বঙ্গ-নিউজ ডটকম:দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় আসর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৫ (ডিআইটিএফ) শুরু হচ্ছে আগামী ১ জানুয়ারি।রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মাসব্যাপী এই মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলার আয়োজন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
২০তম বাণিজ্য মেলার এ আসরে চার মহাদেশের মোট ১৪টি দেশ অংশ নেবে। এজন্য মেলার প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে চলছে।
মেলার স্টল তৈরির কাজ মোটামুটি শেষ। বাকি কাজ ২৫ তারিখের ভেতরে শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সেক্রেটারি ড. এ এফ এম মনজুর কাদির।
তিনি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মেলায় সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য স্পেশাল জোন তৈরি করা হবে। ফরেন জোনের মাঝখান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা।
রয়েছে তিনটি ডিজিটাল পথনির্দেশক এবং দুটি শিশু পার্ক। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের প্রবেশের জন্য এবার থাকছে আলাদা ব্যবস্থা। নিরাপত্তাব্যবস্থাও আগের তুলনায় বেশ জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাণিজ্য মেলায় বিদেশি পণ্যের ভিড়ে দেশীয় পণ্যের মার খাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মনজুর কাদির বলেন, বর্তমান যুগ হচ্ছে গ্লোবালাইজেশনের যুগ। বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে কোনো দেশের পণ্য প্রচার ও প্রসার হয়। এখানে বিদেশি স্টল থাকার কারণে বিদেশিরা এ দেশে আসবে, আমাদের পণ্য দেখবে। ফলে তারাও আমাদের পণ্যের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে। আমাদের পণ্য দেখে পছন্দ হলে অর্ডার করে যাবে। এতে করে আমাদের পণ্যের প্রচার হবে।
এ সময় তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভারতে আমাদের কোনো পণ্যই ছিল না। বর্তমানে প্রাণের বিভিন্ন পণ্য সেখানে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এ দেশের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এই ধরনের পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজনের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশি-বিদেশি ভোক্তাদের বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদনকারীদের নিত্যনতুন এবং অধিকতর মানসম্পন্ন পণ্য নিয়ে ভোক্তার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা। ক্রেতা-বিক্রেতা-উৎপাদনকারীদের প্রত্যক্ষ সংযোগ সৃষ্টি করা।
উৎপাদনকারীদের মাঝে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি, পণ্যের মাঝে বৈচিত্র্য আনয়ন, পণ্যমূল্যের ভারসাম্য রক্ষা এবং উৎপাদনকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা। এ ছাড়া বাংলাদেশের তুলনামূলক সুবিধা সম্পর্কে বিদেশি অংশগ্রহণকারী ও পরিদর্শনকারীদের অবহিতকরণ করা। উৎপাদনকারীদের নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উপসচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, গত জুন মাস থেকে মেলার আয়োজনের কাজ শুরু হয়েছে। এটা বিরাট একটা কাজ। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৪ দেশের ৪৫৯টি স্টল এখানে নির্মাণ করা হবে। সে কারণে এটি আমাদের জন্য ব্যস্ততম মাস।
তিনি বলেন, তিন-চার দিনের মধ্যে স্টল নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হবে। বাকি থাকবে রং ও পরিষ্কারের কাজ। মেলা শুরু হওয়ার আগে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
সোমবার বাণিজ্য মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও ২৫ তারিখের ভেতরে শেষ করতে হবে বলে সেখানে কর্মরতদের নির্দেশ দেওয়া আছে। আরো কিছু কাজ বাকি থাকলে তা মেলা শুরু হওয়ার আগে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।
এবার মেলার প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের ৩০ টাকা আর অপ্রাপ্তবয়স্কদের ২০ টাকা।
মেলায় মোট স্টল থাকছে ৪৫৯টি। এর মধ্যে, প্যাভিলিয়ান ৮১টি, মিনি প্যাভিলিয়ান ৫১টি। এ ছাড়া থাকছে ১০টি রেস্তোরাঁ।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৭:৩২ ৪০৩ বার পঠিত