, ভোর ৬টা থেকেই যাত্রাবাড়ী মোড়ে গাড়ির জট দেখা গেছে। রাজধানীর অভ্যন্তরীণ গাড়ি ছাড়াও আন্তঃরোডের গাড়িও ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি।
ভোর ৬টার দিকে হরতালের সর্মথনে দয়াগঞ্জে রেললাইনের টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধে চেষ্টা করেন জামায়াত-শিবির কর্মীরা। তবে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার কারনে তারা তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেননি।
সকাল সোয়া ৬টার দিকে ১৫-২০ জন শিবির কর্মী দয়াগঞ্জে বাজারের রেললাইনের ওপর দু’টি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাদেরকে হরতালের সর্মথনে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তবে সেখান থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। পরে পুলিশ পানি দিয়ে টায়ারের আগুন নিভিয়ে দেয়।
হরতালের সর্মথনে মগবাজারে ঝটিকা মিছিল করে রমনা থানা জামায়াত। তবে সেখানেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হরতাল শুরুর ১৫ মিনিট আগে সকাল পৌনে ৬টার দিকে জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন কর্মী একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন। এ সময় তাদের হরতালের সর্মথনে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
রমনা থানা জামায়াতের ব্যানারে এ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন শিবিরের সাবেক সভাপতি ও রমনা থানা জামায়াতের আমির ড. রেজাউল করিম, জামায়াত নেতা ইউসুফ আলী মোল্লা, শিবিরের সাবেক দফতর সম্পাদক ও জামায়াত নেতা আতাউর রহমান সরকার, শিবির নেতা শরীফুল ইসলাম, আফজালুল নূর প্রমূখ।
রাজধানীর অন্য এলাকাগুলো থেকেও মিছিল-পিকেটিং বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১২:৫১ ৪৮৫ বার পঠিত