মস্কো: রাশিয়া গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি নতুন জঙ্গি বিমান তৈরি করেছে যা রাডারকে খুব সহজই ফাঁকি দিতে সক্ষম।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘সুপার উইপন’ নামে অভিহিত করছেন। তারা বলছেন যে, পঞ্চম প্রজন্মের রাশিয়ান এই ফাইটার জেট বিমান প্রকৃতপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইটার জেট বিমানের চেয়ে অধিক ক্ষমতাধর যা রাশিয়াকে আকাশে বাড়তি সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম হবে।নতুন এই জেট বিমানটির নাম দেয়া হয়েছে টিএ-৫০ পিএকে এফএ।
রাশিয়ার নতুন এই গোপন জঙ্গি বিমানটি তৈরি করা হয়েছে রাশিয়ার এরোনটিক জায়ান্ট হিসেবে খ্যাত সুখোইর তত্ত্বাবধানে এবং ২০১৬ সালে এটিকে রাশিয়ার বিমান বহরে যুক্ত করা হবে।রাশিয়া ভারতের সঙ্গে একত্রে নতুন সুপার ফাইটারের উন্নয়ন করছে। টি-৫০ প্রোগ্রাম নামের ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্পে ভারতের অংশ রয়েছে ২০ শতাংশ।
প্রতিটি টি-৫০ পিএএফ এফএ গোপন জঙ্গি বিমানের নির্মাণ খরচ প্রায় ৫ কোটি ডলার (৪০০ কোটি টাকা)। রাশিয়া ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই রয়েছে রাশিয়ার অবস্থান।
পঞ্চম প্রজন্মের নতুন এই জঙ্গিবিমান সর্ম্পকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর লকহিড এফ-২২ র্যাপচারের চেয়ে আমাদের টি-৫০ পিএএফ এফএ গোপন জঙ্গি বিমান অনেক উন্নত, বিশেষ করে রণকৌশল, অস্ত্রসম্ভার এবং পরিসীমার দিক দিয়ে আমরা অনেক এগিয়ে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম প্রজন্মের সবচেয়ে উন্নতমানের দুটি জঙ্গি বিমানের একটি হল লকহিড এফ-২২ র্যাপচার গোপন জঙ্গি বিমান। অন্যটি হল এফ-৩৫৫ লাইটিং।
মার্কিন সামরিক বিমান বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে পুতিনের দাবি ফাঁকা বুলি না। তার দাবির যথার্থতা রয়েছে।
মার্কিন বিমান বাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডেভ ডেপটুলা ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট ম্যাগাজিনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি টি-৫০ পিএএফ এফএ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, এটি সুন্দর অত্যাধুনিক নকশায় নির্মাণ করা হয়েছে যা অন্তত আমাদের পঞ্চম প্রজন্মের বিমানের সমান ক্ষমতা সম্পন্ন এবং কারো কারো মতে এটি আমাদের চেয়েও উন্নততর। নিশ্চিতভাবেই গতির দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত ক্ষিপ্রগামী এবং আমাদের এফ-৩৫ লাইটিংয়ের চেয়ে এটি চমৎকার গতির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে।’
একজন শীর্ষ মার্কিন সামরিক বিমান কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেপটুলার বক্তব্যকে সমর্থন করে ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এটি অবশ্যই র্যাপচারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা রাখে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ লাইটিংয়ের তুলনায় রাশিয়ান এই গোপন জঙ্গি বিমান খুব সহজেই রাডার সনাক্তকরণকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।
কিন্তু মার্কিন এফ-৩৫ লাইটিংয়ের একটি বড় সুবিধা তার তথ্য সমন্বয়ের ক্ষমতা। সেন্সর এবং তথ্য সমন্বয়ের ক্ষেত্রে মার্কিন ফাইটার জেট বিমান এখনও অনেক চমৎকার।
অন্য কথায়, আকাশে জেট ফাইটারের চারপাশ সম্পর্কে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রযুক্তি এবং এ ব্যাপারে পাইলটকে মতামত প্রদান করার ক্ষমতা রয়েছে এফ-৩৫ লাইটিংয়ের যা পাইলটকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। তবে, রাশিয়ানরা ইতিমধ্যে তাদের ষষ্ঠ প্রজন্মের জেট বিমান নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে যা তথ্য সমস্যাকে সমাধান করতে পারবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।সূত্র: ইনকুইজিটর
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫১:০২ ৩৪৭ বার পঠিত