বঙ্গ-নিউজঃদ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার এই সফরে গুরুত্ব পাবে জনশক্তি রপ্তানি ও বাণিজ্য
তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা দেশটিতে তার প্রথম সফর।
এক বছর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ঢাকা সফরের সময় শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণেই আনুষ্ঠানিক এই সফর হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের এক দিন আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানো এবং পণ্য রপ্তানি বাড়িয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য কমানোর ওপর জোর দেওয়া হবে এই সফরে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে মানব সম্পদ রপ্তানি নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে, যা দেশটির সারাওয়াক প্রদেশে ১২ হাজার বাংলাদেশির কাজের সুযোগ করে দেবে।
বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বড় বাজার মালয়েশিয়া। প্রায় ছয় লাখের মতো বাংলাদেশি সেখানে কর্মরত রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি রয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনও। এছাড়া বেসামরিক বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও থাকছেন সফরসঙ্গী হিসেবে।
পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক সহযোগিতা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারকও সই হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে। এছাড়া ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের পরই মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী দেশ বাংলাদেশ। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে মালয়েশিয়া এগিয়ে আছে অনেকদূর।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বছরে রপ্তানি করে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পণ্য; অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় রপ্তানি হয় সাড়ে ১৩ কোটি ডলারের পণ্য।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশেষ করে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটিতে। বিপরীতে কেনে প্রধানত জ্বালানি ও ভোজ্য তেল। এছাড়া শতাধিক মালয়েশীয় কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশে।
২০২০ সালের মধ্যে উন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে মালয়েশিয়া, বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া।
গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা সফরে এসে নাজিব রাজাক গাজীপুরে প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে নির্মিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ উদ্বোধন করেছিলেন। ওই সময়ই তিনি শেখ হাসিনাকে মালয়েশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মালয়েশিয়ার পথে ঢাকা ছাড়বেন শেখ হাসিনা। কুয়ালালামপুরে গ্রান্ড হায়াৎ হোটেলে অবস্থান করবেন তিনি।
পৌঁছনোর পর রাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। পরদিন সকালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত একটি সংলাপে অংশ নেবেন, যেখানে মালয়েশিয়ার শীর্ষ বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত থাকবেন।
এরপর পুত্রাজায়াতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পারদানা স্কোয়ারে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানেই চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।
সফরে শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকা ফিরবেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৩:৩২ ৪৮১ বার পঠিত