বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমানে আবারো আধিপত্যবাদী শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে একের পর এক গোপন চুক্তি সম্পাদন করে গোটা দেশকে গ্রাস করতে চাচ্ছে। এইভাবে তারা আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েম করে রাখতে চায়। ভোটারবিহীন এই সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতা-কর্মীদেরকে নির্মমভাবে দমন করছে। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে নির্দয় ফ্যাসিবাদী শাসনে পিষ্ট করছে। এই জবরদখলকারী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আমাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকারের নতজানু নীতির কারণেই আমাদের আবহমানকালের ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর চলছে আগ্রাসন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সৈনিক-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো জাতীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় বুকে নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যম-িত। স্বাধীনতাত্তোর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহলের নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা এবং ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হয়। ফলে দেশে চরম অশান্তি ও হতাশা নেমে আসে। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত প্রতিবাদকে দমন করে।
তিনি বলেন, দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালের ৭৫ এর ৩ নভেম্বর আধিপত্যবাদের এদেশীয় এজেন্টদের কুটকৌশলে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করা হয়। এই অরাজক পরিস্থিতিতে স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং জনতার ঢল রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণে ৭ নভেম্বর জিয়া মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত হয় ও গণতন্ত্র অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। আধিপত্যবাদী শক্তি ও তাদের এদেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করে।
খালেদা জিয়া বলেন, জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং আধিপত্যবাদী আগ্রাসন প্রতিরোধ করে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।
অপর এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৭৫ এর ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে জাতিসত্তার স্বাধীন অস্তিত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫০:০৫ ৩৭৩ বার পঠিত